শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দাবিতে হার্ট ফাউন্ডেশনের ম্যারাথন
Published: 27th, February 2025 GMT
জিয়া উদ্যানের সামনের সড়কে বৃহস্পতিবার ‘শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দাবি’ শীর্ষক একটি মিনি ম্যারাথন আয়োজন করেছে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ। এতে দুই শতাধিকজন অংশগ্রহণ করেন।
ম্যারাথনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে প্রতিবছর দেশে প্রায় ১ লক্ষ ৬১ হাজার জন অকালে মারা যায়। তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় বছরে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে শক্তিশালী করা হলে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু ও চিকিৎসা ব্যয় কমে যাবে।
হার্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা.
অনুষ্ঠানে বলা হয়, দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের ৩৫.৩ শতাংশ তামাক ব্যবহার করে, যার ১৮ শতাংশ ধূমপান এবং ২০.৬ শতাংশ ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য সেবন করে। ১৩-১৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ৬.৯ শতাংশ তামাক ব্যবহার করছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাস্থ্য হুমকিতে ফেলছে। যে কারণে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করে বৈশ্বিক মানদন্ডে নেওয়ার আহ্বান করা হয়।
অনুষ্ঠানে ছয়টি ধারা সংশোধনের কথা বলা হয়েছে। তা হলো- পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে পণ্য প্রর্দশনী নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটসহ সকল ইমার্জিং টোব্যাকো পণ্য থেকে কিশোর -যুবকদের রক্ষা করা, তামাকজাত দ্রব্যে স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০% করা এবং বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা।
মিনি ম্যারাথনে হার্ট ফাউন্ডেশনের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সার্জন ডা. সাকলায়েন রাসেল, হার্ট ফাউন্ডেশন তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরামর্শক নাইমুল আজম ও ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস্-এর এডভোকেসি ম্যানেজার আতাউর রহমান এবং তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধি ও সংবাদ মাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ কর
এছাড়াও পড়ুন:
তারুণ্যের’ ২৪ এর উদ্যোগে শহরে শিক্ষার্থীদের ধর্ষণ বিরোধী বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় নারী ও শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে তারুণ্যের’ ২৪ নামে একটি সংগঠন নারায়ণগঞ্জ কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনে আয়োজিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন তারুণ্যের '২৪-এর অন্যতম সংগঠক মৌমিতা নুর, এবং সঞ্চালনা করেন সংগঠক আবিদ রহমান।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন তারুণ্যের’ ২৪-এর নারায়ণগঞ্জ কলেজ শাখার সংগঠক অপূর্ব রায়, তাহমিদ আনোয়ার, ইসরাত জাহান মীম, আবদুল আহাদ এবং নারায়ণগঞ্জ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শেখ সাদী, শান্ত, রিপা, বর্ণালী, মাহির, ইব্রাহিমসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তারুণ্যের’ ২৪-এর অন্যতম সংগঠক মৌমিতা নুর বলেন, নারায়ণগঞ্জসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের অসামান্য ভূমিকা প্রত্যক্ষ করেছি, অথচ আজ নারীরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে পারে না। আমাদের মা-বোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যদি এই পরিস্থিতি পরিবর্তন না হয়, তাহলে আমরা আরও বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তুলবো।
আমরা দাবি জানাই, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল গঠন করা হোক। যতদিন ধর্ষণ বন্ধ না হবে এবং ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় না আনা হবে, ততদিন আমাদের লড়াই চলবে। আমরা চাই, ধর্ষকদের পাশাপাশি তাদের আশ্রয়দাতাদেরও জাতির সামনে উন্মোচন করা হোক।
আমাদের লড়াই নিজের নিরাপত্তার জন্য, অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। বেগম রোকেয়া ও প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার আমাদের শিখিয়ে গেছেন—লড়াই করে বাঁচতে হবে, অধিকার আদায় করতে হবে। যদি সরকার আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের পদত্যাগ করতে হবে। নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা আরও বড় কর্মসূচি ঘোষণা করবো এবং শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলবো।
তারুণ্যের’ ২৪ এর সংগঠক তাহমিদ আনোয়ার বলেন, আমরা এমন এক বাংলাদেশে বসবাস করছি, যেখানে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চরম আকার ধারণ করেছে। মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নেই। আমরা সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে জানতে চাই—এত ধর্ষণের ঘটনা ঘটার পরও কেন অপরাধীরা মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে? কেন এখনো তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? আমরা এও জানতে চাই, এই ধর্ষকদের পৃষ্ঠপোষক কারা? তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন পদক্ষেপ নিচ্ছে না কেন?
যদি অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা না হয়, তাহলে আমরা দেশের নারীদের নিয়ে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবো।