মৌলভীবাজারে হুরহুর ফুলের মায়াবী সংসার
Published: 27th, February 2025 GMT
‘পুষ্পে পুষ্পে ভরা শাখি কুঞ্জে কুঞ্জে গাহে পাখি/গুঞ্জরিয়া আসে অলি পুঞ্জে পুঞ্জে ধেয়ে/তারা ফুলের ওপর ঘুমিয়ে পড়ে ফুলের মধু খেয়ে।’...মনে হয়েছে গানের ওই পঙ্ক্তিগুলোর মতো প্রকৃতিকে কেউ ওখানে সাজিয়ে রেখেছে। প্রকৃতই ওখানে পুষ্পে পুষ্পে শাখা ভরে আছে। সেই পুষ্পবনে দলে দলে উড়ছে মৌমাছি। তার কোনোটি ঘুমের মতো বসে আছে ফুলের বুকে। একেবারে গানের কথায়, গানের ভাবে মিলেমিশে আছে অযত্ন-অবহেলায় বেড়ে ওঠা বুনো ফুলের এই একটি সংসার।
মৌলভীবাজার শহরের কোদালীছড়ার পাড়ে ঢাকা বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন কোদালীপুলের পূর্ব দিকে এই সংসার সাজিয়েছে হুরহুরে ফুল। অসংখ্য ফুল ফুটেছে ডালে ডালে। আর মৌমাছিরাও মধুর লোভে বুনো ফুলে আসর জমিয়েছে। গাছে গাছে মায়াভরা এত ফুল, চোখ ফেরানোর উপায় নেই। বুধবার সকালে এই বুনো ফুলের সঙ্গে দেখা।
বছর দুয়েক আগে মৌলভীবাজার পৌরসভার উদ্যোগে কোদালীছড়ার প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকার দুই পাড় পাকা করে বাঁধাই করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে হাঁটার পাকা পথ। কোদালীছড়ার পাড় ধরে চলতে গিয়ে এই ফাল্গুনের সকালে অনেক স্থানেই দেখা মেলে চোখজুড়ানো কিছু ভাঁটফুলের সঙ্গে। কোথাও দু–চারটা গাছ, কোথাও ঝোপবেঁধে সাদা সাদা ভাঁটফুল ফুটে আছে। এই পথ ধরে দু–চারজন নারী, দু–একজন পুরুষ প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছেন। কোদালীপুলের কাছে একটি পতিত জমির কাছে রঙিন করে ফুটে আছে অনেকগুলো হুরহুরে ফুল। সাধারণত হাওর-বাঁওড়, ডোবা-নালা, জলাভূমির পাশে হুরহুরের দেখা মেলে। মৌলভীবাজারের হাকালুকি, কাউয়াদীঘি, হাইল হাওরসহ ছোট-বড় হাওরে এই হুরহুরে ফুটে থাকে। হাওর পর্যটক, হাওরপারের মানুষের চোখ জুড়ায়।
মৌলভীবাজার শহরের ভেতর এমন হাওর-প্রকৃতির পরিবেশ বসন্তের সকালটাকে আরও রঙিন, আরও উজ্জ্বল, আরও সুন্দর করে তোলে। হুরহুরের ডালে ডালে ঝাঁকে ঝাঁকে ফুল ফুটে আছে। সাদা-বেগুনি, সাদা-গোলাপি পাপড়ির ফুল। সবুজ চিরল পাতার ফাঁকে, শাখার মাথায় ঝোপালো ফুল ফুটে আছে। সেই ফুলের ওপর দলে দলে উড়ে আসছে মৌমাছি। কোনোটা এক ফুল থেকে আরেক ফুলে উড়ে যাচ্ছে। কোনোটি মধু খেয়ে যেন অলস হয়ে ফুলের ওপর ঘুমিয়ে পড়েছে। হুরহুরের পুরো বনে অনেক মৌমাছি। তারা গুনগুন করছে, নিজেদের পৃথিবীতে মগ্ন হয়ে আছে। ফুলেরাও যেন এমন অলির অপেক্ষাতেই থাকে। মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে ফুল। এ রকম মুহূর্তে ফুল ও মৌমাছি পরস্পর মিলেমিশে গেছে।
হুরহুরে ফুলের আরও কিছু নাম আছে। নুনিরলতা, সূর্যাবর্ত্ত, হুলহুলে। পুংকেশর মাকড়সার মতো চারপাশে ছড়িয়ে থাকে বলে ইংরজিতে ‘ওয়াইল্ড স্পাইডার ফ্লাওয়ার’ বা বন্য মাকড়সা ফুল নামেও এই ফুলের পরিচিতি আছে।
হুরহুরে একটি সপুষ্পক, ঝোপালো উদ্ভিদ। এর ডালে অসংখ্য ছোট সবুজ পাতা থাকে। ফুল ডালের শীর্ষে পর্যায়ক্রমে ফুটে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সাদা রঙের ফুলের দেখা মেলে। ফুল গোলাপি, বেগুনি, হলুদ ইত্যাদি রঙের হয়। বিভিন্ন রঙের হুরহুরে চোখজুড়ানো সৌন্দর্য তৈরি করে। এর বীজের আকৃতি অনেকটা শামুকের খোলসের মতো। হুরহুরে আকর্ষণীয় ও দ্রুত বর্ধনশীল গাছ। মৌটুসি পাখিও এই ফুল পছন্দ করে। গাছগুলো তাপ এবং খরা সহ্য করতে পারে। শীতের প্রথম দিক থেকে শুরু হয়ে বর্ষা-শরৎ পর্যন্ত এই ফুল ফুটে। বীজ দূরবাহী ও বৈরী পরিবেশে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই ফ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বাউবিতে এলএলবি অনার্স কোর্স, আবেদনের সময় বৃদ্ধি
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪-২৫ সেশনে এলএলবি (অনার্স) প্রোগ্রামে ভর্তির আবেদনের সময় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। এ কোর্সের মেয়াদ চার বছর। প্রোগ্রামটি সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক ও ভাষা স্কুলের অধীন। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্রে প্রতিটি কোর্সের জন্য ২৪টি ক্লাস প্রতি শুক্র ও শনিবার অনুষ্ঠিত হবে।
ন্যূনতম যোগ্যতা—
১. আবেদনকারীকে এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের উভয় পরীক্ষায় আলাদাভাবে ডিভিশন পদ্ধতিতে ৫০ শতাংশ নম্বর করে দ্বিতীয় বিভাগ অথবা জিপিএ পদ্ধতিতে ৩.৫০ (৫.০০-এর মধ্যে) থাকতে হবে।
২. সব শাখার শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারবেন।
কোর্সের বৈশিষ্ট্য—১. ৪ বছরে মোট ৪০টি কোর্স বা ১২০ ক্রেডিট সম্পন্ন করতে হবে (প্রতি কোর্স = ৩ ক্রেডিট)।
২. প্রতি শিক্ষাবর্ষ ছয় মাসমেয়াদি দুটি সেমিস্টারে বিভক্ত। প্রতি সেমিস্টারে পাঁচটি কোর্সে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
৩. প্রতি সেমিস্টার শেষে পরীক্ষা হবে।
৪. মোট আসন ১০০টি।
৫. স্টাডি সেন্টার: ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্র, বাউবি।
আরও পড়ুন৬০০ বৃত্তির সুযোগ গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপে, জেনে নিন বিস্তারিত২১ এপ্রিল ২০২৫দরকারি কাগজপত্র—১. ছবি দুই কপি।
২. এসএসসি/ এইচএসসি/ সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণের সনদপত্র ও মার্কশিটের সত্যায়িত কপি।
৩. জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি।
ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি—১. ভর্তি পরীক্ষা বহুনির্বাচনি (MCQ) প্রশ্নে অনুষ্ঠিত হবে।
২. ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের মানবণ্টন জেনে নিন: বাংলা ২৫, ইংরেজি ২৫, সাধারণ জ্ঞান: বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২৫ ও সাধারণ জ্ঞান: আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ২৫।
৩. ভর্তি পরীক্ষার মোট নম্বর ১০০। ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪০। প্রতি অংশে ৪০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।
ভর্তির পুনর্নির্ধারিত তথ্য—১. আবেদন করার সময় বৃদ্ধি: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত।
২. আবেদন ফি: ৬০০ টাকা। মোট ফি ১২ হাজার ৫৬০ টাকা।
৩. লিখিত পরীক্ষার জন্য মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ: ৮ মে ২০২৫।
৪. লিখিত পরীক্ষার আসনবিন্যাস: ১৩ মের পর বাউবির ওয়েবসাইট ও ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে জানা যাবে।
৫. লিখিত পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান: ২৩ মে ২০২৫, শুক্রবার; বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
৬. লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫।
৭. সাক্ষাৎকারের তারিখ: ২২ ও ২৩ জুন, সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত হবে। ডিনের কার্যালয়, এসএসএইচএল, বাউবির মূল ক্যাম্পাস, বোর্ড বাজার, গাজীপুর।
৮. মেধাতালিকা প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫।
৯. ভর্তির সময়: ২৬ জুন থেকে ১৭ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত।
১০. ক্লাস শুরু হবে: ২৫ জুলাই ২০২৫।
বিস্তারিত তথ্য জানতে ওয়েবসাইট: www.bou.ac.bd
আরও পড়ুনএসএসসি ২০২৫–এ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিতির কারণ অনুসন্ধানের নির্দেশ১ ঘণ্টা আগে