জস বাটলার কি মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের তুড়ি মেরে সমালোচনা উড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারটা জানেন? না জানলে এখনই রপ্ত করে নিতে পারেন। কারণ ইংল্যান্ডকে সাদা বলে সবশেষ বিশ্বকাপ (টি-২০, ২০২২) জেতানো অধিনায়কে জশ বাটলারকে নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে সমালোচনা। এই ৩৪ বছর বয়সী ক্রিকেটারের অধীনে ইংলিশরা এবারের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমি ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হওয়ার পর-পরই শুরু হয়ে গিয়েছে সমালোচনা। বাটলারকে বিদায় করার পক্ষেও মত দিয়েছেন অনেকে।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে বিদায় ঘটে গেছে ইংল্যান্ডের। লাহোরে আফগানদের কাছে ৮ রানের এই হারের পর তোলপাড় শুরু হয়েছে ইংলিশ ক্রিকেটে। পরাজয়ের দায় অধিনায়ক বাটলারের ওপরেই চাপাচ্ছেন সাবেক ক্রিকেটাররা।

ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল আথারটন বিশ্বাস করেন অধিনায়ক হিসেবে বাটলারের দেওয়ার আর কিছুই নেই, সময় এখন পরিবর্তনের। আথারটন বলেন, “আমার মনে হয় অধিনায়ক হিসেবে তার সময় ফুরিয়েছে। ইংল্যান্ড নিজেদের বিচার করে আইসিসি ইভেন্ট দিয়ে। কিন্তু ইংল্যান্ড এ নিয়ে টানা তিনটি টুর্নামেন্ট বাজে কাটাল। ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে খুব বাজে খেলেছে। এরপর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হেরেছে। এখন তারা যে খেলাটা খেলেছে, সেটা আরও নিম্মমানের। কোনো কিছু কাজ না করলে কখনো কখনো পরিবর্তনের, অন্য কারও দায়িত্ব নেওয়ার কথা ভাবতে হয়। আমার মনে হয় বাটলারও এটা জানে।”

আরো পড়ুন:

১৩ বছর পর…

যে কারণে স্টার্ক নেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে 

শুধু এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি কিংবা আইসিসির অন্য বৈশ্বিক আসরে নয়, বাটলারের নেতৃত্বে সর্বশেষ চারটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজেও হেরে গেছে ইংল্যান্ড। এ কারণেই বাটলারের নেতৃত্ব নিয়ে জোরেশোরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভন জনপ্রিয় ইংলিশ পত্রিকা ‘টেলিগ্রাফ’-এ শঙ্কা প্রকাশ করে লিখেছেন, “ইংল্যান্ডের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে বাটলার টিকতে পারবেন না।”

আরেক সাবেক অধিনায়ক এবং ক্রিকেট বিশ্লেষক নাসের হুসেইন স্কাই স্পোর্টসে বলেন, “জস বাটলারকে আমি ব্যক্তি হিসেবে পছন্দ করি। ড্রেসিংরুমেও সে জনপ্রিয়। তবে জনপ্রিয় হওয়াটা তার কাজ নয়। তার কাজ ইংল্যান্ডের সাদা বলের ক্রিকেটকে এগিয়ে নেওয়া। আমি কখনোই অধিনায়ক বাটলারকে দেখে মুগ্ধতায় চমকে যাইনি। মরগানের মতো মাঠে তার সেই উপস্থিতিটা নেই। সবকিছু বিবেচনা করে আমার মনে হয়, তার সরে যাওয়াটাই শ্রেয়তর।”

যাকে নিয়ে এত আলোচনা, সেই বাটলার কী ভাবছেন নিজেকে নিয়ে? গতকাল ম্যাচ শেষে নেতৃত্ব বিষয়ক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে একটু ভাবা দরকার, আমি সমস্যার অংশ নাকি সমাধানের। আমি এখন এখানে আবেগতাড়িত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেব না। নিজেকে নিয়ে ভাবনার জন্য একটু সময় নেব, যেটা আমি মনে করি সঠিক এবং দায়িত্বের শীর্ষ যারা আছেন, তারাও নিজেদের মতামত দেবেন।”

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপিকে জাতীয় কনভেনশন ডাকার প্রস্তাব 

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ডিসেম্বরে অনুষ্ঠানের দাবিতে একমত পোষণ করেছে বিএনপি ও বাংলাদেশ লেবার পার্টি। ডিসেম্বরে নির্বাচন ধরে খুব দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ চায় দল দুটি। যুগপৎ আন্দোলনের জোট ও দলসহ ডান, বাম ও ধর্মভিত্তিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে সোমবার রাজধানীর গুলশানের বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে বিএনপি নেতাদের পৃথক বৈঠক হয়। বৈঠকে বিগত এক দফা দাবি ও শেখ হাসিনা সরকারের পতন আন্দোলনে যেসব রাজনৈতিক জোট ও দল রাজপথে ছিল তাদের নিয়ে বিএনপির কাছে একটি জাতীয় কনভেনশন ডাকার প্রস্তাব করেছে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও বাংলাদেশ লেবার পার্টি। তারা আশা করেন, বিএনপি তাদের প্রস্তাবে সাড়া দেবে। 

এই বৈঠকে বিএনপির পক্ষে নেতৃত্ব দেন দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের নেতৃত্ব দেন জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও এনপিপি’র চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির পক্ষে নেতৃত্ব দেন দলটির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। 

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ডিসেম্বরের বেশি অপেক্ষা করার কারণ আমরা দেখি না। এ ব্যাপারে যদি কেউ ভিন্নমত পোষণ করে তাহলে তাদের যুক্তি দিয়ে বলতে হবে, কেন এর বেশি সময় দরকার। সরকার বলেছে, ডিসেম্বর থেকে জুন। তার মানে কি? তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে পারে। আমরা বলেছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে- এটাকে ধরে একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক। সরকার বলছে যে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তার মানে তারা তো বলেনি, যে ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে না। কিন্তু আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে- এ রকম একটা তারিখ ধরে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক। পার্থক্য তো খুব বেশি না। সরকার বলেছে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে, তার মানে ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে পারে। 

বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের কথা অনুযায়ী নির্বাচন ডিসেম্বরে হতে পারে, জানুয়ারিতে হতে পারে, ফেব্রুয়ারিতেও হতে পারে। কাজেই আমাদের সঙ্গে সরকারের পার্থক্য তো বহু মাসের না। আমরা শুধু সরকারকে বলছি, এভাবে না বলে, এভাবে বলেন।

প্রশাসনের সব জায়গায় বিএনপির লোকজন বসে আছে, নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির পক্ষ থেকে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, যিনি এ কথা বলেছেন তিনিও তো সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। তাহলে তারা কি সব জায়গায় বিএনপির লোক বসিয়েছেন নাকি? 

বিএনপিকে তো প্রশাসন থেকে উৎখাত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময় কোথাও বিএনপির লোক ছিল না। যারা (আওয়ামী লীগের সময়) বৈষম্যের শিকার হয়েছিল, অন্যায়ভাবে যাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল, তাদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে থেকে একজনকেও এখনও পদায়ন করা হয় নাই। তাহলে বিএনপির লোককে বসানো হলো কোথায়? যাদের বঞ্চিত করা হয়েছে তাদের একজনকেও কেউ যদি পদায়ন করা হতো, তাহলে বলতে পারতেন বিএনপির লোক বসানো হয়েছে। তাহলে এই কথাটির যুক্তি কি জানতে চেয়ে তিনি বলেন, আপনারা তাদের জিজ্ঞাসা না করে আমাদের কেন জিজ্ঞাসা করেন? আপনারা জানেন না এসব? 

ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, শেখ হাসিনার পতন ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন দাবিতে আমরা আন্দোলন করেছি। ইতোমধ্যে আমরা একটি দাবিতে জয়ী হয়েছি। এখন কথা হচ্ছে নির্বাচনের বিষয়ে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে- জুনের মধ্যে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছে। সংস্কার কমিশনও বলেছে মে’র মধ্যে এসব শেষ করবে। আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন। কারণ, একটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার দরকার। এজন্য আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাই। এ জন্য আমরা চাই সরকার একটি রোডম্যাপ দিক। আমরা বিএনপির কাছে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একটা জাতীয় কনভেনশন ডাকার প্রস্তাব করেছি। আশা করি, বিএনপি তা বিবেচনা করবে। লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরানও বলেছেন, তারা জাতীয় কনভেনশন ডাকার প্রস্তাব করেছে বিএনপির কাছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ