কুবিতে ইনোভেশন হাব স্থাপন করা হবে: শীষ হায়দার
Published: 27th, February 2025 GMT
পরবর্তী ইনোভেশন হাবটি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) স্থাপন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, “তারুণ্য উৎসবের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে করার কারণ হলো, জুলাই বিপ্লবের অন্যতম স্থান ছিল কুমিল্লা। এছাড়া এ এলাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ এডুকেশন হাব। এ অঞ্চলে একসঙ্গে অনেক ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাই পরবর্তী ইনোভেশন হাবটি আমরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপন করব।”
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত তারুণ্য উৎসব-২০২৫ এ তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “তারুণ্য উৎসবের মাধ্যমে ড.
তারুণ্য উৎসব-২০২৫ এর সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো হায়দার আলী বলেন, “তরুণদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথ হলো তথ্যপ্রযুক্তি। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় একটি সুন্দর উদ্যোগ নিয়েছে তরুণদের উদ্ভাবন ও উদ্দ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য।”
তিনি বলেন, “আইসিটি মানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জগৎ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এ জগৎ খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে এসব বিষয়ে তরুণদের টার্গেট হওয়া উচিত। যদি মন্ত্রণালয় থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক কিছু প্রজেক্ট হাতে নেয়, সেখানে আমরা সহযোগিতা করব।”
কুবির বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমাইয়া আফরিন সানি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ সাইফুল হাসানের সঞ্চালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরে মহাপরিচালক (অতিরিক্ত) মোহাম্মদ আনোয়ার উদ্দিন, পেনিনসুলা কনসোর্টিয়ামের নির্বাহী পরিচালক এমএএন শাহীন, কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পঙ্কজ বড়ুয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, তারুণ্যে উৎসবের আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘জুলাই বিপ্লব ও তথ্য প্রযুক্তি’ এবং ‘জুলাই বিপ্লবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক দুইটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। পরে তারুণ্য উৎসবে অনলাইন ভিত্তিক কুইজ এবং একটি প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করা হয়।
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ত র ম ব দ ধ মত ত ত র ণ য উৎসব
এছাড়াও পড়ুন:
সেনাবাহিনী নিয়ে নেতিবাচক চর্চা বিপজ্জনক
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিশেষত সামাজিক মাধ্যমে যে নেতিবাচক চর্চা হয়েছে, তা সচেতন কোনো মানুষেরই নজর এড়ায়নি। যে উদ্দেশ্যেই তা করা হোক, এটি যে বিশেষত দেশ ও জাতির জন্য বিপজ্জনক– তা সচেতন ব্যক্তিমাত্রেরই না বোঝার কোনো কারণ নেই। তাই এ লেখার অবতারণা।
বিষয়টির সূত্রপাত ঘটান সদ্যঘটিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একজন শীর্ষসারির নেতা। তিনি সেনাপ্রধানের সঙ্গে তাঁর আরেক সতীর্থসহ একটি বৈঠক করেছিলেন নিজেদেরই আগ্রহে। সেই বৈঠকের ১০ দিন পর এ নিয়ে তিনি এক ফেসবুক পোস্ট দেন, যেখানে তিনি সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে কার্যত কিছু অভিযোগ করেন, যদিও পরবর্তী সময়ে তাঁর সতীর্থ এক ফেসবুক পোস্টে ওই অভিযোগের বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করেন। একই সময়ে সামাজিক মাধ্যমে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) এক নেতার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে ওই নেতা সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনী সম্পর্কে ব্যাপক বিষোদ্গার করেন।
একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম হলো সেনাবাহিনী। তাকে সার্বভৌমত্বের প্রতীক হিসেবেও মনে করা হয়। তাই সচেতন মহল সাধারণত সেনাবাহিনী সম্পর্কে যে কোনো আলোচনাকে স্পর্শকাতর মনে করে থাকে। অন্তত সেনাবাহিনীকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা কোনো দেশপ্রেমিক বা সচেতন মানুষ করেন না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও এ ধারণার বাইরে নয়। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে মূলধারার সংবাদমাধ্যমও এ বাহিনী সম্পর্কে যে কোনো বিতর্ক এড়িয়ে চলে।
আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিশেষত ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে দেশের প্রায় সব মানুষই তাকিয়ে আছে সেনাবাহিনীর দিকে। গণঅভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার প্রধান দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ প্রতিষ্ঠান হিসেবে যে ক্ষতির মুখে পড়েছে, তাতে বাহিনীটির সোজা হয়ে দাঁড়াতে আরও অনেক সময় লাগবে। জানমাল রক্ষাসহ পুলিশের বিশাল দায়িত্ব সেনাসদস্যরা কাঁধে তুলে নিয়েছেন। এখন প্রতিষ্ঠানটি যদি অকার্যকর হয়ে পড়ে তাহলে আক্ষরিক অর্থেই দেশে এক মাৎস্যন্যায় নেমে আসতে পারে। এ কারণেও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ওই বিষোদ্গার ভয়ংকর বলে বিবেচিত হচ্ছে।
বর্তমান সেনাপ্রধান অভ্যুত্থানের সময় এবং অভ্যুত্থান-পরবর্তী পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বেশ ধৈর্য ও বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে দেশ-জাতি এবং বিশেষত গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি জনপরিসরে প্রশংসা কুড়িয়েছে বললেও বাড়িয়ে বলা হবে না। সেই সেনাপ্রধান ও তাঁর নেতৃত্বাধীন বাহিনীর বিরুদ্ধে যারা বিকৃত রুচির বক্তব্য দিয়ে চলেছেন, তারা তাদের বিকৃত মানসিকতারই পরিচয় দিচ্ছেন। অথবা অন্য কোনো অভিসন্ধিও থাকতে পারে তাদের। ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে উৎসাহী লোকের তো অভাব নেই এ দেশে।
আশার বিষয় হলো, সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আলোচ্য বিষোদ্গার ব্যাপক নিন্দাও পেয়ে চলেছে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমেই এর বিরুদ্ধে সমালোচনামুখর হয়ে উঠেছেন। দেশের অর্থনীতি যে গভীর সংকটকাল অতিক্রম করছে এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যেভাবে নানা কারণে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন, তার মধ্যে সেনাবাহিনীকে দুর্বল করা হলে, তার ফল ভয়াবহ হতে বাধ্য। জাতীয় স্বার্থেই সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা উচিত নয়।
শেষ কথা হলো, যারা রাজনীতি করেন তাদের কিন্তু অনেক ধৈর্যশীল ও বিচক্ষণ হতে হয়। সৌজন্যবোধ তাদের গুরুত্বপূর্ণ এক বৈশিষ্ট্য। তদুপরি কোথায় কোন কথা বলা হলে কী ফল হতে পারে তাদের তাও জানতে হয়।
সাইফুর রহমান তপন: সহকারী সম্পাদক, সমকাল