মায়ের ভাষা শুনতে শুনতেই বড় হয় শিশু। প্রথম বুলিও সাধারণত সেই ভাষাতেই ফোটে। বেড়ে ওঠার দিনগুলোতেই মায়ের ভাষা তার বড় আপন মনে হয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হওয়ারও আগে জীবনের প্রথম পাঠ এই ভাষাতেই হয়। এ তো প্রতিটি শিশুর বেড়ে ওঠার সাদাসিধে গল্প। তবে পৃথিবীর সব শিশু কিন্তু মাতৃভাষায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ পায় না। অথচ ইউনিসেফ বলছে, শৈশবে শেখার জন্য মাতৃভাষায় লেখা বই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মাতৃভাষা, অর্থাৎ নিজের শোনা প্রথম ভাষাটাই শিশুর জন্য সহজ। মনোবিজ্ঞানের মতে, এই ভাষার সঙ্গেই সে নিজের যোগ খুঁজে পায়। এই ভাষার মাধ্যমে পাওয়া তথ্য সহজে বুঝতে পারে শিশু। অনেকটাই উপলব্ধি করতে পারে লেখকের ভাষ্য। স্বাভাবিকভাবেই বই থেকে সে অনেক সহজে জ্ঞান আহরণ করতে পারে। পরিচিত ভাষায় লেখা বইগুলো তার জন্য পড়া সহজ বলে তার বইপড়ার আগ্রহও বাড়ে। এমনটাই জানালেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী শারমিণ হক।

শিশুর বিকাশে

পরিচিত, সহজ ভাষায় শিশু যে বই পড়ে, সেটি তার বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখে। লেখক যে আবেগের বিস্তার ঘটান বইয়ের পাতায়, সেই আবেগের সঙ্গেও শিশু নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারে। বইয়ে বর্ণনা করা কোনো চরিত্রকে কল্পনাও করতে পারে অনায়াসে। বই পড়ে কত সহজে জ্ঞানের আলোকিত প্রান্তরে প্রবেশ করা যায়, এ বিষয়টিও সে নিজের মতো করে বুঝে নিতে পারে। ফলে বইপড়ার প্রতি আগ্রহও বাড়ে। বিভিন্ন বিষয়ের ওপর মাতৃভাষায় লেখা বই শিশুকে দেওয়া হলে সে নানান বিষয়ে যেমন জানতে পারে, তেমনি এসব বইয়ের মাধ্যমে সৃজনশীলতার চর্চাও হয়। মাতৃভাষায় লেখা বইয়ে নিজের দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ছোঁয়া পাবে শিশু। শিশুর মধ্যে দেশাত্মবোধ জন্মাবে। আবার অন্য ভাষার কিছু বইও যদি সে মাতৃভাষায় পড়ার সুযোগ পায়, তাহলে ভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গেও সহজে পরিচিত হবে।

আরও পড়ুনবই রাখার জন্য ২৮ লাখ টাকায় ফ্ল্যাট কিনে ফেললাম০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫মাতৃভাষায় শেখার সুযোগ একটি শিশুর ভবিষ্যৎ একাডেমিক জীবনেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখে.