সোনারগাঁয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা
Published: 27th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সাদিপুরে বাসেদ আলী প্রধান মডেল স্কুল এন্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয় মাঠে বিদায় ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
সাদিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ সভাপতি অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সালু, রমিজ উদ্দিন ভূঁইয়া, সাদিপুর ইউপি সদস্য ফাইজুল ইসলাম নাদিম, হেনা আক্তার, আলতাফ হোসেন প্রধান, আমির হোসেন, সোহেল রানা। পরে এক মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ইমতিয়াজ বকুল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বলেন, তোমরা পরীক্ষার দিন মাথা ঠাণ্ডা রেখে প্রশ্নপত্র ভালোভাবে পড়ে উত্তর লিখবে। তোমরা ভালো রেজাল্ট করে নিজের যোগ্যতা অর্জন করে ভালো কলেজে ভর্তি হয়ে নিজের ও পরিবারের বাবা-মা এবং বিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করবে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য যা যা করা দরকার আমি তা করে যাব। এসময় তিনি শিক্ষার উন্নয়নের জন্য এলাকাবাসীসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সময় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য, বিদ্যালয়ে সব শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী ও ২০২৫ সালের বিদায়ী ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
হামাগুড়ি দিয়ে কেন্দ্রে এসে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে ইউনুস
এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে পরীক্ষার্থীদের ভিড়। ইউনিফর্ম পরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলাদাভাবে চোখে পড়ছিল শারীরিক প্রতিবন্ধী এক কিশোরকে। একটি ইজিবাইক থেকে নামার পর কিশোরটি হামাগুড়ি দিয়ে প্রবেশ করে কেন্দ্রে। গায়ের ইউনিফর্ম দেখে বোঝা যায় সেও পরীক্ষার্থীদের একজন।
গত বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজারের টেকনাফ এজাহার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে দেখা মেলে মো. ইউনুস নামের এই কিশোরের। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে টেকনাফ মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে ইউনুস। কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা আবদুস শুক্কুর ও নুরুজ্জামান দম্পতির সন্তান সে। চার ভাই, দুই বোনের মধ্যে সে পঞ্চম।
পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থী মো. ইউনুসের সঙ্গে কথা হয়। সে বলে, ‘আল্লাহ আমাকে যেভাবে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন, তাতে আমি সন্তুষ্ট। বর্ষাকালে স্কুলে যাওয়া-আসা করতে খুবই কষ্ট হতো। সহপাঠী বন্ধুরা সাহায্য করত নানা সময়। ক্লাসে গিয়ে বসার সময়ও বন্ধুরা আমাকে পছন্দমতো জায়গায় বসতে দিত। আমি লেখাপড়া করে ভালো একজন ব্যবসায়ী হতে চাই।’ সে আরও বলে, ‘আমার বাবা নৈশপ্রহরীর চাকরি করেন। আটজনের সংসার বাবার একার রোজগারে চলে। সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা এগিয়ে আসলে অবশ্যই আমার শিক্ষার এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে।’
ইউনুসের মা নুরুজ্জামান বলেন, জন্মগতভাবে ইউনুস প্রতিবন্ধী। দুই হাঁটুর পাশাপাশি দুই হাতের ওপর ভর করে সে চলাফেরা করে। জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাস করে ষষ্ঠ শ্রেণিতে টেকনাফ মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। লেখাপড়ার প্রতি তার আগ্রহ থাকায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ দিয়েছে। সে প্রতিনিয়ত লেখাপড়া করে যাচ্ছে।
শুধু ইউনুস নয়, আবদুল হামিদ নামের আরও এক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে এজাহার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ওই পরীক্ষার্থী ইউনুসের খালাতো ভাই। কেন্দ্রের সচিব ও এজাহার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাব্বির আহমদ বলেন, দুই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীই দুটি কক্ষে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে। কেন্দ্রের পরিদর্শকসহ সবাই তাদের প্রতি খেয়াল রাখছেন।
কেন্দ্রের পরিদর্শক সৈয়দা তাহমিনা খানম বলেন, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। তারা ভালোভাবেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। খাতা জমা দেওয়ার সময় রোল নম্বর ঠিকমতো লিখেছে কি না, যাচাই-বাছাই করা হয়।
মো. ইউনুস ও আবদুল হামিদের বিষয়ে টেকনাফ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ইউনুস ও হামিদ পরস্পর খালাতো ভাই। দুজন শিক্ষার্থী খুবই ভদ্র। তাদের পড়াশোনা দেখে অন্যরা অনুপ্রাণিত হবে, এমনটা আশা করি।’