কৌশলে ১৫ মাসের শিশুকে অপহরণ, ৯ দিন পর যেভাবে উদ্ধার
Published: 27th, February 2025 GMT
নেত্রকোনা যাওয়ার জন্য চট্টগ্রামের বটতলী রেলস্টেশনে এসেছিলেন ফাতেমা আক্তার। সঙ্গে ৫ বছর বয়সী কন্যা ও ১৫ মাস বয়সী শিশুপুত্র। ট্রেন না পেয়ে বোয়ালখালীর বাড়িতে ফেরার উপায় খুঁজছিলেন তিনি। স্টেশনেই পরিচয় দুলাল মিয়া নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি ওই নারীকে বোয়ালখালী পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নগরের বাকলিয়ার একটি বাড়িতে নিয়ে যান। সেখান থেকে ফাতেমার অগোচরে তাঁর শিশুপুত্রকে নিয়ে পালিয়ে যান। ফাতেমা বুঝতে পারেন অপহরণ করা হয়েছে তাঁর সন্তানকে।
অপহরণের ৯ দিন পর ফাতেমার শিশুপুত্রকে উদ্ধার করেছে র্যাব। গতকাল বুধবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। এর আগে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলার সদর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। শিশুটি উদ্ধারের সময় গ্রেপ্তার করা হয় মোরশেদ মিয়া নামের আরও একজনকে। তিনি ওই শিশুকে দুলালের কাছ থেকে কিনেছিলেন বলে জানায় র্যাব।
আজ বৃহস্পতিবার নগরের চান্দগাঁও এলাকায় র্যাব-৭–এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অপহরণের বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব-৭–এর অধিনায়ক লে.
লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম বলেন, ১৭ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী ফাতেমা আক্তার ৫ বছরের কন্যা ও ১৫ মাসের ছেলে রাব্বিকে নিয়ে বটতলী রেলওয়ে স্টেশনে যান। দুলাল মিয়া নামের একজনের সঙ্গে পরিচয়ের সুবাদে নেত্রকোনাগামী ট্রেনের সময়সূচি জানতে চান ফাতেমা। ট্রেন নেই জানালে দুলাল মিয়াকে বোয়ালখালীর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ করেন ওই নারী। দুলাল ওই নারীকে সন্তানসহ কোতোয়ালির বিভিন্ন এলাকায় ঘুরিয়ে রাতে বাকলিয়া থানার বাসুর কলোনি নামক জায়গায় একটি কক্ষ ভাড়া করে রাখেন। পরদিন ফাতেমার অগোচরে দুলাল মিয়া ১৫ মাসের শিশু রাব্বিকে নিয়ে পালিয়ে যান।
মাহবুব আলম বলেন, এ ঘটনায় ফাতেমার স্বামী বাদী হয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি বাকলিয়া থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-১৪ এবং র্যাব-৭ যৌথ অভিযান চালিয়ে দুলালকে গ্রেপ্তার করে। প্রবাসী মোরশেদ মিয়ার কাছে এক লাখ টাকার বিনিময়ে অপহৃত শিশুটিকে বিক্রি করেন দুলাল। মোরশেদ পাঁচ কন্যাসন্তানের জনক। ছেলেসন্তানের আকাঙ্ক্ষায় তিনি অপহরণকারী চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। এ কারণে তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার মো. দুলাল মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার শোলাবাড়ি এলাকার দুদু মিয়ার ছেলে এবং মোরশেদ মিয়া একই থানার শাখাইতি এলাকার ইজ্জত আলীর ছেলে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানায় লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ১৫ ম স এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে এবার ২ টেকনিশিয়ান ‘অপহরণ’
পাবর্ত্য জেলা খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি থেকে এবার একটি মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক কোম্পানির দুই টেকনিশিয়ানকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৯ এপ্রিল) উপজেলার ময়ুরখীল এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত টাওয়ার মেরামত করতে গেলে তাদের মোটরসাইকেলে আসা কয়েকজন সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে যায়।
রবিবার (২০ জানুয়ারি) মানিকছড়ি থানার ওসি শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল বলেন, “গত ২২ জানুয়ারি সন্ত্রাসী হামলায় একটি মোবাইল কোম্পানির ক্ষতিগ্রস্ত টাওয়ার মেরামত গিয়ে দুইজন টেকনিশিয়ান অপহরণ হয়েছেন বলে লোকমুখে শুনেছি। এখন পর্যন্ত টাওয়ার সংশ্লিষ্ট কেউই পুলিশ বা প্রশাসনকে অবহিত করেননি। লোকমুখে শোনা কথার সত্যতা নিশ্চিত করাও কঠিন। তারপরও আমরা খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছি।”
অপহৃতরা হলেন- মো. ইসমাইল হোসেন (৩৫) ও আব্রে মারমা (২৫)।
আরো পড়ুন:
বরগুনায় শ্রমিক লীগ নেতা ৯ মামলায় গ্রেপ্তার
আম গাছে ঝুলছিল নৈশপ্রহরীর লাশ
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গেল ২২ জানুয়ারি ভোরে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা, মানিকছড়ি ও মাটিরাঙা উপজেলার কয়েকটি মোবাইল টাওয়ার ভাঙচুর ও আগুনে জ্বালিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে সন্ত্রাসীরা। এরপর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত টাওয়ারের আওতায় থাকা কয়েক হাজার মোবাইল গ্রাহক সেবা বঞ্চিত।
শনিবার বিকেলে মানিকছড়ি উপজেলার ধর্মঘরস্থ (চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক সংলগ্ন) ময়ুরখীল বিলে থাকা একটি টাওয়ার মেরামত যান দুইজন টেকনিশিয়ান। মোটরসাইকেলে আসা সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে তাদের অপহরণ করে।
এর আগে, গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে সন্ত্রাসীরা। একইসঙ্গে তাদের বহনকারী গাড়ির চালককেও অপহরণ করা হয়।
অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ও পিসিপির চবি শাখার সদস্য রিশন চাকমা, চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী অলড্রিন ত্রিপুরা, একই বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমা ও প্রাণি বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো।
ঢাকা/রূপায়ন/মাসুদ