ঢাকার ৪ থানা পরিদর্শন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার, এসআই-কনস্টেবল বরখাস্ত
Published: 27th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
থানা পরিদর্শনকালে দায়িত্নে অবহেলা করায় রাজধানীর গুলশান থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই) ও এক কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে রাজধানীর মিরপুর, দারুসসালাম, আদাবর ও মোহাম্মদপুর থানা পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় এসআই ও কনস্টেবলকে বরখাস্তের এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের সবসময় সজাগ ও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।
মো.
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মনিটরিং করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ফোর্স ও টহলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক ও সজাগ রয়েছে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে স্থাপিত চেকপোস্টগুলোও ফাংশন (কাজ) করছে। যৌথ বাহিনীর অপারেশনও ভালোভাবে চলছে। থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে চলছে। থানাগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে কি না তা দেখতেই এ পরিদর্শন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভোরের দিকে দায়িত্বে শিথিলতা দেখান। এ সুযোগে সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা নানান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করার চেষ্টা করে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি, তারা যেন এ সময়েও সজাগ ও সতর্ক থাকে।
চলমান যৌথ অভিযান আর কতদিন চলবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি হলে যৌথ অভিযান বন্ধ করা হবে। তবে অন্যান্য অভিযান চলমান থাকবে। গতকাল বুধবার গুলশান থানায় দায়িত্বে অবহেলা করায় একজন এসআই ও একজন কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
থানাগুলো পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা থানার অভ্যর্থনা কক্ষ, হাজতখানাসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনা ঘুরে দেখেন।
তিনি ডিউটি অফিসারসহ কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আরও তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেন।
পথে তিনি জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার চেকপোস্ট ও কালশী মোড় চেকপোস্ট পরিদর্শন করেন এবং দায়িত্বরতদের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়াও উপদেষ্টা মিরপুর থানা মোড় ও টেকনিক্যাল মোড়ে উপস্থিত সাধারণ জনগণের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের খোঁজ-খবর নেন ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। উপস্থিত জনতা বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক বলে মন্তব্য করেন।
এনজে
উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: ব হ ন র সদস য পর স থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
নির্দেশনার পাশাপাশি তৎপরতাও বাড়াতে হবে
নিরাপদ পরিবেশে ঈদুল ফিতর উদ্যাপনের জন্য এবং ঈদে বাসাবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের সার্বিক নিরাপত্তায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) যে ১৪টি নির্দেশনা জারি করেছে, তা গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করি। তারা বাসাবাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, ব্যাংক-বিমাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানে পাহারা জোরদার ও সার্বক্ষণিক নজরদারির ওপর জোর দিয়েছে।
আমরাও মনে করি, জননিরাপত্তার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি নাগরিকদেরও উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে। নাগরিকেরা কোথায় কী মালামাল রেখে যান, সেটা তো আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যদের জানার কথা নয়। কিন্তু ডিএমপি যখন নাগরিকদের এসব নির্দেশনা ও সদুপদেশ দিচ্ছে, তখনই ঢাকা শহরে র্যাবের নামে একের পর এক ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। বুধবার ভোরে র্যাবের নাম করে একদল ডাকাত ধানমন্ডির ৮ নম্বর সড়কে একটি ছয়তলা ভবনে প্রায় সাড়ে ৩৬ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে। এমনকি ঘটনার সময় পুলিশ অভিযান চালাতে গেলে ডাকাতেরা তাদের ওপর হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করে। পুলিশের ভাষ্য, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এর আগে ৯ মার্চ ও ১২ ডিসেম্বরও র্যাবের পরিচয়ে যথাক্রমে পুরান ঢাকা ও মোহাম্মদপুরে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
আবাসিক এলাকায় একের পর এক ডাকাতির ঘটনা কী বার্তা দেয়? র্যাব গঠিত হওয়ার পর থেকে এর কর্মকাণ্ড নিয়ে দেশের ভেতরে ও বাইরে তীব্র সমালোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্র এই বাহিনীর সাতজন সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। আওয়ামী লীগ সরকার সেই সমালোচনাকে হাওয়ায় উড়িয়ে দিতে গিয়ে নিজেরাই ‘উড়ে’ গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত পুলিশ সংস্কার কমিশন র্যাবের প্রয়োজনীয়তা পুনর্মূল্যায়নের সুপারিশ করেছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন পুরোপুরি বাতিলের কথা বলেছে। অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। বাংলাদেশে কোনো বাহিনী বাতিল বা পরিত্যক্ত ঘোষণার উদাহরণ আছে। পঁচাত্তরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জাতীয় রক্ষীয় বাহিনী ভেঙে দেওয়া হয়। তাদের সদস্যদের সেনাবাহিনীতে একীভূত করা হয়েছিল।
ঈদে বাড়ি বা সড়কে মানুষ নিজের নিরাপত্তার বিষয়ে অবশ্যই সজাগ থাকবে। এর অর্থ এই নয় যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরও বেশি তৎপর থাকবে না। সাম্প্রতিক কালে ছিনতাই, ডাকাতি, চুরিসহ সব ধরনের অপরাধই বেড়ে চলেছে। তদুপরি যে খবরটি আমাদের বিচলিত করে, সেটি হলো এসব অপরাধের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বর্তমান কিংবা সাবেক সদস্যদের যুক্ত থাকা। যখন রক্ষকই ভক্ষকের ভূমিকায় নামে, তখন আর জনগণ নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারে না।
ডিএমপি ঢাকার বাসিন্দাদের ঈদের সময় সজাগ থাকতে বলেছে। আশা করি, অন্যান্য বড় শহরেও জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঈদের সময় কেবল বাসাবাড়ি বা পর্যটন এলাকা নয়, চলাচলের পথও নিরাপদ রাখতে হবে। বিশেষ করে সড়কপথে ছিনতাই–ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। হাইওয়ে পুলিশকে এখানে আরও তৎপর হতে হবে। ঈদের সময় যানবাহনের অত্যধিক চাপ থাকে এবং কোনো কোনো সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এই সুযোগে ডাকাত ও ছিনতাইকারী চক্র বেপরোয়া হয়ে ওঠে। অনেক সময় পরিবহনকর্মীদের সঙ্গে তাদের যোগসাজশও থাকে। জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও নিজেদের সজাগ রাখুক।