সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

গত সপ্তাহে ইথেরিয়াম ডিজিটাল ওয়ালেট থেকে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার মূল্যের ডিজিটাল কয়েন বা ক্রিপ্টো চুরি করেছে হ্যাকাররা। এটিকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টো চুরির ঘটনা বলে জানিয়েছে ক্রিপ্টোকারেন্সি ফার্ম বাইবিট। এ চুরির পেছনে উত্তর কোরিয়ার হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এফবিআই জানায়, ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ বাইবিট থেকে প্রায় ১৫০ কোটি ডলার চুরির পেছনে উত্তর কোরিয়ার হাত রয়েছে। ট্রেডার ট্রেইটর নামে একটি গ্রুপ, যেটি ল্যাজারাস গ্রুপ নামে পরিচিত, তারাই এই হ্যাকিংয়ে যুক্ত।

লাজারাস গ্রুপ উত্তর কোরিয়া সরকার-সমর্থিত হ্যাকার গ্রুপ। এই গ্রুপটি আগেও বড় ধরনের ডিজিটাল ডাকাতির জন্য দায়ী। যেমন ২০২২ সালে রোনিন গ্রুপের ব্লকচেইন থেকে ৬১৫ মিলিয়ন ডলার চুরি।

১৯৯০ এর দশকের মাঝামাঝি থেকে উত্তর কোরিয়ার সাইবার-যুদ্ধ কর্মসূচি শুরু হয়। ২০২০ সালে মার্কিন এক প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার প্রায় ৬ হাজার সদস্যের একটি শক্তিশালী সাইবার-যুদ্ধ ইউনিট যা ব্যুরো ১২১ নামে পরিচিত। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে এটি পরিচালিত হয়।

গত সপ্তাহে ক্রিপ্টো প্ল্যাটফর্ম জানায়, এক হ্যাকার ইথেরিয়াম নামক একটি জনপ্রিয় ডিজিটাল মুদ্রার ওয়ালেটের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল এবং তাতে থাকা অর্থ একটি অজ্ঞাত ঠিকানায় স্থানান্তরিত করেছে।

বাইবিটের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী বেন ঝৌ বলেন, বাইবিট অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে। এই হ্যাকের ক্ষতি পুনরুদ্ধার করা না গেলেও গ্রাহকদের সব সম্পদ ফিরিয়ে দেয়া হবে। আমরা এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ হলো বাইবিট এবং এতে ৬০ মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে। এই হ্যাকের খবরের পর গ্রাহকদের মধ্যে অর্থ উত্তোলনের অনুরোধ ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার জয়ী হওয়ার পর ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে। হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বিশ্বের ক্রিপ্টো রাজধানী’ বানানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে এই হ্যাক ক্রিপ্টো ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি বড় ধাক্কা।

সূত্র: এনডিটিভি

বিএইচ

.

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: এই হ য ক

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে মামলার রায় শুনে আদালত চত্বরে বিক্ষোভের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ

পঞ্চগড়ে হত্যা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে বাদীপক্ষের লোকজনের বিক্ষোভ, আদালতের বিষয়ে সম্মানহানি ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য এবং গণমাধ্যমকর্মীদের মিথ্যা তথ্য দেওয়ার বিষয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি। বুধবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. আদম সুফি তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ প্রতিবাদ জানান।

এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার সকালে আইনজীবী সমিতির জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছিল। মো. আদম সুফির সভাপতিত্বে ওই সভায় জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আইবুল আলম আঙ্গুরকে প্রধান করে চারজন আইনজীবীর সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা জজ আদালতের গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) আব্দুল বারী, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) খলিলুর রহমান, পঞ্চগড় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজলসহ অন্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে মো. আদম সুফি বলেন, গত ২০ মার্চ পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি মামলার রায় প্রকাশের পর উচ্ছৃঙ্খল কিছু ব্যক্তি আদালতের বিষয়ে সম্মানহানিকর ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্যে পঞ্চগড় জেলা আইনজীবী সমিতি দুঃখ প্রকাশসহ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি বস্তুনিষ্ঠ নয়। কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি আদালত ও আইনজীবীদের সম্মান ক্ষুণ্ন করার হীন উদ্দেশ্যে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।

গত রোববার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা জজ আদালত চত্বরে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে মারামারির ঘটনায় পক্ষে-বিপক্ষে করা দুটি মামলার আসামিদের বেকসুর খালাসের রায় শুনে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেন হত্যা মামলার বাদীপক্ষের লোকজন। বিক্ষোভে হত্যা মামলার বাদীপক্ষের লোকজন ন্যায়বিচার পাননি দাবি করে আদালতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় আদালতে আসা উৎসুক লোকজন সেখানে ভিড় করেন। বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংবাদ সম্মেলনে মো. আদম সুফি আরও বলেন, রায় ঘোষণার পর আদালতের উদ্দেশে বিক্ষোভকারী যে ধরনের স্লোগান দিয়েছেন, তা আদালতকে অসম্মান করার শামিল। এ ছাড়া বিভিন্ন সাংবাদিকদের কাছে যেভাবে টাকাপয়সা লেনদেনের কথা বলছিলেন, তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। পঞ্চগড়ে বিচারকেরা সুশৃঙ্খল পরিবেশে তাঁদের বিচারকার্য পরিচালনা করবেন এবং জেলার মানুষ ন্যায়বিচার পাবেন এমনটাই তাঁদের কামনা। কিন্তু কেউ যদি এই সম্মান আর আস্থার জায়গাটিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তা খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদেরও সহায়তা চান।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ৩০ মার্চ জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের ঝালিঙ্গিগছ এলাকায় কসির উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী সামসুল হকের পরিবারের লোকজনের জমি নিয়ে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন সকালে কসির উদ্দিনের ছেলে মো. এরশাদ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওই দিনই রাতে এরশাদের বাবা কসির উদ্দিন বাদী হয়ে তেঁতুলিয়া থানায় ওই ঘটনায় সামসুল হক পক্ষের ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

ঘটনার প্রায় আড়াই মাস পর ২০১১ সালের ১৪ জুন অপর পক্ষ সামসুল হকের স্ত্রী রনজিনা বেগম পঞ্চগড় আদালতে কসির উদ্দিন পক্ষের ১৯ জনকে আসামি করে একই ঘটনায় একটি পাল্টা মামলা করেন। দুটি মামলার কার্যক্রম একই আদালতে চলছিল। দীর্ঘদিন আইনি প্রক্রিয়া শেষে কোনো পক্ষই অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারায় গত রোববার দুপুরে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এস এম রেজাউল বারী দুটি মামলার সব আসামিকেই বেকসুর খালাসের রায় দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ