জমিসংক্রান্ত মামলায় আগেই অস্থায়ী জামিনে ছিলেন নারী-পুরুষসহ ১৩ আসামি। স্থায়ী জামিনের জন্য মামলার সব আসামি বুধবার সকালে আদালতে হাজির হন। আদালত তাদের স্থায়ী জামিনের আবেদন মঞ্জুরও করেন। এতেই ঘটে বিপত্তি। আগে থেকে হাতে ধারালো দা, চাপাতি, ছুরি ও লাঠি নিয়ে আদালত চত্বরে ওত পেতে থাকেন মামলার বাদী। জামিন নিয়ে আদালত থেকে বের হওয়ার পরই আসামিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন বাদী ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী। পুলিশ, আইনজীবীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যেই তাদের কোপাতে ও পেটাতে থাকে। এতে পুরো আদালতপাড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। 

এক পর্যায়ে আত্মরক্ষার জন্য আসামিরা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অফিস কক্ষে গিয়ে আশ্রয় নেন। দ্বিতীয় দফায় সেখানে গিয়ে তাদের ওপর 
হামলা চালানো হয়। পরে ফিল্মি স্টাইলে আসামি মিলন মিয়া ও বাবুল মিয়া নামে সহোদরকে অপহরণ করে নিয়ে যান বাদী ও তাঁর ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গাজীপুর আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, জমিসংক্রান্ত ঘটনায় শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটী গ্রামের মো.

শহীদুল্লার ছেলে এসএম নাজমুল হক গত ৪ জানুয়ারি থানায় মামলা করেন। আসামি করা হয় 
একই এলাকার আব্দুল খালেক ও তাঁর ৩ ছেলেসহ ১৩ জনকে। মামলায় আগেই অস্থায়ী জামিন নেন তারা। পূর্ব নির্ধারিত দিন বুধবার সকালে তারা প্রত্যেকে স্থায়ী জামিনের জন্য গাজীপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এ হাজির হন। 

গাজীপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিচারক সেলিনা আক্তার তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ সময় বাইরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওত পেতে থাকেন বাদী নাজমুল হক ও তাঁর ভাড়াটে একদল সন্ত্রাসী। আসামিরা বের হওয়ার পরপরই তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। কাউকে কোপানো হয়, কাউকে দেওয়া হয় বেদম পিটুনি। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ত্রাসীদের ভয়ে আদালতপাড়া স্তব্ধ হয়ে যায়। পরে আসামিরা আত্মরক্ষার জন্য আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন। সন্ত্রাসীরা দ্বিতীয় দফায় সেখানে গিয়েও হামলা চালায়। ওই অফিসের তিন কর্মচারী মতিউর রহমান, নাঈম হাসান ও আইয়ূব আলীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম বলেন, মিলন মিয়া ও বাবুল মিয়াকে দুপুর ১২টার দিকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। অজ্ঞাত কোনো স্থানে নিয়ে তাদের ওপর চালানো হয় মধ্যযুগীয় নির্যাতন। পরে বিকেল ৩টার দিকে আইনজীবী সমিতির ফটকের সামনে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়।

মামলার প্রধান আসামি এনামুল হক বলেন, ‘জামিন পাওয়ার পর আমরা আদালত থেকে বের হয়ে বাদী নাজমুল ও তাঁর লোকজনকে দেখতে পাই। তাদের প্রত্যেকের হাতেই ছিল দেশীয় অস্ত্র। আমরা ১৩ জনই আহত হয়েছি।’ 

গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান বলেন, ঘটনার পর থেকেই পুলিশ ওই সন্ত্রাসীদের ধরতে কাজ করছে। তাদের ধরতে না পারলে কেউ নিরাপদ নয়। রাজবাড়ীতে আসামি ছিনিয়ে নিল স্বজন, আটক ৬রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, জেলায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওপর হামলা চালিয়ে ফরিদ শেখ নামে মাদক মামলার এক আসামিকে পরিবারের লোকজন ছিনিয়ে নিয়েছেন। এ সময় ওয়াহিদুল হাসান নামে এক উপপরিদর্শকসহ দুই কনস্টেবল আহত হন। বুধবার রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের কাজীবাধা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ফরিদ শেখ কাজীবাধা গ্রামের মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে ৯টি মাদক মামলা আছে।

সূত্র জানায়, সকালে ডিবি পুলিশের একটি দল কাজীবাধা এলাকায় ফরিদ শেখের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৩১০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও চার বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে। ফরিদকে হাতকড়া পরিয়ে গাড়িতে তোলার সময় পরিবারের সদস্যরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়। তারা হলেন– আসামি ফরিদের দুই সহোদর আবুল কালাম আজাদ ওরফে পিনু শেখ ও মিন্টু শেখ, ভাইয়ের স্ত্রী শেফালী বেগম। পরিবারের অপর তিন সদস্য– নাসিমা বেগম, শিমু বেগম ও সোহাগী বেগম। পালিয়ে যাওয়া আসামি ফরিদ শেখ ও তাঁর স্ত্রীকে আটকের চেষ্টা চলছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফর দ শ খ দ র ওপর আইনজ ব র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে পার্বত্য অঞ্চলে নেটওয়ার্ক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে: রবি

দেশের অন্যতম মোবাইল অপারেটর রবি বলছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের অনেক জায়গায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে রবির নেটওয়ার্কে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত তিন মাসে বিভিন্ন স্থানে দুর্বৃত্তরা রবির মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ফাইবার কেটে ফেলেছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় অর্ধশত টাওয়ার। নিরাপত্তাকর্মীদের হুমকি দেওয়া, অপহরণের ঘটনাও ঘটছে বলে জানিয়েছে রবি।

আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পার্বত্য অঞ্চলে নেটওয়ার্ক পরিস্থিতি নিয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেছে রবি। নেটওয়ার্ক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রবি বলেছে, অপরাধী চক্র কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীকে অপহরণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে টাওয়ারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না টাওয়ার কোম্পানি ইডটকো বাংলাদেশ লিমিটেড। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে কাজ করছে। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

রবি বলেছে, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, লক্ষ্মীছড়ি, পানিছড়ি, দিঘিনালা, মানিকছড়ি, নানিয়ার চড়, রাওজান, ফটিকছড়ি, বাঘাইছড়িসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় কিছু অপরাধী গোষ্ঠী ৫১টি মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে ও ফাইবার কেটে ফেলেছে। প্রায় তিন মাস ধরে চলতে থাকা এ ধরনের কার্যকলাপের পেছনে চাঁদাবাজির উদ্দেশ্য থাকতে পারে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপরাধী চক্রের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে শুধু খাগড়াছড়িতেই ৩২টি টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি সচল করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এখনো বন্ধ রয়েছে ২৫টি টাওয়ার।

এ ছাড়া সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) পার্বত্য তিন জেলার অন্তত ২৬টি টাওয়ারের ফাইবার কেটে ফেলেছে সন্ত্রাসীরা।

পার্বত্য চট্টগ্রামে রবির মোবাইল টাওয়ারের সরঞ্জাম এভাবে ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষোভ থেকে হা–মীমের কর্মকর্তাকে হত্যা: র‌্যাব
  • আইসিটির প্রসিকিউটর সিলভিয়ার নিয়োগ বাতিল
  • যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০টির বেশি ভিসা বাতিল, অধিকাংশই ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের: মার্কো রুবিও
  • সমালোচনার মুখে আইসিটির প্রসিকিউটর সিলভিয়ার নিয়োগ বাতিল
  • প্রতারণার মামলায় ইথার ফারিয়েলের জামিন আবেদন নাকচ
  • নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে পার্বত্য অঞ্চলে নেটওয়ার্ক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে: রবি
  • আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও চার নতুন প্রসিকিউটর
  • পটুয়াখালীতে কলেজছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার দুই আসামি তিন দিনের রিমান্ডে
  • তারেক রহমানের নির্দেশে সেই আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা
  • ফিলিস্তিনিদের সমর্থন: যুক্তরাষ্ট্রে তুর্কি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার, ভিসা বাতিল