আওয়ামী লীগের পতনের পর স্বস্তির পরিবেশ বিরাজ করছে: রিজভী
Published: 27th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের পতনের পর কিছুটা হলেও মুক্তি এবং স্বস্তির পরিবেশ বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল সংলগ্ন মাঠে বিএনপির বর্ধিত সভায় শোক প্রস্তাবকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, যারা এই ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনার বর্বরোচিত শাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছিল তাদের অনেকেই আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে। এখনো তাদের কোনো হদিস মেলেনি।
তিনি বলেন, কতজন আয়নাঘরে বন্দি ছিল, কতজন যে অকথ্য অত্যাচারের শিকার হয়েছেন, তারপর কোথায় তাদের ফেলে রাখা হয়েছে, এখনো পর্যন্ত তার হদিস পাওয়া যায়নি। কত নেতাকর্মী এবং দেশের নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ হারিয়ে গেছেন তার অন্ত নেই। আমরা এদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
রিজভী বলেন, দীর্ঘ রক্তের স্রোত ও আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে আজ দলের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বর্ধিত সভার শুরুতেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর বিক্রমকে। এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদের প্রবর্তক ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ন্যায়-নিষ্ঠা সততা এবং দেশপ্রেমের এক অনন্য ক্ষনজন্মা পুরুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান। যখনই গণতন্ত্র বিপন্ন হয়েছে, যখনই দেশ বিপন্ন হয়েছে, তখনই তিনি দেশের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে আপসহীন থেকে সংগ্রাম করেছেন। সেই গণতন্ত্রের প্রতীক গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু সুস্থতা কামনা করে ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে যেসব নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা মারা গেছেন, তাদের সবাইকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে আজকের বর্ধিত সভায় শোক প্রস্তাব গ্রহণ করছি। এছাড়া আমরা দেশের বরেণ্য নেতৃত্ব, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, সুরকার, গীতিকারসহ যাদের হারিয়েছি, তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। উপস্থিত আছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান এবং হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
এছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সব কর্মকর্তা ও সদস্যরা, সব মহানগর, জেলা, থানা-উপজেলা ও পৌর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবরা রয়েছেন। এর বাইরেও বিএনপির ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবরা উপস্থিত আছেন।
বিএইচ
.উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: গণতন ত র র কম ট র রহম ন ব এনপ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে ইতিমধ্যে জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নিরপেক্ষতাই হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় পুঁজি। কিন্তু সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে ইতিমধ্যেই জনমনে সন্দেহ-সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। নিজেদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আরও সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি ঢাকায় দলের বর্ধিত সভায় যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। আজ বেলা ১১টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে শুরু হয় বিএনপির বর্ধিত সভা। সভায় ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাঁর রেকর্ড করা বক্তব্য সভায় প্রচার করা হয়।
সভায় তারেক রহমান বলেন, বিভিন্ন সময়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য জনমনে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করলেও এ নিয়ে কোনো কোনো উপদেষ্টার বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য-মন্তব্য স্বাধীনতাপ্রিয়, গণতন্ত্রকামী জনগণের জন্য হতাশার কারণ হয়ে উঠছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের সব রাজনৈতিক দলের নিঃশর্ত সমর্থন থাকলেও সরকার এখনো নিজেদের কর্মপরিকল্পনার অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে পারছে না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সারা দেশে খুন, হত্যা, ধর্ষণ, চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি বেড়েই চলেছে। বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণহীন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এখনো দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। সরকার যেখানে দেশের বাজার পরিস্থিতি কিংবা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সফলতার পরিচয় দিতে পারছে না, সেখানে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের নামে কেন দেশের পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করতে চাইছে, এটি জনগণের কাছে বোধগম্য নয়।
তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রকামী জনগণ মনে করে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে অনুষ্ঠিত হলে তা হবে পলাতক-স্বৈরাচারের দোসরদের সারা দেশে পুনর্বাসনের একটি প্রক্রিয়া। যা হবে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বিরোধী। গণহত্যাকারী, টাকা পাচারকারী, দুর্নীতিবাজ, মাফিয়াচক্রকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার এই ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না।
বিএনপি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে তাঁর দল জনরায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে গণহত্যাকারী-মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করবে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সারা দেশে গণহত্যাকারীদের দোসর, মাফিয়াচক্রকে পুনর্বাসনের স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা থেকে সরে আসুন। অবিলম্বে অন্তর্বর্তী সরকারের আগামী দিনের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে কথা বলেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, মাফিয়াপ্রধান হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর এখন পর্যন্ত ১৬-১৭টি নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিএনপি সব নতুন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে স্বাগত জানায়। তবে দলগুলোকে নির্বাচনের মাধ্যমে গ্রহণ কিংবা বর্জনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে জনগণ। সুতরাং, প্রতিটি দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সবার আগে নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুত রাখতে হবে।