নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার তমরদ্দি লঞ্চ ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপির দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে ভর্তি আহতরা হলেন- লায়লা বেগম (৩০), কামরুল ইসলাম (৩০), আকলিমা বেগম (২৫) ও নাফিসা বেগম (২৮)। এদের মধ্যে লায়লা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক শামীম উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে জেলা সদরে প্রেরণ করেন। আহত বাকীরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর বাড়িতে ফিরে যায়। তাদের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের সদস্যরা ঘটনাস্থরে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সূত্র জানায়, তমরুদ্দি লঞ্চ ঘাটের ইজারাদার ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মাওলা কাজল। ৫ আগস্টের পর গোলাম মাওলা কাজল ঘাট থেকে পালিয়ে যায়। পরে গোলাম মাওলা কাজলের সঙ্গে সমঝোতা করে স্থানীয় আলমগীর নামে একজন তমরদ্দি ঘাটের সকল কর্মকাণ্ড দখল করে নেন। একটা সমঝোতা করে নেয়। সেই থেকে আলমগীর ঘাটের দায়িত্ব এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। কিন্তু তমরুদ্দি ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি তানভীর হায়দার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঘাটটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।

এদিকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে তানভীরের অনুসারীরা ঘাটের দখল নিতে দলবল নিয়ে লঞ্চ ঘাটে যায়। এ সময় তানভীরের লোকদেরকে লঞ্চ ঘাটে থাকা লোকজন ধাওয়া করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় ঘাটের পাশে থাকা শ্রমিকদের পরিবারের নারী পুরুষ সকলে এগিয়ে আসলে সংঘর্ষে নারীরাও জড়িয়ে পড়ে। সংবাদ পেয়ে উপজেলা সদর থেকে পুলিশ, নৌবাহিনী ও তমরদ্দি কোস্ট গার্ড লঞ্চঘাটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ বিষয় বিএনপি নেতা আলমগীর জানান, ঘাটের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে তিনি জানান, প্রতিদিনের ঘাট থেকে উপার্জনের ৪০ শতাংশ টাকা ইজারাদার গোলাম মাওলা কাজল নিয়ে যান। তিনি শুধু শ্রমিকদের দেখভাল করেন।

প্রতিপক্ষ তানভীর হায়দার জানান, আলমগীর ঘাটটি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে সমঝোতা করে ভোগ দখল করে আসছেন। ঘাট দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে হাতিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম জানান, তমরদ্দি ঘাট নিয়ে তানভীর গ্রুপের ও আলমগীর গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হয়। পুলিশ ও নৌবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ দখল পর স থ ত আলমগ র স ঘর ষ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

‘ছেলে একদিন দেশের জন্য ভালো কিছু করবে’

আলমগীর-সুমাইয়ার বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট এলাকার রাজরামপুর গ্রামে। তাদের বড় ছেলের নাম ইমতিয়াজ হোসেন। তার বয়স ৭ বছর। বড় ছেলের নামের সাথে মিল রেখেই ছোট ছেলের নাম রাখা হবে বলে ভেবে রেখেছেন মা। তবে, নাম এখনো ঠিক করা হয়নি। এই শিশুকে হাফেজ বানাতে চান বাবা। 

নবজাতকের জন্মানোর সম্ভাব্য সময় ছিল আজ ১৭ এপ্রিল। তবে রোববার রাতে হঠাৎ করে প্রসব বেদনা ওঠে সুমাইয়ার। তখন তড়িঘড়ি করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর স্বামী। তাদের বাড়ি থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ২৭ কিলোমিটার। এই পথ পাড়ি দিয়ে রাত ১টার দিকে তাকে হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। তখন নবজাতকের বাবা-মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে আসেন সুমাইয়ার মামি ও আলমগীরর মামি। তারা সারা রাত জেগে থেকে নবজাতকের মায়ের সেবা করেছেন তারা। আর নবজাতকের বাবা সারারাত চিন্তায় হাসপাতালের বারান্দায় পায়চারি করেছেন। কারণ ডেলিভারির সম্ভাব্য তারিখের আগে ব্যাথা শুরু হওয়ায় ঘাবড়ে গিয়েছিলেন তিনি। এভাবেই রাত কেটে যায় তার। পরদিন সকাল ৮টা ২০ মিনিটে শিশুটির জন্ম হয়। শিশুটি পৌনে তিন কেজি ওজন নিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়। তার স্বাস্থ্য ভালো হওয়ায় পরিবারের লোকজন দারুণ খুশি। কোনো ধরনের অপারেশন ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেয় শিশুটি। নবজাতকের বাবা আলমগীর পেশায় একজন টালি মিস্ত্রী। সুমাইয়া গৃহিনী।  ৮ বছর আগে তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। 

নবজাতককে দেখে সবচেয়ে খুশি হয় তার বড়ভাই ইমতিয়াজ। কিছুক্ষণ পরপর মায়ের কাছে আবদার করে যেন ছোটভাইকে তার কোলে দেওয়া হয়। কোলে তুলে নেওয়ার পরই সে ভাইকে আদর করতে থাকে।

মোসাম্মৎ সুমাইয়া উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘গর্ভবতী থাকার পুরো সময়টাই আমি সুস্থ ছিলাম। আমার প্রথম সন্তানও স্বাভাবিকভাবে হয়েছে। দ্বিতীয় সন্তানও স্বাভাবিকভাবে পৃথিবীতে আসলো। আজকে বছরের প্রথম দিনে আমার সন্তান জন্মেছে, আবার আজকে হাসপাতালে জন্মানো প্রথম শিশুও আমার ছেলে। এই বিষয় জানার পর খুশি লাগছে। বড় ছেলে ইমতিয়াজের নামের সাথে মিল রেখে ছোট ছেলের নাম রাখব। যেহেতু আগে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে তাই বাচ্চা পেটে থাকলে কিভাবে চলতে হবে তার নিয়ম কানুন আগেই জানা ছিল। তাছাড়া পাশেই একটি ক্লিনিকে একজন গাইনি ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়েছি। ছেলে একদিন দেশের জন্য ভালো কিছু করবে এ আশাই করি।’

আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমার ঘর আলো করে আবারও দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয়েছে। আমার দুই সন্তানকে মানুষের মতো করে বড় করতে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। সন্তানকে হাফেজ বানাতে চাই। ছেলের মায়ের স্বাস্থ্য ভালোই ছিল। ভালোভাবেই খাওয়া দাওয়া করতে পারত। তেমন কোনো আশঙ্কা ছিল না।’ সমকালের পক্ষ থেকে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানানোয় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
আলমগীরের মামি আলেয়া বেগম নবজাতককে প্রথম কোলে নেন। তিনি বলেন, ‘আজকে পহেলা বৈশাখে আমার নাতি জন্মেছে। বছরের প্রথম দিনে শিশু জন্মেছে, তাই আনন্দ লাগছে। নাতিকে প্রথম কোলে নেওয়ার পর মন প্রশান্তিতে ভরে গেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসুন সবাই ড. ইউনূসকে সাহায্য করি: ফখরুল
  • প্লাস্টিক বোতল দিয়ে ‘শখের বাড়ি’ নির্মাণ করেছেন আলমগীর হোসেন
  • ভাইকে কোলছাড়া করতেই চাচ্ছে না ইমতিয়াজ
  • ‘ছেলে একদিন দেশের জন্য ভালো কিছু করবে’