বিভাজন ভুলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ২০৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে গঠিত বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। গতকালের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার।

এদিকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন রিফাত রশীদ। তাকে কেন্দ্র করে বুধবার মারামারির ঘটনাটি ঘটে। রিফাত রশীদের জায়গায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল মাশনূনকে সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব মনোনীত করা হয়েছে এবং বেসরকারি ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নাঈম আবেদীনকে সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সংগঠক করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর‍ ক্যান্টিনের সামনে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে এসব বিষয়ে জানানো হয়। কমিটিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসার শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার, সদস্যসচিব জাহিদ আহসান, মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদাসসির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আবদুল কাদের, সদস্যসচিব মহির আলম, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাইম আবেদীনসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে মারামারির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরীকে প্রধান করে সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৌহিদ সিয়াম এবং সংগঠক ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নাঈম আবেদিনকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে জানিয়ে বাকের মজুমদার বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব। এটা কেন্দ্রীয় কমিটি। আমরা এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা কাউকে বাদ দিইনি। আর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রিফাত রশীদ পদত্যাগ করেছেন।

সদস্যসচিব জাহিদ আহসান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রাইভেটে কিংবা মাদরাসায় কে পড়ে এটা নিয়ে আমরা বিভাজন জুলাইয়ে করিনি। ফলে আমরা ছাত্রসংগঠনেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিভাজন করিনি।

এদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাঈম আবেদীন বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে এমন ভুল বুঝিয়ে এখানে আনা হয়েছিল। ভুল বোঝাবুঝির কারণে মব তৈরি হয়েছে। পরবর্তী সময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ জন কমিটিতে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি তাদেরকে জানানো হলে তারা বুঝতে পেরেছেন। গতকালকের ঘটনা নিয়ে আমরা জাতির কাছে দুঃখপ্রকাশ করছি।

আবু বাকের মজুমদার বলেন, আমরা লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি চাই না। আমাদের জুলাইয়ে নয় দফায়ও সেটি আমরা জানিয়েছি। আমাদের ছাত্রসংগঠন কখনও লেজুড়বৃত্তি করবে না। অনেক ছাত্রসংগঠনে অছাত্র হয়েও সংগঠনে থাকেন, শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রীয় সংগঠনে সর্বোচ্চ বয়স ২৮ বছর হবে। এ ছাড়া কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরে সাত বছর পর নেতৃত্বে আসতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করছি। এটা যেহেতু আহ্বায়ক কমিটি। এখানে হাজার লোক রাখা সম্ভব নয়। আহ্বায়ক কমিটি শুধুমাত্র কমিটি আহ্বান করবে, ইউনিটভিত্তিক কমিটি প্রস্তুত করবে। পরবর্তী কাউন্সিলের ভিত্তিতে কমিটি প্রস্তুত হবে।


এদিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক পদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নুরুল গণি সগীর এবং খান তালাত মাহমুদ রাফি, ঢাকা কলেজের জুবায়ের হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল করিম ও নুরনবী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেহেদী সজিব, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারাবী জিসান, ঢাকা আলিয়া মাদরাসার তুহিন আহমেদ মনোনীত হয়েছেন।

যুগ্ম সদস্যসচিব পদে সালাউদ্দিন আম্মার, সানজানা আফিফা অদিতি, আজিজুল হক, হাটহাজারী মাদরাসার আবরার কাউসার পদায়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া সহমুখপাত্র পদে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারদিন হাসানকে মনোনীত করা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণঅভ য ত থ ন সদস যসচ ব ব সরক র ম দর স ক কম ট র ঘটন স গঠন সদস য স গঠক

এছাড়াও পড়ুন:

কঙ্গোতে আগুন লেগে নৌকাডুবি, অন্তত ১৪৮ প্রাণহানি

মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক (ডিআর) কঙ্গোতে একটি ইঞ্জিনচালিত কাঠের নৌকায় আগুন লেগে ডুবে যাওয়ার ঘটনায় অন্তত ১৪৮ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কঙ্গো নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর রয়টার্সের।

ডিআর কঙ্গোর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, আগুন লাগার সময় নৌকাটিতে নারী ও শিশুসহ পাঁচ শতাধিক যাত্রী ছিলেন। পুলিশ ও উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এইচ বি কঙ্গোলো নামের সেই ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি মাতানকুমু বন্দর থেকে বোলোম্বা অঞ্চলের দিকে যাচ্ছিল। পথে এমবানদাকা এলাকায় পৌঁছানোর পর নৌকাটিতে আগুন ধরে যায় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিতে ডুবে যায়।

কঙ্গোর নদী পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কম্পেটেন্ট লোয়োকো অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, নৌকার ডেকে এক নারী রান্না চড়িয়েছিলেন। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত।

ডুবে যাওয়া সেই নৌকাটি থেকে প্রায় ১০০ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাদের মধ্যে যাদের আগুনে পোড়ার ক্ষত রয়েছে, তাদেরকে পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে।

কঙ্গোতে নৌকাডুবি বিরল কোনো দুর্ঘটনা নয়। কারণ গণপরিবহন হিসেবে সেখানে যেসব নৌকা ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর অধিকাংশই পুরনো ও ত্রুটিযুক্ত। আবার অনেক সময় ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী বা মালপত্র বোঝাই করে নৌকাগুলো।

২০২৪ সালে কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে কিভু হ্রদে একটি নৌকা ডুবে নিহত হয়েছিলেন ৭৮ জন। একই বছর ডিসেম্বরে পশ্চিমাঞ্চলে নদীতে নৌকাডুবে নিহত হন অন্তত ২২ জন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ