প্রতিবছরের মতো এবারও স্পেনের বার্সেলোনায় শুরু হচ্ছে মুঠোফোন প্রযুক্তি নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়োজন মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস (এমডাব্লিউসি)। ৩ মার্চ থেকে শুরু হতে যাওয়া এ প্রদর্শনী চলবে ৬ মার্চ পর্যন্ত। বিশ্বের ফোন অপারেটরদের সংগঠন জিএসএমএ আয়োজিত বার্ষিক এ প্রদর্শনীতে নিজেদের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট এবং টেলিকম সফটওয়্যারসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিসেবা প্রদর্শন করবে বাংলাদেশি বহুজাতিক সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান রিভ সিস্টেমস। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে রিভ সিস্টেমস।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে বাংলাদেশে তৈরি এআই চ্যাটবটসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রদর্শনের বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করতে গত মঙ্গলবার রাজধানীর পূর্বাচলে রিভ সেন্টারে প্রেস মিট অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির গ্রুপ সিইও (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) এম রেজাউল হাসান বলেন, ‘এমডব্লিউসিতে আমরা আমাদের নতুন সংযোজিত প্রযুক্তিগুলো প্রদর্শন করব। আমাদের উদ্ভাবিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবট এবং টেলিযোগাযোগ সেবা বা পণ্যগুলো অপারেটরদের টেলিযোগাযোগ সেবা ও গ্রাহকসেবা খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি।’

আরও পড়ুনবাংলাদেশে তৈরি এআই চ্যাটবট ব্যবহৃত হবে কুয়েতে০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, রিভ সিস্টেমসের তৈরি এআই চ্যাটবট ও লাইভ চ্যাট সলিউশন সুবিধা এরই মধ্যে ব্যবহার শুরু করেছে এসটিসি কুয়েত। লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের এআই চ্যাটবটটি বিভিন্ন ভাষায় গ্রাহকসেবা ও বিভিন্ন ডিজিটাল সেবাবিষয়ক প্রশ্নের উত্তর তাৎক্ষণিকভাবে দিতে পারে। আর তাই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টেলিকম অপারেটর এআই চ্যাটবটটির বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

অনুষ্ঠানে নিজেদের উদ্ভাবিত ‘ভার্চ্যুয়াল ট্রায়াল রুম’ প্রদর্শন করেছে রিভ সিস্টেমস। ভার্চ্যুয়াল ট্রায়াল রুমটির মাধ্যমে ক্রেতারা ঘরে বসেই পছন্দের পোশাকে তাকে কেমন দেখাচ্ছে, তা জানতে পারবেন। ফলে অনলাইন কেনাকাটা আরও জনপ্রিয় হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এআই চ য টবট

এছাড়াও পড়ুন:

মাংসের বিকল্প তৈরির চেষ্টা করছে জার্মান স্টার্টআপ

জার্মানির একটি স্টার্টআপ মাংসের বিকল্প তৈরির চেষ্টা করছে, যা খেতে সুস্বাদু হবে। আরেক স্টার্টআপ একটি সফটওয়্যার তৈরির চেষ্টা করছে, যেটি দিয়ে গাছের স্বাস্থ্যের ওপর নজর রাখা যাবে। এই দুই স্টার্টআপের কাজ নিয়ে ইতিমধ্যে ইউরোপে আগ্রহ দেখা দিয়েছে।

সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করা স্টার্টআপটির নাম ‘গ্রিনহাব’। এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আলেকজান্ডার ইয়াভরস্কি জানান, তাঁদের লক্ষ্য বিশ্বের সবার জন্য তাজা খাবার নিশ্চিত করা।

বার্লিনের স্টার্টআপ ‘এসেনসিয়া ফুডস’ মাংসের বিকল্প তৈরি করছে। ‘সলিড-স্টেট ফার্মেন্টেশন’ প্রক্রিয়া ব্যবহার করে মাশরুমের শিকড় মাইসেলিয়াম থেকে এই বিকল্প মাংস তৈরি করা হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রতিষ্ঠাতা হেন্ডরিক কায়ে বলেন, ‘আমরা বলছি, সবার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা থাকা দরকার। সব পরিবার যেন এটা পেতে পারে, এমনকি নিম্ন আয়ের দেশের মানুষও যেন পায়।’

এসেনসিয়া ফুডসের আরেক প্রতিষ্ঠাতা আর্জেন্টিনার ব্রুনো স্কোকোসা। বায়োফিজিকসে পিএইচডি করেছেন তিনি। এ ছাড়া তিনি একজন শেফও। মাশরুম দিয়ে মাংসের একটি ভালো বিকল্প তৈরি করতে চান স্কোকোসা। কারণ, বর্তমানে যে ভেগান বিকল্প পাওয়া যায়, তাতে তিনি সন্তুষ্ট নন।

স্কোকোসা বলেন, ‘উদ্ভিদভিত্তিক যেসব বিকল্প আছে, তার অনেকটির সমস্যা হচ্ছে। সেগুলোতে প্রোটিন পাউডার ব্যবহার করা হয়, যেটা খেতে সুস্বাদু নয়। তাই ওই স্বাদে পরিবর্তন আনতে অনেক মসলা ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু আমরা এমন কিছু ব্যবহার করছি না, যেটার স্বাদ পরিবর্তন করতে হবে।’

ক্লারা কোম্পানির একজন খাদ্যবিজ্ঞানী। তিনি নতুন পণ্য উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন, যেমন এই ভেগান ড্যোনার কাবাব। সামান্য মসলা ছিটানোর পরই এটি খাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে যায়।

ক্লারা বলেন, এটি আসলে বহুমুখী। বিভিন্ন ধরনের পণ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন সসেজ হিসেবে খাওয়া যায়। এ ছাড়া ন্যূনতম প্রক্রিয়াজাত করতে হয় এমন সব খাবার, যেমন কিমা করা মাংস, কাবাবের স্ট্রিপ—যেমনটা এখানে দেখতে পাচ্ছেন, মুরগির টুকরা ইত্যাদি হিসেবেও খাওয়া যায়।

গাছের স্বাস্থ্য রক্ষায় সফটওয়্যার

জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিও বিবেচনায় নিয়েছে লাইপজিগের স্টার্টআপ গ্রিনহাব। খরা ও অতি বৃষ্টির কারণে ঘরে জন্মানো সবজির কোনো সমস্যা হয় না। তবে গ্রিনহাব একটি সফটওয়্যার তৈরি করছে, যা দিয়ে এসব সবজির বৃদ্ধির ওপর নজর রাখা যায়।

গ্রিনহাবের সহপ্রতিষ্ঠাতা কাই প্লাট জানান, সফটওয়্যারটা আসলে মালির মতো কাজ করে। এটা গাছের স্বাস্থ্যের ওপর নজর রাখে। পুষ্টির মাত্রার মতো পানির প্যারামিটার থেকে শুরু করে এটি গাছের সামগ্রিক অবস্থা মূল্যায়ন করে থাকে।

তবে সফটওয়্যারটি এখনো অভিজ্ঞ মালির মতো হয়ে উঠতে পারেনি। সে কারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তা নিতে চায় গ্রিনহাব। তাই এখন গাছের সর্বোচ্চ পরিচর্যার জন্য প্রয়োজন এমন সব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। যেমন আলো, পুষ্টি ও আর্দ্রতার সঠিক মাত্রা কেমন হওয়া উচিত ইত্যাদি।

গ্রিনহাবের আরেক প্রতিষ্ঠাতা ইয়াভরস্কি বলেন, ‘এগুলো বেশ জটিল প্রক্রিয়া। কখনো কখনো অপ্রত্যাশিত চমক নিয়ে আসে। যেমন গাছ হয়তো ছত্রাক সংক্রমণের মতো রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তেমনটা হলে কী করতে হবে, সেই সমাধান এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই।’

তারপরও জার্মানির দুটি বড় গবেষণা সংস্থা গ্রিনহাবের সফটওয়্যার নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন উদ্ভিদের ওপর কী প্রভাব ফেলে, তা জানতে এটি ব্যবহার করতে চায় তারা। এসেনসিয়া ফুডসের মাংসের বিকল্পের প্রতিও আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। একটি জার্মান সুপারমার্কেট চেইন ইতিমধ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে। তাই কোম্পানিটি এখন উৎপাদন বৃদ্ধির পথ খুঁজছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাংসের বিকল্প তৈরির চেষ্টা করছে জার্মান স্টার্টআপ