চার ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ ফেরত দিল হামাস, ৬০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি
Published: 27th, February 2025 GMT
চার ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোরে হস্তান্তর করেছে হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ৬০০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দীকে ইসরায়েল মুক্তি দেওয়ার কিছু পরেই এই চার জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, চারজন জিম্মির মরদেহবাহী কফিন তারা পেয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের মরদেহ শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
রামাল্লা থেকে এএফপির সাংবাদিকেরা জানান, তাঁরা ৬০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি কারাবন্দীর দলকে বাস থেকে নেমে যেতে দেখেছেন। সম্ভবত তাঁদের গত সপ্তাহে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। জিম্মিদের সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক আচরণের’ অভিযোগে ইসরায়েল তাঁদের মুক্তি স্থগিত করেছিল।
মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের উল্লাস করতে দেখা গেছে। তাঁদের অনেকে বন্ধু বা স্বজনেরা কাঁধে চড়ে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন। অনেক নারীকে আনন্দে কাঁদতে দেখা যায়।
ইসরায়েলের কাছে হামাস যে চারজন জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে, তাঁরা হলেন ওহাদ ইয়াহালোমি, সাচি ইদান, ইতজিক এলগারাত ও সোলোমো মনসুর। ইসরায়েলি গণমাধ্যম তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত করেছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী গত শনিবার ছয় ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। তাঁদের সঙ্গে চার জিম্মির মৃতদেহও হস্তান্তর করে। বিনিময়ে ৬২০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরায়েলের। কিন্তু মুক্তি দেওয়ার সময় হামাস জিম্মিদের সঙ্গে ‘অসম্মানজনক আচরণ’ করছে অভিযোগ তুলে বন্দীদের মুক্তি স্থগিত করে ইসরায়েল।
হামাসের পক্ষ থেকে এর প্রতিবাদ জানিয়ে সেদিন জানানো হয়, আগে ফিলিস্তিনি কারাবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। তাহলেই কেবল গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করবে হামাস।
মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিরা স্বজনকে জড়িয়ে ধরেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোরে রামাল্লায় ৬০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি বন্দীকে বাসে নিয়ে আসা হয়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ম ম র মরদ হ ক র বন দ ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
গাড়ির শব্দে বিরক্ত হয় পাখিরা
সাতসকালে বারান্দায় এক কাপ চা নিয়ে দাঁড়ালে দারুণ এক শহরের দেখা মেলে। একটু সময় বাড়লেই দূর থেকে বাড়তে থাকে ট্রাফিকের শব্দ আর গাড়ির হর্ন। কখনো কখনো গাড়ির শব্দে আমাদের মেজাজ বিগড়ে যায়। এমন মেজাজ বিগড়ে যাওয়ার ঘটনা পাখিদের মধ্যেও দেখা যায় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিশ্বের নানা প্রান্তে পাখিরা শহরায়ণের কারণে বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ছে। নতুন এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, রাস্তাঘাটের গাড়ির অতিরিক্ত শব্দের কারণে পাখিরা বিরক্ত হয়। বিজ্ঞানীরা গ্যালাপাগোসের কিছু পাখির ওপর এই পরীক্ষা চালিয়ে গাড়ির শব্দের প্রভাব জানার চেষ্টা করেছেন। রাস্তাঘাটের গাড়ির শব্দের কারণে অনেক পাখিকে আগ্রাসী আচরণ করতে দেখা যায়। এই রাগের কারণে প্রায়ই কিছু পাখি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে লড়াইয়ে লিপ্ত হয়। গাড়ির শব্দে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় পাখিদের।
যুক্তরাজ্যের অ্যাঙ্গেলিয়া রাস্কিন ইউনিভার্সিটি (এআরইউ) ও অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনরাড লরেঞ্জ রিসার্চ সেন্টারের গবেষকেরা পাখির এই অদ্ভুত রাগের আচরণ সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করেছেন। পাখিদের আচরণের তথ্য অ্যানিমাল বিহেভিয়ার জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকেরা গান গাওয়া পাখি ইয়েলো ওয়ার্বলারদের ওপর দৃষ্টি দেন। গ্যালাপাগোসে এদের বাস অনেক। এই প্রজাতির উপস্থিতির কারণে গ্যালাপাগোসকে একটি প্রাকৃতিক জীবন্ত পরীক্ষাগার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
গবেষণার জন্য ফ্লোরিয়ানা ও সান্তা ক্রুজ দ্বীপের ওয়ার্বলারদের আবাসের আশপাশে নজর রাখেন। এসব পাখি বাস করে এমন ৩৮টি স্থানে একটি স্পিকার থেকে রেকর্ড করা গাড়ির শব্দ অনবরত বাড়াতে থাকেন। এসব পাখির বাস নিকটতম রাস্তার সংলগ্ন ছিল বা রাস্তা থেকে কমপক্ষে ১০০ মিটার দূরে ছিল।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, রাস্তাসংলগ্ন অঞ্চলে বসবাসকারী পাখিরা নিজেদের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। গাড়ির শব্দ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের আগ্রাসন স্তর বেড়ে যায়। আবার দেখা যায়, যেসব পাখি রাস্তা থেকে দূরে থাকে, তাদের রাগের মাত্রা কম। বিজ্ঞানী কাগলার আকচে বলেন, পাখিরা নিজের প্রতিরক্ষা হিসেবে গানকে সংকেত হিসেবে ব্যবহার করে। গাড়ির শব্দ পাখির সংকেতকে হস্তক্ষেপ করে। পাখিরা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় গাড়ির শব্দে, আর এতেই রেগে যায় পাখিরা।
গাড়ি শব্দ শুনে রাস্তার ধারের পাখিরা তাদের গানের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়িয়ে দেয়। গাড়ির শব্দের চেয়ে নিজেদের শব্দ বেশি জোরে শোনাতে চায় পাখিরা। গাড়ির বিকট শব্দের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে না বলেই শারীরিকভাবে আক্রমণাত্মক ভাব প্রদর্শন করে পাখিরা।
সূত্র: এনডিটিভি