দিল্লি ক্যাপিটালসের মেন্টর হলেন কেভিন পিটারসেন
Published: 27th, February 2025 GMT
আসন্ন আইপিএলে নতুন ভূমিকায় দেখা যাবে ইংল্যান্ডের সাবেক তারকা ব্যাটসম্যান কেভিন পিটারসেনকে। দিল্লি ক্যাপিটালস ফ্র্যাঞ্চাইজি তাকে মেন্টর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। ২০১৬ সালের পর আবারও আইপিএলে ফিরছেন তিনি, তবে এবার খেলোয়াড় নয়, দলের পরামর্শকের ভূমিকায়।
২০০৯ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে তিনটি ভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে আইপিএলে খেলেছেন পিটারসেন। এর মধ্যে দিল্লি ক্যাপিটালসের (তৎকালীন দিল্লি ডেয়ারডেভিলস) হয়ে ২০১৪ সালে অধিনায়কের দায়িত্বও পালন করেছিলেন। তবে তার নেতৃত্বে দল আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে পারেনি, ১৪ ম্যাচের ১২টিতেই হার দেখে আসর শেষ করেছিল দিল্লি।
পিটারসেনের সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক বেশ পুরোনো। দিল্লি ক্যাপিটালসের অন্যতম মালিক জিএমআর কোম্পানির সঙ্গে তার সুসম্পর্ক রয়েছে। গত বছর হ্যাম্পশায়ার কাউন্টি ক্লাবের মালিকানা কিনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। দিল্লি ক্যাপিটালসের যৌথ মালিকানা রয়েছে জিএমআর ও জিএসডব্লিউ কোম্পানির হাতে। গত মৌসুমের পর এই দুই কোম্পানির মধ্যে চুক্তি হয়, যেখানে ২০২৭ সাল পর্যন্ত পুরুষ দলের দায়িত্ব থাকবে জিএমআরের হাতে, আর নারী দলের দায়িত্ব পরিচালনা করবে জিএসডব্লিউ। ধারণা করা হচ্ছে, পিটারসেনের মেন্টর হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পেছনে এই সংযোগও ভূমিকা রেখেছে।
আগামী ২২ মার্চ শুরু হতে যাচ্ছে আইপিএলের ১৮তম আসর। এখন পর্যন্ত শিরোপার স্বাদ না পাওয়া দিল্লি ক্যাপিটালস পিটারসেনের অভিজ্ঞতায় ভাগ্য বদলাতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক ভ ন প ট রস ন ক য প ট লস র
এছাড়াও পড়ুন:
জার্মান নির্বাচন ইউরোপকে যে দিকে নিতে পারে
২৩ ফেব্রুয়ারির জার্মান নির্বাচনে খ্রিষ্টান ডেমোক্র্যাটস (সিডিইউ/সিএসইউ) জয়লাভ করেছে। ২৮.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জার্মানির সম্ভাব্য চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক এসপিডির সঙ্গে জোট চাইবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। যদিও গত নির্বাচনে জয়লাভকারী এসপিডি ভোট পেয়েছে মাত্র ১৬.৪ শতাংশ; তারাই সিডিইউ নেতা ফ্রেডরিখ মার্জের জন্য একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য জোটসঙ্গী হিসেবে আবির্ভূত। মার্জের প্রথম কাজের মধ্যে একটি হলো তাঁর সাহসী বিবৃতি, যেখানে তিনি বলেছেন, তাঁর প্রথম অগ্রাধিকার ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইউরোপকে শক্তিশালী করা, যাতে ধাপে ধাপে আমরা সত্যিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারি।’
মার্জের জন্য বিষয়গুলো অন্য রকমও হতে পারত। যদি একটি ছোট দল (সাহরা ওয়াগেননেচ জোট বা বিএসডব্লিউ) মাত্র ০.০৩ শতাংশের কম ভোট পেত, তাহলে মার্জকে তৃতীয় একটি জোটসঙ্গী খুঁজতে হতো। এর অর্থ হয়তো গ্রিন পার্টির সঙ্গে কাজের চেষ্টা করা। সে ক্ষেত্রে মধ্য ডানপন্থাকে ঠিকঠাক জায়গায় বসাতে আরও অনেক কঠিন বৃত্তের মধ্যে ঘুরপাক খেতে হতো।
বিশেষত তরুণদের মধ্যে দ্য লেফট পার্টির সাফল্য নির্বাচনে একটি বড় চমক ছিল। একটি উত্তাল সময়ের পরে যা নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব সাহরা ওয়াগেননেচ এবং তাঁর অনুসারীদের একটি পৃথক দল গঠনের মধ্য দিয়ে বিভাজন দেখেছিল। এর আগে বামরা সংসদে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় ৫ শতাংশ ভোট পাইনি। ইসরায়েল ও গাজা নিয়ে একটি অভ্যন্তরীণ বিভক্তিও অসুবিধা সৃষ্টি করেছে।
রিফিউজি বা আশ্রয়প্রার্থীদের প্রতি কঠোর নীতি নিয়ে গণভোট আয়োজনে মার্জের সিদ্ধান্ত বামদের সুবিধা করে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে পার্টির যুব যুগ্ম সংসদীয় নেতা হেইডি রেইচিনেকের নেতৃত্বে একটি বুদ্ধিমান সামাজিক মিডিয়া প্রচারাভিযানও কাজে লেগেছিল।
এদিকে বিএসডব্লিউ জাতীয় ভোটের মাত্র ৪.৯৭ শতাংশ পাওয়ায় সংসদে তাদের কোনো আসন থাকবে না। তবে বিএসডব্লিউর জনপ্রিয়তা সারাদেশে অত্যন্ত অসম ছিল। সেটি ভৌগোলিক বিভাজনের আরেকটি উদাহরণ। যদিও দলটি জাতীয়ভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে, তবে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থনের সমালোচনার সঙ্গে এর অভিবাসনবিরোধী, ‘যুদ্ধবাজবিরোধী’ এবং কল্যাণপন্থি নীতিগুলো পূর্বাঞ্চলে একটি জনপ্রিয় প্রস্তাব ছিল। যার ফল হিসেবে ওই অঞ্চলে দলটির ভোট ১০ শতাংশের কাছাকাছি ছিল, যা জাতীয় গড়ের দ্বিগুণ।
এখন ইউরোপের কী হবে? এসপিডি দাবি করেছে, তারা কোনোভাবেই সরকারে যাবে না। দলটি ইঙ্গিত দিয়েছে, জোটের যে কোনো প্রস্তাব নিয়ে তারা মার্জের চেয়ে বেশি গণতন্ত্রী প্রমাণে পার্টির সদস্যদের মধ্যে ভোট করবে। প্রকৃতপক্ষে দলটির আর কোথাও যাওয়ার নেই। সিডিইউ/সিএসইউ-এসপিডি জোটের আগাম নির্বাচন বা এএফডির প্রতি সাবেক পদ্ধতির মৌলিক পুনর্বিবেচনা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এর কোনোটিতে সম্ভাবনা নেই।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দৃঢ়তা এবং ইউক্রেনকে সমর্থন করার প্রয়োজনীয়তার পরিপ্রেক্ষিতে জার্মানির ওপর একত্রে কাজ করার জন্য অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের প্রচণ্ড চাপ আছে, তা সব দল জানে। ঘরোয়া ফ্রন্টেও মোকাবিলা করার জন্য মার্জের সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জ। মার্জ ট্যাক্স কমানো ও উচ্চ প্রতিরক্ষা ব্যয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তবে কীভাবে বিপরীতধর্মী এ দুই বিষয় মেলাবেন, তা স্পষ্ট করেননি। কল্যাণমূলক পদক্ষেপ ও অন্যান্য সামাজিক ব্যয় ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনা হয়তো এসপিডির জন্য ‘অসম্ভব ক্ষেত্র’ হবে। একটি বিকল্প হতে পারে জার্মানির ‘ঋণ ব্রেক’ বা সরকারি ঋণ নেওয়ার ওপর সাংবিধানিক বিধিনিষেধ শিথিল করা। এ ব্যাপারে মার্জ অনিচ্ছুক ছিলেন, তবে তিনি ভোটের পরে এটি পুনরায় ভেবে দেখার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এই মৌলিক সংস্কারের জন্য পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন এবং অতিরিক্ত তহবিল শুধু প্রতিরক্ষার জন্য হলে বাম ও এএফডি তাঁকে পরাজিত করতে জোট বাঁধতে পারে।
তাই জার্মানির নির্বাচন আমাদের দ্বিধায় ফেলে দেয়। কিছু ক্ষেত্রে ফলাফল বরং পরিচিত। কারণ একজন পুরোনো খ্রিষ্টান ডেমোক্র্যাট এসপিডির সঙ্গে জোট বাঁধতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন; এমন একটি দল, যাদের সরকারি দল হিসেবে দীর্ঘদিনের ফলাফল রয়েছে এবং প্রকৃতপক্ষে তাদের মধ্যে ইউরোপে জার্মান নেতৃত্বের কিছু সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এটিও ব্যাপক অনিশ্চিত ফলাফল। কেননা, জার্মানি বিপুল চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। মন্থর প্রবৃদ্ধি, ইউরোপে যুদ্ধ এবং একজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট যুদ্ধ-পরবর্তী আটলান্টিকের দুই পাশের সম্পর্কের মূলনীতি নিয়ে এখন প্রশ্ন তুলছেন। কীভাবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে এবং যা একটি সম্পূর্ণ বিভক্ত ভোটারদের সন্তুষ্ট করতে পারে, সে বিষয়ে একমত হতে পারে এমন একটি শাসক জোটকে কীভাবে একত্র করা যায়, তা পরিষ্কার নয়। দেশ ও মহাদেশজুড়ে অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে, তবুও ভালোর দিকে এগিয়ে যাক।
এড টার্নার: অ্যাস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাস্টন সেন্টার ফর ইউরোপের সহপরিচালক; দ্য কনভারসেশন থেকে ভাষান্তর ইফতেখারুল ইসলাম