ওসমানী বিমানবন্দরে অগ্নিনির্বাপণ মহড়ায় বেবিচক চেয়ারম্যান
Published: 27th, February 2025 GMT
সিলেটের এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে হঠাৎ ছিটকে পড়ে একটি উড়োজাহাজ। এরপর সেটিতে আগুন লেগে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি। যাত্রীদের উদ্ধারে সরকারি বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয় একাধিক মেডিকেল দলও। আগুন নেভানোর পাশাপাশি দ্রুততার সঙ্গে শুরু হয় উদ্ধার তৎপরতা।
অগ্নিনির্বাপণ মহড়ার অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বিমানবন্দরে এ দৃশ্য দেখা যায়। এ জন্য কৃত্রিমভাবে একটি দুর্ঘটনার দৃশ্যপট তৈরি করে উড়োজাহাজের মডেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর চলে মহড়া। মূলত আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিধি অনুসারে প্রতি দুই বছর পরপর সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ ধরনের অগ্নিনির্বাপণ মহড়ার আয়োজন করতে হয়।
মহড়ায় দেখা যায়, উড়োজাহাজের ভেতরে ৫০ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে ৫ জন ‘মারা’ যান। তাঁদের বিমানবন্দরের ভেতরের মর্গে নেওয়া হয়। এ ছাড়া আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে করে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের নিয়ে যাওয়া হয়। ‘গুরুতর আহত’ একজনকে হেলিকপ্টারে নেওয়া হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।
বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), আনসারসহ সরকারি বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এ মহড়ায় অংশ নেন। এ ছাড়া রেড ক্রিসেন্টসহ সরকারি-বেসরকারি সংশ্লিষ্ট নানা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরাও অংশ নেয় বিভিন্ন পর্বে।
মহড়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া। এ ছাড়া শুভেচ্ছা বক্তা হিসেবে ছিলেন ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমেদ। অনুষ্ঠানে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর বলেন, যেকোনো অনভিপ্রেত পরিস্থিতি সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে সফলভাবে মোকাবিলা করার প্রস্তুতি রাখার জন্যই এ মহড়ার আয়োজন করা হয়েছে। এখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অগ্নিনির্বাপণ ও যাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার অনুশীলন করেন।
বিমানভাড়া সহনীয় পর্যায়ে আনতে আলোচনা চলছেঅনুষ্ঠান শেষে মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এ সময় তিনি জানান, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মিতব্য নতুন টার্মিনালের নির্মাণকাজ দ্রুততার সঙ্গে শেষ হবে। এ ছাড়া ঢাকা-সিলেট ও সিলেট-ঢাকা রুটে বিমানভাড়া সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে তাঁরা আলোচনা করছেন বলে জানান। তাঁর দাবি, মূলত সেলিং এজেন্টদের কারণে বিমানভাড়া বেড়েছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান জানান, সিলেট থেকে আরও কিছু রুটে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া কিছুদিনের মধ্যে সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইটও চালু হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যমুনা সেতুর ওপর দুর্ঘটনায় যানচলাচল ব্যাহত, পরে স্বাভাবিক
যমুনা সেতুর ওপর দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় উত্তরাঞ্চল-ঢাকাগামী যান চলাচল ব্যাহত হয়। সেতুর ওপর দুর্ঘটনার পর পরই বেশ কিছু যানবাহন পেছনে একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এরপর সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা এবং সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত সেতুর উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী উত্তর দিকের লেনে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। খুলে দেওয়ার পরও ২ ঘণ্টা পর অবস্থা স্বাভাবিক হয়। এর আগে সেতুর পশ্চিম পাড় থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার অংশে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয়। নিয়ন্ত্রণে বিপাকে পরে পুলিশ।
যমুনা সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিবিএর সাইট ম্যানেজার ও নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল আজ সকাল সাড়ে ১০টায় জানান, চালকরা হুড়াহুড়ি করে যেতে উত্তর লেনে ভোরে ঢাকা-উত্তরাঞ্চলগামী হানিফ পরিবহনের সঙ্গে আরেকটি গাড়ির ধাক্কা লাগে। পরপরই আরেকটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে পিকআপের ধাক্কা লাগে। এরপর আরও কয়েকটি যানবাহনের ধাক্কা লাগে।
এতে উত্তর লেন দিয়ে যান চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে সেতুর ওপর যানবাহনের দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হয়। পরে সকাল থেকে যানবাহন চলাচল খুলে দেওয়া হলো ১০টার পর স্বাভাবিক হয়। এখন আর কোনো সমস্যা নেই। যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’
যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনারুল ইসলাম জানান, ‘সেতুর ওপরে দুর্ঘটনার কারণে পরপর দুই দফা উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকা যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। পরে লেনটি খুলে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিবিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির সকালে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলগামী ৪৫ হাজার ৪৮টি (ছোট, বড়, মাঝারি, হালকা ও ভারী ) যান সেতু পারাপার হয়েছে। যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষের টোল আদায় হয়েছে তিন কোটি ২১ লাখ ৬৪ হাজার ৬০০ টাকা।
সিরাজগঞ্জ রোড হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুর রউফ জানান, সেতু কর্তৃপক্ষ উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী লেনটি দুবার বন্ধ রাখায় ভোর রাত থেকে অবস্থা খুব খারাপ ছিল। যান নিয়ন্ত্রণে পুলিশ পেরেশানির মধ্যে পড়ে। সকাল সাড়ে ৮টার পর লেন খুলে দেওয়ায় অবস্থা স্বাভাবিক হয়।