লুডু খেলার কথা বলে শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, বৃদ্ধ গ্রেপ্তার
Published: 27th, February 2025 GMT
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় লুডু খেলার কথা বলে পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার গভীর রাতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর-মানিকদা এলাকা থেকে অভিযুক্ত কামরুল হাওলাদারকে (৬০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমরিয়া ইউনিয়নের লেবুতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি শিশুটির মা বাদী হয়ে টুঙ্গিপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, কামরুল হাওলাদার পূর্ব পরিচিত। তাই তিনি ওই শিশুদের বাড়িতে মাঝে মাঝে যাওয়া-আসা করতেন। আর ওই শিশুকে নাতি বলে ডাকতেন। বিভিন্ন সময় দোকান থেকে খাবার কিনে দিত। সেই সুবাদে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় লুডু খেলার কথা বলে শিশুটিকে নিয়ে কামরুল তার বাড়িতে যায়। সেখানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করলে শিশুর চিৎকারে আশেপাশের মহিলারা দৌড়ে আসেন। এ সময় কামরুল শিশুটিকে রেখে পালিয়ে যায়। প্রতিবেশীরা শিশুটির মাকে বিষয়টি জানায়। পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি টুঙ্গিপাড়া থানায় মামলা করেন তিনি।
শিশুর মা জানান, তার মেয়ের চিৎকারে প্রতিবেশীরা কামরুলের বাড়িতে গিয়ে তাদের নগ্ন অবস্থায় দেখতে পায়। অবস্থা বেগতিক দেখে কামরুল পালিয়ে যায়। প্রতিবেশীরা আমাকে সব কিছু জানায়। পরে মামলা করলে বুধবার রাতে পুলিশ কামরুলকে গ্রেপ্তার করে। তিনি কামরুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
টুঙ্গিপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নয়ন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, শিশুটির মা থানায় মামলা করার পর থেকে অভিযুক্ত কামরুল গা ঢাকা দিয়ে অন্য এলাকায় চলে যায়। পরে বুধবার গভীর রাতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর-মানিকদা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ মিনারের স্বীকৃতি মিলবে কত যুগ পর
তখন রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের এক যুগ হয়ে গেছে। এ আন্দোলনে চট্টগ্রামের ভূমিকা গৌরবময়। ভাষাশহীদদের স্মরণে ১৯৬৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করেন কয়েক ছাত্র। তাদের কয়েকজনকে এ জন্য বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃতও হতে হয়। এটিই দেশের বিদ্যালয় পর্যায়ে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে জানিয়েছেন কয়েকজন গবেষক। অথচ স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি এই ঘটনার।
মহান একুশের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত এমএ বার্ণিকের লেখা ‘জেলায় জেলায় শহীদ মিনার’ গ্রন্থের ৮৯৭ নম্বর পৃষ্ঠায় কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্মিত শহীদ মিনারটিকে দেশের বিদ্যালয় পর্যায়ে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনারা এটি ভেঙে ফেলে। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে শহীদ মিনারটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। ঐতিহাসিক শহীদ মিনারে তিনটি ত্রিকোণাকৃতির স্তম্ভ রয়েছে, যেগুলো দেখতে পিরামিডের মতো। বেদির নিচে লেখা ‘শহীদ স্মৃতি অমর হোক’।
কয়েকজন দুঃসাহসী শিক্ষার্থী হারিকেনের আলোয় গাছের গুঁড়ি, ইট, পাথর, সিমেন্ট দিয়ে নির্মাণ করেন ওই শহীদ মিনার। যদিও এটি নির্মাণের পরিকল্পনায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষকরাও মানা করেছিলেন। তাদের আশঙ্কা ছিল, এটি নির্মিত হলে বন্ধ হয়ে যাবে অনুদান।
এই শহীদ মিনারের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চেয়ে কয়েকবার বাংলা একাডেমির কাছে আবেদন করলেও মেলেনি ইতিবাচক সাড়া। এটি নির্মাণে নেতৃত্ব দানকারীদের অন্যতম নুরুল হুদা ও সৈয়দুল আলম মৃত্যুর আগে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেখে যাওয়া আকুতি জানিয়েও পারেননি। ২০২৩ সালের অক্টোবরে সৈয়দুল আলম ও ২০২২ সালের জানুয়ারিতে মারা যান নুরুল হুদা। এরও আগে মারা যান শহীদ মিনারটি তৈরির সময় বিদ্যালয়ে দপ্তরি পদে কর্মরত রঞ্জিত কুমার।
স্থানীয় বাসিন্দা অ্যাডভোকেট মো. ফোরকান রাসেল বলেন, ‘বাপ-দাদাদের কাছ থেকে শহীদ মিনারটির কথা শুনে আসছি। স্বীকৃতির দাবিতে অনেককে মানববন্ধন করতেও দেখেছি। এটার স্বীকৃতি আমাদের প্রাণের দাবি।’
কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ বড়ুয়া বলেন, এটি নির্মাণে জড়িত অনেকেই সাক্ষ্য দিয়েছেন– দেশের বিদ্যালয়ে নির্মিত এটিই প্রথম শহীদ মিনার। বিভিন্ন বইয়েও এর উল্লেখ আছে। বাংলা একাডেমির কাছে স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে লিখিত আবেদনও করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে সাড়া না পাওয়া দুর্ভাগ্যের।
বোয়ালখালী থেকে সম্প্রতি বদলি হওয়া ইউএনও হিমাদ্রী খীসা বলেন, ‘শহীদ মিনারটি কেবল বোয়ালখালী বা চট্টগ্রামবাসীর নয়; এটি সারাদেশের ঐতিহ্যের স্মারক। একাধিক ইউএনও স্বীকৃতির দাবিতে নানা মহলে চিঠি দেন বলে জেনেছি। স্থানীয় বাসিন্দারাও কর্মসূচিও পালন করেছেন। এখনও মেলেনি
কাঙ্খিত স্বীকৃতি।’