পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কীভাবে পরিচালিত হয় ইলন মাস্কের স্টারলিংক
Published: 27th, February 2025 GMT
মার্কিন উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তিবিদ ইলন মাস্কের মহাকাশ প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স সারা বিশ্বে স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ-ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা প্রদান করছে। স্টারলিংক নামের এই সেবা বিশ্বের প্রত্যন্ত এলাকায় তারহীন ইন্টারনেট সেবা প্রদান করছে। শুধু একটি অ্যান্টেনা দিয়েই সরাসরি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাড়ি কিংবা অফিস বা দুর্গম পাহাড়ে ইন্টারনেট সেবা মিলছে।
স্টারলিংক শক্তিশালী ডেটা নিরাপত্তা ও ব্যবহারকারীর গোপনীয়তার ওপর জোর দেয়। স্টারলিংক ব্যবহারকারীর ডেটা রক্ষা করার জন্য উন্নত এনক্রিপশন সিস্টেম, শক্তিশালী নেটওয়ার্ক কাঠামো ও ব্যবহারকারীর তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করতে গুরুত্ব দেয়। বাংলাদেশে এত দিন স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবার কাভারেজ ছিল না। বর্তমানের অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুতগতিতে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা আনার জন্য স্টারলিংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। সেই কারণেই স্টারলিংক নিয়ে আলোচনা এখন তুঙ্গে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইবিএম থমাস জে ওয়াটসন রিসার্চ সেন্টারের তত্ত্বীয় কোয়ান্টাম কম্পিউটার বিজ্ঞানী ওমর শেহাব প্রথম আলোকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে জানান, বাংলাদেশের ইন্টারনেট মার্কেট ওপেন বা ফ্রি মার্কেট। এখানে স্টারলিংক প্রবেশ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। স্টারলিংক পাড়া বা মহল্লাভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার বদলে নতুন সুযোগ দেবে। বাংলাদেশ সরকার স্টারলিংক বা এমন স্যাটেলাইট–নির্ভর ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দর–কষাকষি করে সেবার দাম কমাতে পারে। দেশের দূরবর্তী এলাকায় স্যাটেলাইট–নির্ভর ইন্টারনেট সেবার নেটওয়ার্কের মধ্যে চলে আসবে। দাম ও গ্রাহক সেবার বিষয়ে সরকারের এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
এ বিষয়ে জানার জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিউনিকেশনের (বিটিআরসি) মিডিয়া কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিকেশন উইংয়ের সঙ্গে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো উত্তর মেলেনি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল ইন্টারনেট সেবা সরকার ও সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হস্তক্ষেপের কথা শোনা যায়। যদিও স্টারলিংক আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করে, তার পরেও বিভিন্ন দেশের নিয়ন্ত্রক কাঠামো মেনে চলতে চেষ্টা করে স্টারলিংক। স্টারলিংক চাইলেই ইন্টারনেট সেবা দিতে পারে। বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স প্রাপ্তির পরেই সেবা মিলবে। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের স্থানীয় টেলিযোগাযোগ আইন মেনে চলতে হয় স্টারলিংককে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা নিয়ে বেশ কিছু সরকারের সমালোচনামূলক পদক্ষেপ দেখা যায়। ইতালি স্টারলিংকের বিকল্প হিসেবে সরকারি যোগাযোগের জন্য নিজস্বভাবে কক্ষপথে উপগ্রহ পাঠাতে চায়। সংবেদনশীল বিভিন্ন সরকারি যোগাযোগের জন্য স্টারলিংকের উপর নির্ভরতা কমাতে কাজ করছে ইতালি।
আরও পড়ুনইলন মাস্কের স্টারলিংক নিয়ে কাজ করছে বিটিআরসি২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইলন মাস্ক.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স য ট ল ইট র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বিজয়কে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে: আলী রীয়াজ
গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত বিজয়কে বিভিন্নভাবে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, এ দেশের ইতিহাসে গণতন্ত্রের আকাঙ্খা বারবার পর্যদুস্ত হয়ে একটি ব্যক্তিতান্ত্রিক শাসনে পরিণত হয়। গণতন্ত্রের সংগ্রামের মাধ্যমে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে বিভিন্নভাবে সে বিজয়কে ভূলন্ঠিত করা হয়েছে।
শনিবার ঢাকায় সংসদ ভবনের এল ডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা পবন চৌধুরীর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে। বৈঠকে কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদ শাসনকে পরাভূত করে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল অধ্যায় রচনা করতে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছে দাবি করে দলটির উদ্দেশে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, দীর্ঘদিনের যে ফ্যাসিবাদী শাসন জগদ্দল পাথরের মতো আমাদের বুকের উপর বসে ছিল, তার বিরুদ্ধে জীবনবাজি রেখে লড়াই, অকুতোভয় সংগ্রাম এবং আপনাদের সাথীদের প্রাণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সে শাসনকে পরাস্ত করতে পেরেছেন। একটি ফ্যাসিবাদী শাসনকে পলায়ন করতে বাধ্য করেছেন যা বাংলাদেশকে রাষ্ট্র সংস্কারের দিকে অগ্রসর করেছে। তিনি বলেন, এখন সকলে মিলে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সময় এসেছে। ফ্যাসিবাদ যেন আর কখনও এ দেশে ফিরে না আসে, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন স্থায়ী রূপ নেয়, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং সব রকমের নিপীড়ন যেন আমরা প্রতিহত করতে পারি।
আলোচনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলে দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ছাড়াও ছিলেন সামান্তা শারমিন, হাসনাত আব্দুল্লাহ, নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সারোয়ার তুষার, জাভেদ রাসিন ও নাহিদা সারোয়ার নিভা।
উল্লেখ্য, প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সুপারিশগুলো স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩৫টি দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছে। ২৩ মার্চ জাতীয় নাগরিক পার্টি কমিশন বরাবর তাদের মতামত জমা দেয়। সে প্রেক্ষিতে দলটির সঙ্গে আজ আলোচনায় বসে কমিশন। দিনব্যাপী এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।