বিসমিল্লাহ গ্রুপের এমডি-চেয়ারম্যানসহ আট জনের ১২ বছরের কারাদণ্ড
Published: 27th, February 2025 GMT
অর্থপাচারের মামলায় বিসমিল্লাহ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খাজা সোলেমান আনোয়ার চৌধুরী এবং তার স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান নওরীন হাবিবসহ আট জনকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত অপর আসামিরা হলেন—সোলেমানের বাবা সফিকুল আনোয়ার চৌধুরী, বিসমিল্লাহ গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আকবর আজিজ মুতাক্কি, মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবুল হোসেন চৌধুরী, ব্যবস্থাপক রিয়াজ আহম্মেদ উদ্দিন শাফি, নেটওয়ার্ক ফ্রেইট সিস্টেম লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো.
কারাদণ্ডের পাশাপাশি মানিলন্ডারিংয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ১২৪ কোটি ৪২ লাখ ৯৪ হাজার ৯৫ টাকার দ্বিগুণ অর্থাৎ ২৪৮ কোটি ৮৫ লাখ ৮৮ হাজার ১৯০ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে অর্থদণ্ডের টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তা না দিলে তাদের আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে।
উল্লিখিত ব্যক্তিরা পলাতক আছেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
এদিকে, দণ্ডিতদের নামে থাকা সব ধরনের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
যমুনা ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মু. মোর্শেদুর রহমান এবং এস এম জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তারা খালাস পেয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী সোহানুর রহমান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, খাজা সোলেমান আনোয়ার চৌধুরীসহ অন্য আসামিরা ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড খাতে মোট ১৩২ কোটি ৭৭ লাখ ১৭ হাজার টাকা অপরাধলব্ধ আয় করেন। খাজা সোলেমান আনোয়ার চৌধুরীসহ সঙ্গীয় আসামিরা ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড খাতে অর্জিত অপরাধলব্ধ আয়ের মধ্যে ১৩২টি এলসির বিপরীতে ১২৯ দশমিক ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার দেশে প্রত্যাবাসন না করে রপ্তানির আবরণে পাচার করেছেন।
এ ঘটনায় দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক আল-আমিন মতিঝিল থানায় ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর মামলাটি দায়ের করেন। মামলা তদন্ত করে ২০১৫ সালের ১৭ জুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। ওই বছরের ৩০ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করা হয়।
ঢাকা/মামুন/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শতবর্ষী রাস্তার ওপর সবজি চাষ আওয়ামী লীগ নেতার
চারঘাটের সরদহ ইউনিয়নের খোর্দগোবিন্দপুর মাঠপাড়ার গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে শত বছর ধরে গ্রামের মানুষ চলাচল করছেন। রাস্তাটি পাকা করতে দরপত্রও করা হয়েছে। সেই রাস্তার জমি নিজের দাবি করে পটোল রোপণ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সমজান আলী। এতে মানুষের চলাচল ও মাঠের ফসল পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এক যুগে কয়েক দফা কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় শতবর্ষী মাটির রাস্তাটির সংস্কার করা হয়। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ থেকে রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দরপত্র হয়েছে। এর মধ্যে পাশের জমির মালিক সমজান আলী শ্রমিক দিয়ে রাস্তা কেটে ফসলি জমি বানিয়েছেন। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হলেও গত পাঁচ আগস্টের পর থেকে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনের সঙ্গে চলাফেরা করছেন।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, দৈর্ঘ্যে ১২০ ফুট ও প্রস্থে ৪ ফুট অংশ কেটে নিজের জমির সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন সমজান আলী। সেখানে পটোল রোপণ করা হয়েছে। ১৩ ফুট প্রস্থের সড়ক থেকে আরও ৪ ফুট কেটে নেওয়া হবে বলে স্থানীয়দের জানিয়েছেন তিনি। এ অবস্থায় প্রকৌশল বিভাগের রাস্তা পাকাকরণ কাজ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। স্থানীয়রা বাধা দিলেও রাস্তা কাটা বন্ধ না করে উল্টো হুমকি দেন সমজান আলী।
স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব রেজাউল করিম বলেন, রাস্তাটি পাকাকরণের দরপত্র হয়েছে। এখন সেই রাস্তার বেশির ভাগ অংশ নিজের দাবি করে কেটে ফেলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সমজান আলী।
নাইমুর রহমান বলেন, বাবা-দাদা সবাই এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেছেন। এখন শত শত মানুষের চলাচল। মাঠপাড়ার ফসল ভ্যান, ট্রলি ও মিনি ট্রাকে করে এই রাস্তা দিয়ে বাজারে নেওয়া হয়। কাউকে কিছু না জানিয়ে রাস্তাটি কেটে ফেলা হলো। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।
সমজান আলী বলেন, রাস্তার বেশির ভাগ অংশই আমার জমিতে। এ জন্য কিছু অংশ কেটে নিয়েছি। শুধু আমি রাস্তায় জমি দেব– তা হবে না। অন্যদেরও দিতে হবে। জমির কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি বলেন, কাগজপত্র এখন কাছে নেই। তবে স্থানীয় আমিন সুবল চন্দ্র ছয় মাসে দুই দফা জমি পরিমাপ করেছে। মাপ অনুযায়ী রাস্তার বেশির ভাগ অংশ আমার জমিতে পড়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
স্থানীয় আমিন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র বলেন, জমিটি দেড় থেকে দুই বছর আগে পরিমাপ করেছি। কিছু অংশ রাস্তার ভেতরে ছিল। রাস্তাটি এখন সরকারি সম্পদ। তাই সমজান আলী জমি নিতে পারবে না– এ তথ্য তাঁকে জানানো হয়েছিল।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন বলেন, কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য শুনানির নোটিশ করা হয়েছে। কাগজপত্র নিয়ে সমজান আলীকে আসতে বলা হয়েছে। তবে কোনো জমি ব্যক্তির সম্পত্তি হলেও ২০ বছর সেখানে মানুষজন হাঁটলেই তা সরকারি হয়ে যাবে।