যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি কর্মীকে ছাঁটাইয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের চিঠি, কেন্দ্রীয় কর্মীদের বিক্ষোভ
Published: 27th, February 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন আরও বেশি করে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। গতকাল বুধবার এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
এমনিতেই ট্রাম্প–ঘনিষ্ঠ ইলন মাস্কের তথাকথিত ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডিওজিই) কর্তৃক ছাঁটাই ও বিভিন্ন কর্মসূচিতে কাটছাঁটের কারণে কেন্দ্রীয় কর্মীরা বিপর্যস্ত। এর মধ্যে আবার কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় জনবল উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কমানো–সংক্রান্ত পরিকল্পনাগুলো আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে দাখিল করতে বলা হয়েছে। নতুন ছাঁটাইয়ের সংখ্যা কত হবে, তা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি।
চিঠিটি মার্কিন সরকারের জনবল কমানোর জন্য ট্রাম্প ও মাস্কের ব্যাপক তৎপরতাকেই প্রতিনিধিত্ব করছে।
এখন পর্যন্ত মূলত শিক্ষানবিশ কর্মী, যাঁদের বর্তমান পদের মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে ও চাকরির সুরক্ষাও কম, তাঁদের ছাঁটাইয়ের লক্ষ্যবস্তু করতে দেখা গেছে। পরবর্তী দফায় অভিজ্ঞ সরকারি কর্মচারীদের বিশাল সংখ্যক কর্মীকে লক্ষ্য করে ছাঁটাই চালানো হবে।
মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ট্রাম্প বলেছেন, এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সির প্রশাসক লি জেলডিন তাঁর ১৫ হাজারের বেশি কর্মীর মধ্য থেকে ৬৫ শতাংশ কর্মীকে ছাঁটাই করার পরিকল্পনা করছেন। এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সি হলো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পরিবেশ সুরক্ষাবিষয়ক স্বাধীন সংস্থা।
গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, ইউএস ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস ও ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান অ্যাফেয়ার্সকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কর্মী ছাঁটাইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেশটির ২৩ লাখ বেসামরিক ফেডারেল কর্মীর মধ্যে প্রায় এক লাখ কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে কিংবা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
ট্রাম্প মাস্ককে রাষ্ট্রপতির মন্ত্রিসভায় তাঁর কাজ প্রচারের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে একটি অসাধারণ সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছেন, যাঁদের মধ্যে কেউ কেউ তাঁর সাম্প্রতিক দাবি থেকে সরে এসেছেন যে তাঁদের সব কর্মচারী তাঁদের কাজকে ন্যায্যতা দেবেন, অন্যথায় চাকরিচ্যুত হবেন।
মাস্ক মন্ত্রিসভা স্তরের কোনো কর্মকর্তা নন। মার্কিন সিনেটের তাঁকে অনুমোদন দেওয়া–সংক্রান্ত কোনো ভোটাভুটিও হয়নি। সম্প্রতি আদালতে জমা দেওয়া কাগজপত্রে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, মাস্ক ডিওজিইর দায়িত্বে নেই। যদিও ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ও মাস্ক ডিওজিইর কর্মীদের সহায়তা করেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কর্মীদের ব্যাপক হারে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে গতকাল মার্কিন সিনেটের হলগুলোয় ফেডারেল কর্মীদের বিক্ষোভ হয়েছে। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী মার্কিন সিনেট হলের মধ্য দিয়ে হেঁটে যান এবং তাঁদের ক্ষোভের বার্তা জানিয়ে দেন।
ব্যস্ত হলগুলো বন্ধ না করার জন্য বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করেন নিরাপত্তাকর্মীরা। এরপর ফেডারেল কর্মীরা মেজরিটি লিডার জন থুনসহ কয়েকজন রিপাবলিকান সিনেটরের কার্যালয়ে গিয়ে তাঁদের হতাশা প্রকাশ করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ম দ র মন ত র কর ম ক র জন য কর ম র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
এয়ারক্রাফট রক্ষণাবেক্ষণে সর্বোচ্চ সক্ষমতার যুগে বিমান
এয়ারক্রাফটের রক্ষণাবেক্ষণ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সক্ষমতার যুগে প্রবেশ করছে রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এখন আর প্রয়োজন হচ্ছে না বিদেশি ইঞ্জিনিয়ারের। ফলে অর্থ সাশ্রয়ের আলো দেখছে বিমান কর্তৃপক্ষ। এরইমধ্যে দীর্ঘ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বোয়িং-৭৩৭ মডেলের মতো আধুনিক মানের একটি এয়ারক্রাফটের ডি-চেক এবং ফুয়েল ট্যাংকের সংযোজনসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে দক্ষ বিমান কর্মীরা বলে বিমান সংশ্লিষ্টরা জানান।
তারা বলেন, এরমধ্য দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত এ উড়োজাহাজ সংস্থায় দক্ষ জনবল তৈরির পাশাপাশি সাশ্রয় হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আধুনিক মানের যে কোনো ধরণের এয়ারক্রাফটের ইঞ্জিন রক্ষণাবেক্ষণসহ যাবতীয় কাজ সফল ভাবে করতে এখন আর প্রয়োজন হচ্ছে না বিদেশি কোনো ইঞ্জিনিয়ারের। এর ফলে মেরামতের জন্য এখন আর বিদেশে নিতে হবে না বিমানের কোনো এয়ারক্রাফট।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের দাবি, নিজস্ব সক্ষমতায় দেশেই এখন বোয়িং ৭৩৭ এর মতো আধুনিক মানের এয়ারক্রাফটের ডি-চেক সফলভাবে সম্পন্ন করতে দক্ষ জনবল রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে। সম্প্রতি জাতীয় পতাকাবাহী এ বিমান সংস্থাকে নিয়ে বর্তমান সরকারের উচ্চ মহলে নানা আলোচনা–সমালোচনা থাকলেও যাত্রী সেবার মান বিশ্বের নামি–দামি এয়ারলাইন্সের চেয়ে কোনো অংশ কম নয় বিমানের। উন্নত যাত্রীসেবা, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ও এয়ারক্রাফট রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল গড়ে উঠেছে বিমানে।
জানা যায়, বিমানের দুই যুগ পুরনো বোয়িং-৭৩৭ মডেলের একটি উড়োজাহাজের (এস-২ এএফএম) ‘ডি-চেক পুরোপুরি সম্পন্ন করছে নিজেদের দক্ষ জনবল দ্বারা। নিজেদের এ ব্যাপক কর্মযজ্ঞ, প্রচেষ্টা আর অর্থ সাশ্রয়ের কথা জানায় বিমান কর্তৃপক্ষ। তারা বলেন, বিদেশের বদলে দেশেই এখন এয়ারক্রাফটের ডি-চেক সফলভাবে সম্পন্ন করে বিপুল অর্থ সাশ্রয় করছে দক্ষ জনবল। এর আগে এয়ারক্রাফটের সি–চেক সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করে দক্ষ বিমান কর্মীরা।
এ ব্যাপারে বিমানের প্রকৌশল শাখার কয়েক কর্মকর্তা জানান, প্রায় পাঁচ মাস ধরে বোয়িং ৭৩৭ এর মতো আধুনিক মানের এয়ারক্রাফটের ডি–চেক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল একদল কর্মকর্তা–কর্মচারী। প্রায় ৫ মাস অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এয়ারক্রাফটের ডি–চেক সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হন তারা। বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট পরিদপ্তর নিজস্ব সক্ষমতায় বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফটের এ চেক সফলভাবে সম্পন্ন করে প্রায় ২ মিলিয়ন ইউএস ডলার সাশ্রয় হয়েছে বিমানের।
এ ব্যাপারে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. মো. সাফিকুর রহমান সমকালকে বলেন, দিনদিন দক্ষ জনবল বাড়ছে বিমানে। পাশাপাশি উন্নত হচ্ছে যাত্রীসেবার মান। নিজস্ব জনবলের মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণসহ এয়ারক্রাফটের যাবতীয় কাজ করছে বিমানের দক্ষ প্রকৌশল বিভাগ। শুধু তাই নয় ৭৩৭ আধুনিক মানের এয়ারক্রাফটের মতো ইঞ্জিনের রক্ষণাবেক্ষণের কাজও। এরইমধ্যে এসব কাজের সফলতা অর্জন করছে বিমানের প্রকৌশল শাখার দক্ষ কর্মকর্তা–কর্মচারীরা।
তিনি বলেন, এয়ারক্রাফটের ডি–চেকসহ যাবতীয় কাজ এখন বিমানের হ্যাঙ্গারেই করা সম্ভব হচ্ছে। এ কাজে বিমানে রয়েছে দক্ষ জনবল। উন্নত যাত্রী সেবায় বিশ্বের উন্নত এয়ারলাইন্সের চেয়ে কোনো অংশে কম নেই বিমানে।
বিমানের সিইও আরও বলেন, যাত্রীদের জন্য চলতি বছরই বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ চালু করছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল। এ টার্মিনাল চালুর শুরুতেই ২ বছর গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দিবে বিমান। এ লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে বিমানে। এরইমধ্যে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতিসহ উন্নতমানের বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট বিদেশ থেকে ক্রয় করা হয়েছে। পাশাপাশি নিয়োগ করা হচ্ছে দক্ষ জনবল।
বিমান কর্মকর্তারা বলেন, বিমানবন্দর থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবারমান উন্নত হলে পর্যায়ক্রমে এ কাজ ফের পাবে বিমান। এ চিন্তা মাথায় রেখে কাজ করছে বিমান।