পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে উপজেলার দুজন প্রতিনিধিকে বহিষ্কার করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। বহিষ্কৃত দুজন হলেন তেঁতুলিয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন করা প্রতিনিধি মো. হযরত আলী ও মো. ওবায়দুল্লাহ।

গতকাল বুধবার রাতে বিজ্ঞপ্তিটি নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ের অন্যতম সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী। বিজ্ঞপ্তিতে ফজলে রাব্বী জেলার আহ্বায়ক এবং মো.

আকিব ও মো. মনজিল সদস্য হিসেবে স্বাক্ষর করেন। যদিও কেন্দ্রীয়ভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ে কোনো কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড় জেলা থেকে জানানো যাচ্ছে, তেঁতুলিয়া উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে আসছিলেন হযরত আলী ও ওবায়দুল্লাহ; কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে তাঁরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে নানা ধরনের শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। পাশাপাশি জেলার সমন্বয়কদের নিয়ে মিথ্যাচার করে বক্তব্য দেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ ধরনের কাজকে কোনোভাবেই সমর্থন করে না। তাই শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে জেলার পক্ষ থেকে তাদের বহিষ্কার করা হলো। পরবর্তী সময়ে তাঁরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

বিজ্ঞপ্তিটি ফেসবুকে পোস্ট করার পর অনেকে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মন্তব্য করেছেন। ‘বহিষ্কৃত’ হযরত আলী মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, ‘আপনার অফিশিয়াল কমিটি কোথায়? তেঁতুলিয়ায় আন্দোলন কি আপনার অনুমতিতে হয়েছে? নাকি এখানে আন্দোলনরত ছেলেদের সাথে আপনি একবার বসেছেন?...এ উপজেলায় যারা আন্দোলন করছে তারা থাকবে, আপনাকে গোনার টাইম নাই।’

রবিউল আওয়াল নামের একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এটারই অপেক্ষায় ছিলাম।’ তবে অনিসুর রহমান নামের আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘ভাই অন্যায়ের বিপক্ষে কথা বলার জন্য কোনো ব্যানার লাগে না। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন যখন শুরু হয়, তখন কোনো ব্যানার ছিল না। পরে সবার সুবিধার জন্য, স্বার্থের জন্য বাকি আয়োজন। এখন অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য যদি আপনাদের সমস্যা হয়, তাহলে আপনাদের সাথে না থাকাই উত্তম।’

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে তেঁতুলিয়া উপজেলা শহরের তেঁতুলতলায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন হযরত আলী ও ওবায়দুল্লাহসহ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ‘বহিষ্কৃত’ ওবায়দুল্লাহ সমন্বয়ক ফজলে রাব্বীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ করেন।

মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, সারা বাংলাদেশে যখন ছাত্র-জনতা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে, তখন তেঁতুলিয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে তাঁরা আন্দোলনে নামেন। জেলার কারও সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁরা আন্দোলন করেননি। নিজেদের বিপ্লবী মনোভাব থেকে তাঁরা আন্দোলন করেন। জুলাই বিপ্লবে হযরত আলীর অবদানের কথা সবাই জানেন। ফজলে রাব্বীদের মেনে নিতে না পারার কারণ হযরত বিএনপিপন্থী। শিবিরের মতাদর্শের হলেই হালাল, অন্য মতাদর্শের হলে বয়কটের ডাক—এ কেমন নীতি-নৈতিকতা প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁরা নিয়মবহির্ভূত ওই বহিষ্কারাদেশকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন।

জানতে চাইলে সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী প্রথম আলোকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে তাঁরা বিভিন্ন কার্যালয়ে গিয়ে সমন্বয়ক পরিচয়ে শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। প্রতিবাদ করায় তাঁদের শিবির বলে অপপ্রচার  করছে। কয়েক দিন আগে তেঁতুলিয়া যাওয়ার পথে কোনো কারণ ছাড়াই তারা জেলার সমন্বয়ক মোকাদ্দেসুর রহমান সান ও তাঁকে মারতে এসেছে। এসব কর্মকাণ্ডের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সমন বয়ক র জন য ফ সব ক উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড যেভাবে এল

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এখন বিশ্বের অন্যতম বহুল ব্যবহৃত ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার। সাধারণ টেক্সট এডিটর থেকে যাত্রা শুরু করে এমএস ওয়ার্ড এখন একটি শক্তিশালী ডকুমেন্ট তৈরির সরঞ্জাম। এমএস ওয়ার্ডের ইতিহাস ঘাঁটলে কয়েক দশক পর্যন্ত তথ্য জানা যায়। মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের আগে ওয়ার্ড প্রসেসিং হিসেবে আইবিএম সিলেকট্রিক টাইপরাইটার (১৯৬১), ওয়ার্ডস্টার (১৯৭৮) ও ওয়ার্ডপারফেক্ট (১৯৮০) ডিজিটাল ওয়ার্ড প্রসেসরের জনপ্রিয়তা ছিল। এসব প্রোগ্রাম টাইপরাইটার ব্যবহার না করে ব্যক্তিগত কম্পিউটারে লেখা তৈরি, সম্পাদনা ও ফরম্যাট করার সুযোগ ছিল।
পরবর্তী সময়ে আশির দশকের শুরুতে বিভিন্ন সফটওয়্যার কোম্পানি ব্যবহারকারী-বান্ধব ওয়ার্ড প্রসেসর তৈরি শুরু করে। মাইক্রোসফট তখন আবির্ভূত হয়। তত দিনে মাইক্রোসফট আইবিএম কম্পিউটারের জন্য এমএস-ডস তৈরি করেছিল।

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড প্রথম তৈরি করেন চার্লস সিমোনি ও রিচার্ড ব্রডি। তাঁরা জেরক্স পিএআরসির দুই সাবেক প্রোগ্রামার। সেই সময় তাঁরা মাইক্রোসফটের একটি জেরক্স প্রকল্পে কাজ করেছিলেন। ব্রাভোকে বলা হয় ডব্লিউওয়াইএসআইডব্লিউওয়াইজি ধরনের ওয়ার্ড প্রসেসর।

ডব্লিউওয়াইএসআইডব্লিউওয়াইজি মানে হোয়াট ইউ সি ইজ হোয়াট ইউ গেট।
১৯৮৩ সালে মাইক্রোসফট জেনিক্স ও এমএস-ডসের জন্য মাল্টি-টুল ওয়ার্ড প্রকাশ করে। পরে তাঁর নাম পরিবর্তন করে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড রাখা হয়। এর মাধ্যমে টেক্সট ফরম্যাটিং, স্পেলিং চেক ও মাউস ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়। এসব বৈশিষ্ট্য ছিল সেই সময়ে নতুনত্ব। এসব বৈশিষ্ট্যের কারণে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ওয়ার্ডস্টার ও ওয়ার্ডপারফেক্টের মতো সফটওয়্যারের বিপরীতে এগিয়ে যায়। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড প্রথম সরাসরি স্ক্রিনে বোল্ড ও ইটালিক টেক্সট দেখার সুযোগ দেয়।

মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের প্রাথমিক সংস্করণ কিছু জনপ্রিয়তা অর্জন করলেও ওয়ার্ডপারফেক্টের সঙ্গে পেরে উঠছিল না। ১৯৮৯ সালে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ফর উইন্ডোজ ১.০ প্রকাশ করে। এই সংস্করণ নতুন ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের উত্থানের সঙ্গে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস (জিইউআই) সুবিধা গ্রহণ করে এগিয়ে যায়।

১৯৯০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ওয়ার্ডপারফেক্টকে ছাড়িয়ে যেতে শুরু করে। মাইক্রোসফটের ওয়ার্ডকে মাইক্রোসফট অফিসের সঙ্গে বান্ডিল হিসেবে প্রকাশ করে মাইক্রোসফট। এক্সেল ও পাওয়ারপয়েন্টের সঙ্গে একত্রে প্রকাশ হয়। পরবর্তী সময়ে ওয়ার্ড ৬.০ (১৯৯৩) ও ওয়ার্ড ৯৭ (১৯৯৭) বাজারে প্রভাব তৈরি করে। অটোকারেকশন, অ্যানিমেটেড সহকারী ক্লিপির মতো জনপ্রিয় বৈশিষ্ট্য দেখা যায় তখন।

পরবর্তী সময়ে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ২০০৩, ২০০৭ ও পরবর্তী সংস্করণের প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে আরও বাজার বিস্তৃত হয়। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ২০০৭ রিবন ইউআই প্রবর্তন করে ওয়ার্ডের ইন্টারফেসকে পরিমার্জন করা হয়। ২০০৭ সালে ডট ডকএক্স ফাইল ফরম্যাট প্রকাশ করা হয়। ২০১০ দশকের পরে মাইক্রোসফট ক্লাউডে এমএস ওয়ার্ড ব্যবহার শুরু হয়।

সূত্র: মাইক্রোসফট

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ​​​​​​​ঈদের আনন্দ রোজাদারের প্রথম পুরস্কার
  • রাজশাহীতে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত সকাল ৮টায়
  • মাইক্রোসফট ওয়ার্ড যেভাবে এল
  • সৌদির সাথে মিল রেখে ফতুল্লায় ঈদুল ফিতর উদযাপন
  • রাজশাহীতে ঈদে কোনো নাশকতার শঙ্কা নেই: র‍্যাব
  • তাহলে কে হচ্ছেন ব্রাজিলের কোচ
  • সেনাবাহিনী নিয়ে নেতিবাচক চর্চা বিপজ্জনক
  • রাজশাহীতে ঈদের প্রধান জামাত সকাল ৮টায়
  • আশ্রয়দাতার শিশুসহ ৪ শিশুকে নিয়ে পালাচ্ছিলেন আদুরী, স্টেশনে ধরা
  • ‘ছাত্র-জনতার ভোটের অভ্যুত্থানে পালিয়ে যাবে আওয়ামী পরবর্তী জুলুমবাজের দল’