নারায়ণগঞ্জে শিক্ষার্থীদের ধর্ষণ বিরোধী বিক্ষোভ
Published: 27th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় নারী ও শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে তারুণ্যের’ ২৪ নামে একটি সংগঠন নারায়ণগঞ্জ কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনে আয়োজিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন তারুণ্যের '২৪-এর অন্যতম সংগঠক মৌমিতা নুর, এবং সঞ্চালনা করেন সংগঠক আবিদ রহমান।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন তারুণ্যের’ ২৪-এর নারায়ণগঞ্জ কলেজ শাখার সংগঠক অপূর্ব রায়, তাহমিদ আনোয়ার, ইসরাত জাহান মীম, আবদুল আহাদ এবং নারায়ণগঞ্জ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শেখ সাদী, শান্ত, রিপা, বর্ণালী, মাহির, ইব্রাহিমসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তারুণ্যের’ ২৪-এর অন্যতম সংগঠক মৌমিতা নুর বলেন, নারায়ণগঞ্জসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের অসামান্য ভূমিকা প্রত্যক্ষ করেছি, অথচ আজ নারীরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে পারে না। আমাদের মা-বোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যদি এই পরিস্থিতি পরিবর্তন না হয়, তাহলে আমরা আরও বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তুলবো।
আমরা দাবি জানাই, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল গঠন করা হোক। যতদিন ধর্ষণ বন্ধ না হবে এবং ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় না আনা হবে, ততদিন আমাদের লড়াই চলবে। আমরা চাই, ধর্ষকদের পাশাপাশি তাদের আশ্রয়দাতাদেরও জাতির সামনে উন্মোচন করা হোক।
আমাদের লড়াই নিজের নিরাপত্তার জন্য, অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। বেগম রোকেয়া ও প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার আমাদের শিখিয়ে গেছেন—লড়াই করে বাঁচতে হবে, অধিকার আদায় করতে হবে। যদি সরকার আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের পদত্যাগ করতে হবে। নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা আরও বড় কর্মসূচি ঘোষণা করবো এবং শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলবো।
তারুণ্যের’ ২৪ এর সংগঠক তাহমিদ আনোয়ার বলেন, আমরা এমন এক বাংলাদেশে বসবাস করছি, যেখানে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চরম আকার ধারণ করেছে। মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নেই। আমরা সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে জানতে চাই—এত ধর্ষণের ঘটনা ঘটার পরও কেন অপরাধীরা মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে? কেন এখনো তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? আমরা এও জানতে চাই, এই ধর্ষকদের পৃষ্ঠপোষক কারা? তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন পদক্ষেপ নিচ্ছে না কেন?
যদি অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা না হয়, তাহলে আমরা দেশের নারীদের নিয়ে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবো।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আম দ র স গঠক
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে সাবেক মন্ত্রী পুত্রের পিএস ও একাধিক মামলার পলাতক আসামি হিরা গ্রেফতার
নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর ছেলে, রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি গোলাম মতুর্জা পাপ্পার একান্ত সহকারী (পিএস) কামরুজ্জামান হিরাকে (৪৬) গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকার রমনা এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাকে গ্রেফতার করে রূপগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের জেষ্ঠ্য সহকারী পুলিশ সুপার ( গ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রূপগঞ্জে কামরুজ্জামান হিরা ছিল সাধারণ মানুষের জন্য মুর্তিমান আতঙ্কের নাম। গোলাম দস্তগীর গাজীর ছেলে গোলাম মর্তুজা পাপ্পার ছত্রছায়ায় কামরুজ্জামান হিরা রূপগঞ্জে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়, জমি দখলসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড চালাতো।
রূপগঞ্জের কিশোরগ্যাং চলতো তার নিয়ন্ত্রণে। হিরা কিশোর ও যুবক বয়সী ছেলেদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়াতে তাদের হাতে অস্ত্র ও মাদক তুলে দিতো। ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পল্টনে সাবেক মন্ত্রী গাজীর ব্যাবসায়িক কার্যালয়ে গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মোশারফ হোসেনের পেটে গুলি করে হিরা।
এ ঘটনায় পল্টনের তৎকালীন ওসি রফিকুল ইসলাম হিরাসহ চারজনকে গ্রেফতার করে। ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি ভুলতা এলাকার ডায়মন্ড ব্রিকস টাইলস প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজির সময় হিরাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ওই সময় মন্ত্রী গণমাধ্যমে প্রেস রিলিজ পাঠিয়ে হিরার সঙ্গে তাঁদের সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন। তবে কয়েকদিন কারাগারে থাকার পর জামিনে বের হয়ে আবারো হিরা তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাতে থাকে।
নিরীহদের জমিতে জোরপূর্বক বালু ভরাট, আবাসন ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, পরিবহণ চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি থেকে শুরু করে রূপগঞ্জে সকল সেক্টরের ছিল তার অবাধ বিচরণ। সাধারণ মানুষের কাছে হীরা কাচঁকাটা হিরা ও ডন হিরা নামেও পরিচিত। গত ৫ আগষ্টের পর থেকে হিরা পলাতক ছিল।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের জেষ্ঠ্য সহকারী পুলিশ সুপার (গ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম জানান, গোয়েন্দা পুলিশ হিরাকে গ্রেফতারের পর রূপগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছে। তার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনসহ বেশকয়েকটি মামলা রয়েছে। সে দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল।