নতুন ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদ পাওয়া দুই প্রতিনিধি। আজ বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে তাঁরা এ ঘোষণা দেন। কমিটিতে ঢাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক আধিপত্যের প্রতিবাদে তাঁরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

পদত্যাগ করা দুই নেতা হলেন সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী সজীব এবং যুগ্ম সদস্যসচিব সালাহউদ্দিন আম্মার। তাঁরা দুজনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন।

গতকাল বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে নতুন ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদারকে আহ্বায়ক ও দপ্তর সম্পাদক জাহিদ আহসানকে সদস্যসচিব করে প্রাথমিকভাবে ছয় সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। এরপর আজ বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করে ২০৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার। এতে ৬ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে মেহেদী সজীব ও ১ নম্বর যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে সালাহউদ্দিন আম্মারের নাম ঘোষণা করেন তিনি। নাম ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই দুই সমন্বয়ক।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে মেহেদী সজীব লেখেন, ‘আজ বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে আমার নাম বলা হয়েছে। গতকাল রাতেও এ নিয়ে আমি আমার স্ট্যান্ড ক্লিয়ার করেছি। এখনো বলছি, নতুন বন্দোবস্তের নামে ঢাকা ও ঢাবিকেন্দ্রিক নয়া ফ্যাসিবাদী মনোভাবের যে উত্থান লক্ষ করা যাচ্ছে, তার প্রতিবাদেই আমি এই প্ল্যাটফর্মে থাকতে রাজি নই।’

ইচ্ছার বাইরে তাঁকে সংগঠনে সম্পৃক্ত করার নিন্দা জানিয়ে মেহেদী সজীব আরও লেখেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যই তিনি আজ মেহেদী সজীব হিসেবে গড়ে উঠতে পেরেছেন। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ঢাকা ও ঢাবিকেন্দ্রিক ফ্যাসিবাদী মনোভাব থেকে যত দিন না এই দলের অংশীজনেরা বেরিয়ে আসতে পারবেন, বিকেন্দ্রীকরণের দিকে মনোনিবেশ করবেন, তত দিন পর্যন্ত তিনি তাঁদের সঙ্গে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বোঝাপড়ায় যাবেন না। এ জন্য তিনি ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে সালাহউদ্দিন আম্মার লিখেছেন, ‘আমাদের কাছে শিক্ষার্থীদের পালসটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রাবি শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে না এই ঢাবি আধিপত্যের পক্ষে থাকতে, তাই আমরাও চাচ্ছি না। শিক্ষার্থীরা না চাইলে আমরা কিছুই নই।’

পদত্যাগের বিষয়ে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, নতুন ছাত্রসংগঠনটি সর্বজনীন হতে পারত। কিন্তু তাঁদের বর্তমান অবস্থানের কারণে সংগঠনটির প্রতি শিক্ষার্থীরা বিশ্বাস রাখতে পারছেন না। জুলাই অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিলেন শিক্ষার্থীরা। সেই শিক্ষার্থীদের অনুভূতির বাইরে গিয়ে তাঁর রাজনীতি করা সম্ভব নয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পদত য গ র স গঠনট স গঠন সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

কঙ্গোতে আগুন লেগে নৌকাডুবি, অন্তত ১৪৮ প্রাণহানি

মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক (ডিআর) কঙ্গোতে একটি ইঞ্জিনচালিত কাঠের নৌকায় আগুন লেগে ডুবে যাওয়ার ঘটনায় অন্তত ১৪৮ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কঙ্গো নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর রয়টার্সের।

ডিআর কঙ্গোর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, আগুন লাগার সময় নৌকাটিতে নারী ও শিশুসহ পাঁচ শতাধিক যাত্রী ছিলেন। পুলিশ ও উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এইচ বি কঙ্গোলো নামের সেই ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি মাতানকুমু বন্দর থেকে বোলোম্বা অঞ্চলের দিকে যাচ্ছিল। পথে এমবানদাকা এলাকায় পৌঁছানোর পর নৌকাটিতে আগুন ধরে যায় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিতে ডুবে যায়।

কঙ্গোর নদী পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কম্পেটেন্ট লোয়োকো অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, নৌকার ডেকে এক নারী রান্না চড়িয়েছিলেন। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত।

ডুবে যাওয়া সেই নৌকাটি থেকে প্রায় ১০০ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাদের মধ্যে যাদের আগুনে পোড়ার ক্ষত রয়েছে, তাদেরকে পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে।

কঙ্গোতে নৌকাডুবি বিরল কোনো দুর্ঘটনা নয়। কারণ গণপরিবহন হিসেবে সেখানে যেসব নৌকা ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর অধিকাংশই পুরনো ও ত্রুটিযুক্ত। আবার অনেক সময় ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী বা মালপত্র বোঝাই করে নৌকাগুলো।

২০২৪ সালে কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে কিভু হ্রদে একটি নৌকা ডুবে নিহত হয়েছিলেন ৭৮ জন। একই বছর ডিসেম্বরে পশ্চিমাঞ্চলে নদীতে নৌকাডুবে নিহত হন অন্তত ২২ জন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ