লঞ্চ ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০
Published: 27th, February 2025 GMT
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার তমরদ্দি লঞ্চ ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপির দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে ভর্তি আহতরা হলেন- লায়লা বেগম (৩০), কামরুল ইসলাম (৩০), আকলিমা বেগম (২৫) ও নাফিসা বেগম (২৮)। এদের মধ্যে লায়লা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক শামীম উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে জেলা সদরে প্রেরণ করেন। আহত বাকীরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর বাড়িতে ফিরে যায়। তাদের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের সদস্যরা ঘটনাস্থরে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সূত্র জানায়, তমরুদ্দি লঞ্চ ঘাটের ইজারাদার ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মাওলা কাজল। ৫ আগস্টের পর গোলাম মাওলা কাজল ঘাট থেকে পালিয়ে যায়। পরে গোলাম মাওলা কাজলের সঙ্গে সমঝোতা করে স্থানীয় আলমগীর নামে একজন তমরদ্দি ঘাটের সকল কর্মকাণ্ড দখল করে নেন। একটা সমঝোতা করে নেয়। সেই থেকে আলমগীর ঘাটের দায়িত্ব এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। কিন্তু তমরুদ্দি ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি তানভীর হায়দার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঘাটটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে তানভীরের অনুসারীরা ঘাটের দখল নিতে দলবল নিয়ে লঞ্চ ঘাটে যায়। এ সময় তানভীরের লোকদেরকে লঞ্চ ঘাটে থাকা লোকজন ধাওয়া করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় ঘাটের পাশে থাকা শ্রমিকদের পরিবারের নারী পুরুষ সকলে এগিয়ে আসলে সংঘর্ষে নারীরাও জড়িয়ে পড়ে। সংবাদ পেয়ে উপজেলা সদর থেকে পুলিশ, নৌবাহিনী ও তমরদ্দি কোস্ট গার্ড লঞ্চঘাটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয় বিএনপি নেতা আলমগীর জানান, ঘাটের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে তিনি জানান, প্রতিদিনের ঘাট থেকে উপার্জনের ৪০ শতাংশ টাকা ইজারাদার গোলাম মাওলা কাজল নিয়ে যান। তিনি শুধু শ্রমিকদের দেখভাল করেন।
প্রতিপক্ষ তানভীর হায়দার জানান, আলমগীর ঘাটটি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে সমঝোতা করে ভোগ দখল করে আসছেন। ঘাট দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান।
এ ব্যাপারে হাতিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম জানান, তমরদ্দি ঘাট নিয়ে তানভীর গ্রুপের ও আলমগীর গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হয়। পুলিশ ও নৌবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ দখল পর স থ ত আলমগ র স ঘর ষ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানির মামলায় আরও দুই আসামি গ্রেপ্তার, মালামাল উদ্ধার
ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন ঢাকার আশুলিয়ার ধানশোনা এলাকার পলাশবাড়ীর মো. আলমগীর (৩৪) ও তাঁর ছোট ভাই রাজিব হোসেন (২১)। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট পাঁচজন গ্রেপ্তার হলো।
পুলিশ সুপার বলেন, আলমগীর হোসেনকে গতকাল সোমবার নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার সাধুরপাড়া গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আন্তজেলা ডাকাত দলের ‘মূলহোতা’। এর আগে এই ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিত টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে পাঁচ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদকালে তাঁর দেওয়া তথ্যানুযায়ী গতকাল সোমবার দুপুরে আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে বাস ডাকাতির সময় লুট করা নগদ ৪ হাজার ২১০ টাকা ও দুটি রুপার আংটি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর আলমগীর পুলিশকে জানান, বাসে ডাকাতির সময় লুট করা মুঠোফোন, গয়না ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ছুরি তাঁর ছোট ভাই রাজিবের কাছে রয়েছে। পরে সোমবার সন্ধ্যায় আলমগীরকে সঙ্গে নিয়ে আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে রাজিব হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ডাকাতি করা ১০টি মুঠোফোন, ইমিটেশনের গয়না, তিনটি ব্যাগ, তিনজন যাত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ডাকাতিতে ব্যবহৃত দুটি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুনচলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় তিন দিন পর মামলা২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫পুলিশ সুপার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আলমগীরকে সাত দিনের ও রাজিবকে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে। আলমগীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ডাকাতিকালে ধর্ষণের ঘটনার কোনো তথ্য এখনো তাঁদের কাছে আসেনি। তবে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। তারপরও কোনো তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুনচলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানি: লুট করা মুঠোফোনের বিনিময়ে গাঁজা কেনেন আসামিরা২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ইউনিক রোড রয়েলসের আমরি ট্রাভেলস নামে বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে ৩০–৩৫ জন যাত্রী নিয়ে বাসটি রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে যাত্রীবেশী ৮–৯ জন ডাকাত অস্ত্রের মুখে বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বাসটিকে বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে যাত্রীদের টাকাপয়সা, মালামাল নিয়ে নেয়। এ সময় তারা নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানিও করে। ঘটনার তিন দিন পর ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে মির্জাপুর থানায় ওমর আলী নামের এক যাত্রী বাদী হয়ে মামলা করেন।
আরও পড়ুনচলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: টাঙ্গাইলে চারজনকে গ্রেপ্তার২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনচলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজন স্বীকারোক্তি দেবেন: পুলিশ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনচলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: টাঙ্গাইলে চারজনকে গ্রেপ্তার২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫