রোজা রাখলে শরীরে যেসব পরিবর্তন আসে
Published: 27th, February 2025 GMT
আসছে পবিত্র মাস রমজান। পুরো মাস ধরে রোজা পালন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। রোজাকে ধর্মীও রীতি এবং আত্ম-প্রশান্তির উপায় মনে করা হয়। একজন রোজাদারকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হয়। এতে শরীরে নানা প্রভাব পড়ে। রোজার প্রভাব কেমন, এতে শরীরে কি কি পরিবর্তন আসে; এসব বিষয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন ল্যাবএইড হসপিটালের সিনিয়র পুষ্টিবিদ কামরুন আহমেদ।
এই পুষ্টিবিদ জানান, রোজা রাখার সুফল পেতে হলে মানুষকে স্বাস্থ্যকর, পরিষ্কার ও হালকা খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হবে। তেমনটি করা হলে সেটি শরীরকে ‘ডিটক্সিফাই’ করবে। রোজা রাখলে বছরের পর বছর ধরে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেমে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। রোজা কার্ডিওভাসকুলার ঝুঁকির কারণগুলোর ওপর বেশ কিছু ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। যেমন রক্তচাপ কমানো, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো, ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা উন্নত করা এবং ওজন কমানোর কাজ করে। আর এটি ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো কার্ডিয়াক অসুস্থতার ঝুঁকিও হ্রাস করতে পারে।
কামরুন আহমেদ বলেন, ‘‘ রোজা রাখলে মানব শরীর নতুন জীবনীশক্তি লাভ করে। রোজা রাখা এবং বিশেষ করে কম প্রোটিনযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করার অভ্যাস শরীরে তারুণ্য ধরে রাখতে কাজ করে। রোজা মানুষের বৃদ্ধির হরমোনের স্তরকে উন্নীত করে বলে মনে করা হয়। এই হরমোন শরীরের বৃদ্ধি, বিপাক, ওজন হ্রাস, পেশী শক্তি এবং ব্যায়ামের কর্মক্ষমতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ সম্পর্কিত বর্তমান গবেষণা মূলত প্রাণিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ, তাই এটি কীভাবে মানুষের তারুণ্যকে প্রভাবিত করে তা সম্পূর্ণরূপে বোঝার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন।’’
আরো পড়ুন:
রান্নায় হলুদ বেশি হয়ে গেলে করণীয়
ই-বুককে জনপ্রিয় করছে ‘বইটই’, বিনামূল্যে পড়া যায় তিন শতাধিক বই
প্রাণীদের ওপর করা গবেষণায় দেখা গেছে যে, রোজা রাখলে তা পার্কিনসন এবং আলঝাইমারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে এবং ফলাফল উন্নত করে। সেইসঙ্গে স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কের প্রক্রিয়াকরণকে বাড়িয়ে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও উন্নত করে। প্রানিজ গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, রোজা রাখলে তা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং স্নায়ু কোষের উৎপাদন বাড়ায়। তবে মানুষের জন্য প্রাসঙ্গিকতা নির্ধারণের জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।
কামরুন আহমেদ বলেন, ‘‘মানব গবেষণার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোজা উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতার লক্ষণ কমায় এবং সামাজিক সংযোগ উন্নত করতে পারে। এই প্রভাবগুলো মূল্যায়ন করার জন্য আরও অধ্যয়ন প্রয়োজন তবে এখনও পর্যন্ত পাওয়া ফলাফলগুলো সন্তুষ্টিজনক।’’
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে: দুদক চেয়ারম্যান
দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে, তা না হলে এই ব্যাধি থেকে সমাজ মুক্তি পাবে না।
রোববার দুপুরে নীলফামারী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে তিনি এ কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, পুরোনো দুর্নীতির পেছনে বেশি সময়ক্ষেপণ না করে, ভবিষ্যতে দুর্নীতি রোধের জন্য কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে দুদক। অতীত ও বর্তমান সময়ের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান শক্ত করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে দুর্নীতি না হয়, সে জন্য কাজ করছে দুদক। দুদকের কোথাও দুর্নীতি থাকলে, তাও ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতিকে মন থেকে ঘৃণা করতে হবে। তা না হলে এ সংকট কাটবে না। তিনি আগামী প্রজন্মকে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ারও আহ্বান জানান।
গণশুনানিতে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নীলফামারী জেনারেল হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ এবং দুদকের অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেওয়া হয়। গণশুনানিতে সৈয়দপুর উপজেলার গোলাহাট এলাকায় বিভিন্ন সেবা গ্রহণকারী একাধিক অভিযোগ তুলে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে দুদক কমিশনার (তদন্ত) মুহাম্মদ আকবার আলী আজিজী, মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহসিনসহ দুদকের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক তালেবুর রহমান বক্তব্য দেন। এর পর নীলফামারী সদর উপজেলার সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার মান নিয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৩১টি দপ্তরের ৮১টি অভিযোগ উত্থাপিত হয় এবং সংশিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নিজ নিজ অভিযোগের বিষয়ে জবাবদিহি করেন।