প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেছেন, পতিত সরকারের দোসররা গুজব ছড়িয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে চব্বিশের পরাজিত শক্তির এই অপচেষ্টাকে রুখে দিতে হবে তরুণদের।

বৃহস্পতিবার ঢাকা কলেজ সাংবাদিক সমিতি আয়োজিত দুই দিনব্যাপী সাংবাদিকতাবিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার শেষদিন প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত বিতর্ক-বিশ্লেষণ এবং আলোচনার মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে সহযোগিতার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। 

বাংলাদেশ এখন যুগ-সন্ধিক্ষণে মন্তব্য করে শফিকুল আলম বলেন, এখন সময় এসেছে মানুষের প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দিয়ে দেশ গড়ার। কেউ যেন নাগরিকের অধিকার কেড়ে না নেয় সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। 

প্রেস সচিব বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রতিটি জায়গায় নারীদের সরব উপস্থিতি ছিল। শেখ হাসিনাকে বিতাড়িত করতে নারীদের কৃতিত্ব অনেক। নারীরা সামনের সারিতে থেকে আন্দোলন করেছেন।

তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টে সব কাজ শেষ হয়নি। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মাধ্যমে সামনে কাজ করতে হবে। 

প্রেস সচিব আরও বলেন, বাংলাদেশের একটা বড় অংশ এখন সিটিজেন জার্নালিজম করে। অজ্ঞতার কারণে অনেকে ভুল তথ্য প্রচার করে ফেলে। তবে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ থাকলে এমন ভুল প্রতিরোধ সম্ভব।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও বাংলানিউজ২৪ডটকমের সম্পাদক লুৎফর রহমান হিমেল। 
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জনগণের আস্থা নষ্ট হয়ে গেলে কী হয় ৫ আগস্ট দেখেননি

‘রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের একটাই পুঁজি, তা হলো জনগণের আস্থা। জনগণের আস্থা নষ্ট হয়ে গেলে কী হয়, তা আমরা দেখেছি ৫ আগস্ট, দেখেননি স্বৈরাচারের কী অবস্থা হয়েছে,’ বিএনপির নেতাদের সতর্ক করে কথাগুলো বলেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই পরিণতির মুখে যেন কখনো পড়তে না হয়, সে জন্য খারাপ কাজগুলোকে যতটুকু সম্ভব দূরে সরিয়ে রেখে মানুষের আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে ঢাকায় দলের বর্ধিত সভায় সমাপনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে শুরু হয় বিএনপির বর্ধিত সভা। সভায় ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাঁর রেকর্ড করা বক্তব্য সভায় প্রচার করা হয়।

বর্ধিত সভার দ্বিতীয় অধিবেশনে বিভিন্ন জেলা ও মহানগরের ১০৫ জন নেতা বক্তব্য দেন। এ সময় বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখল, টেন্ডারবাজির বিষয়টি কয়েকজন নেতার বক্তব্যে উঠে আসে। এসব কাজে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তাঁরা। এ ছাড়া দলে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেন তৃণমূলের এই নেতারা। পাশাপাশি যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা বলেছেন বেশির ভাগ নেতা।

তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের বক্তব্যের পর সমাপনী বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনাদের নেতা হিসেবে আমার নির্দেশনা, আজকে এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে এবং নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাওয়ার পরে আপনারা উদ্যোগ গ্রহণ করুন, যে উদ্যোগের মাধ্যমে আপনি দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবেন, খারাপকে যতটুকু সম্ভব দূরে সরিয়ে দিতে পারবেন, আপনি আপনার এলাকার মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবেন।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আপনারাই আমার শক্তি, আপনারাই আমার আস্থা, আপনারাই ভরসা। আমার চোখ ও কান তৃণমূল। আমি তখনই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারব, যখন আপনারা সঠিক দেখবেন।’

একই সঙ্গে ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সতর্ক করে নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেন তারেক রহমান। যেকোনো মূল্যে ঐক্য ধরে রাখার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ যদি না থাকি, আপনারা তিস্তা বাঁধ নিয়ে কথা বলেছেন, ফারাক্কা নিয়ে কথা বলেছেন, ফেলানী হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলেছেন, বিডিআর ও পিলখানা নিয়ে কথা বলেছেন। আপনারা কি মনে করেন, ওপাশ থেকে আপনাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে যাবে? দেশের সীমানার ভেতরেও তাদের সহযোগীরা আছে। বিভিন্ন বিষয়ে যখন জনগণের সামনে বক্তব্য তুলে ধরেছেন, এরপরও কি তারা বসে থাকবে? ষড়যন্ত্র বন্ধ করে বসে থাকবে না। কিন্তু এই ষড়যন্ত্রকে আমরা মোকাবিলা করতে পারব শুধু যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি। সে জন্য ঐক্যের বাইরে আর কোনো বিকল্প নেই। ঐক্য না হলে ষড়যন্ত্র চলবে।’

আরও পড়ুনঅন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে ইতিমধ্যে জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে: তারেক রহমান১১ ঘণ্টা আগে

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্রথম এক ছাতার নিচে সব নেতাকে নিয়ে বর্ধিত সভা করল বিএনপি। সভাটি বিএনপি নেতাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।

বর্ধিত সভার মূল মঞ্চে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ