দর্শক-শ্রোতাকে চমকে দেওয়ার মন্ত্র ভালোভাবেই রপ্ত করে ফেলেছেন পারশা মাহজাবীন। না, কথাটা একদম বাড়িয়ে বলা হয়নি। প্রমাণ চাইলে সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘ঘুমপরী’ ওয়েব সিনেমাটি দেখে নিতে পারেন। তাহলেই বুঝে যাবেন উষা চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে কীভাবে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন পারশা। কারণ, এক বছর আগে ‘লাভ লাইন’ নাটকে দেখা অনন্যা চৌধুরীর সঙ্গে ‘ঘুমপরী’ সিনেমার উষাকে কোনোভাবেই মেলানো যাবে না। একই অবয়ব, তবু ভিন্ন দুই চরিত্র পারশাকে পর্দায় তুলে এনেছে দুইভাবে।

 এ বিষয়ে কৃতিত্ব যতটা না নিজের, তারচেয়ে বেশি অবদান পরিচালক জাহিদ প্রীতমের বলে উল্লেখ করেন পারশা। একই সঙ্গে চরিত্র বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার বিষয়ে দুই সহশিল্পী প্রীতম হাসান ও তানজিন তিশার সহযোগিতার কথা বলতেও দ্বিধা করেন না এই অভিনেত্রী।

 তাঁর কথায়, ‘‘ছোটবেলায় থিয়েটার করেছি বলেই অভিনয় দারুণভাবে রপ্ত করা শিখেছি, বিষয়টা এমন না। সত্য এটিই, অভিনয়ে আমার তেমন কোনো শিক্ষা নেই। যতটুকু শেখার সুযোগ হয়েছে তা শুটিং সেটে পরিচালকের নির্দেশ মেনে আর সহশিল্পীদের দেওয়া সাহস ও সহযোগিতায়। ‘ঘুমপরী’ ওয়েব সিনেমায় অভিনয়ের বেলায়ও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’’

 পারশার এ কথা থেকে বোঝা গেল, কীভাবে পারশা ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে এত সহজে চরিত্রের সঙ্গে মিশে যেতে পেরেছেন। তারপরও একটু খটকা লাগে এটি ভেবে, অভিনয় সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা কিংবা অভিনীত চরিত্র আত্মস্থ করে নেওয়ার চেষ্টা না থাকলে কীভাবে তা দর্শককে বিশ্বাস করানো যায়? সে প্রশ্ন করতেই পারশা জানালেন, ‘অভিনয়ের প্রতি ভালোলাগা ছোটবেলা থেকে। যদিও অভিনেত্রী হওয়ার বাসনায় নিজেকে তৈরি করে নেওয়ার সুযোগ ততটা পাইনি, তবে নানা বিষয় ও ঘটনা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করেছি। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা, জীবনধারা, পরিবেশভেদে মানুষের চিন্তাধারা বদলে যাওয়া– এসব নিয়ে অনেক ভেবেছি। যার কিছু বিষয় আমার গানেও উঠে এসেছে। হয়তো এগুলোই আমার অভিনেত্রী সত্তাকে জাগিয়ে তুলতে সাহায্য করেছে। বাকি ছিল শুধু অভিজ্ঞতা; যা মডেলিং, গানের সঙ্গে পারফরম্যান্স এবং টিভি নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে একটু একটু করে বেড়ে চলেছে।’ পারশার এ কথা থেকে বোঝার বাকি থাকে না, অভিনেত্রী হিসেবে দর্শক মনোযোগ কেড়ে নেওয়ার মন্ত্রটা তিনি কীভাবে রপ্ত করেছেন। 

অভিনয় ছেড়ে এবার প্রসঙ্গ গানের বিষয়ে। কারণ গানই পারশাকে বিনোদন দুনিয়ায় বড় পরিচিতি এনে দিয়েছে। বিশেষ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় তাঁর গাওয়া ‘ভুলে যাই আমি’ তরুণ এই শিল্পীর পরিচিতি দেশের প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে দিয়েছে। এই গানের আগে ও পরে আরও কিছু গান গেয়ে শ্রোতার মনে আনুরণ তুলে গেছেন তিনি। এ কারণে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, অভিনেত্রী পরিচয় গড়ে ওঠার কারণে কণ্ঠশিল্পী পারশা হারিয়ে যাবেন কিনা? এর উত্তরে পারশা হেসে বলেন, ‘একদমই না। গান গাওয়া, অভিনয়, ছবি আঁকাসহ যা কিছু ভালো লাগে সবই চালিয়ে যাব। খ্যাতির মোহে নয়, যেটাই করব, তার পেছনে লক্ষ্য থাকবে একটাই, দেশ ও দেশের মানুষকে ভালো কিছু উপহার দেওয়া।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে কত টাকা পাচ্ছে বাংলাদেশ

শিরোপা জয়ের স্বপ্ন নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসরে অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পরপর দুই ম্যাচে পরাজয়ের ফলে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই বিদায় নিশ্চিত হয় টাইগারদের। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে সান্ত্বনার জয় পাওয়ার সুযোগ থাকলেও বৃষ্টির কারণে সেটিও পরিত্যক্ত হয়। এই ম্যাচের পর ‘এ’ গ্রুপে এক পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থেকে আসর শেষ করেছে বাংলাদেশ। সমান এক পয়েন্ট পেলেও নেট রানরেটে পিছিয়ে থাকায় পয়েন্ট তালিকার একেবারে তলানিতে অবস্থান করছে স্বাগতিক পাকিস্তান। অন্যদিকে, ভারত ও নিউজিল্যান্ড চার পয়েন্ট করে নিয়ে শীর্ষ দুইটি স্থান দখল করেছে।

টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ের পর বাংলাদেশ ঠিক কত অর্থ পাচ্ছে, সেটি নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য আইসিসি মোট ৬.৯ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৮৪ কোটি টাকা) প্রাইজমানি বরাদ্দ করেছে। প্রতিটি দল অংশগ্রহণের জন্য পেয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার (প্রায় ১ কোটি ৫১ লাখ টাকা)। এছাড়া, গ্রুপপর্বে প্রতিটি ম্যাচ জয়ের জন্য বরাদ্দ ছিল ৩৪ হাজার ডলার (প্রায় ৪১ লাখ টাকা)। তবে বাংলাদেশ কোনো ম্যাচ না জেতায় জয়সংক্রান্ত বোনাস পায়নি।

বাংলাদেশ নিজেদের গ্রুপে তৃতীয় স্থানে থেকে আসর শেষ করায় সপ্তম কিংবা অষ্টম স্থানে অবস্থান করলে পাবে ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার (প্রায় ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা)। সব মিলিয়ে টাইগারদের আয় দাঁড়াতে পারে ৩-৫ কোটি টাকার মধ্যে। এর মধ্যে ইংল্যান্ড যদি দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে যায় তাহলে বাংলাদেশ ছয়েও চলে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের পুরস্কারের পরিমানও বেড়ে যাবে। প্রাইজমানি হিসেবে ৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার বা প্রায় ৪ কোটি ২২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা পেতে পারে বাংলাদেশ।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য বরাদ্দ করেছে ২২ লাখ ৪০ হাজার ডলার (প্রায় ২৭ কোটি টাকা), আর রানার্সআপ দল পাবে ১১ লাখ ২০ হাজার ডলার (প্রায় ১৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা)। সেমিফাইনালে বিদায় নেওয়া দুই দল পাবে ৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার (প্রায় ৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা) করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ