মেহেরপুর গাংনী উপজেলায় ট্রাক্টরের ধাক্কায় ঈদগাহের গেট ভেঙে যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে হৃদয় হোসেন নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। বুধবার দুপুরে রামনগর গ্রামের রামনগর বাজার-সংলগ্ন তিন রাস্তার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত হৃদয় হোসেন (২২) উপজেলার চরগোয়াল গ্রামের রিফুজিপাড়ার সাহাদত হোসেনের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রামনগর গ্রামের বাসিন্দা মিরাজুল ইসলাম সম্প্রতি একটি নতুন ট্রাক্টর কিনেছেন। বুধবার সকালে ট্রাক্টরটি তাঁর ছেলে সামিউল্লাহ চালিয়ে চরগোয়াল গ্রামে নিয়ে যায়। এ সময় ট্রাক্টরের ধাক্কায় চরগোয়াল গ্রামের ঈদগাহের গেট ভেঙে যায়। এ ঘটনায় চরগোয়াল গ্রামের লোকজন ওই ট্রাক্টরের চাবি ছিনিয়ে নেয়। বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ওইদিন দুপুরে রামনগর গ্রামে সালিশ বসে। সালিশ চলাকালে দুই পক্ষের বাগ্‌বিতণ্ডার এক পর্যায়ে লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে হৃদয় হোসেনের মাথায় লাঠির আঘাত লাগলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে হৃদয়ের মৃত্যুর খবর চরগোয়াল গ্রামে পৌঁছালে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী রামনগরে গিয়ে একটি মোটরসাইকেল ওয়ার্কশপ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এতে কয়েকটি মোটরসাইকেলসহ ওয়ার্কশপটি ভস্মীভূত হয়। খবর পেয়ে মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল করিম ও গাংনী থানার ওসি বানী ইসরাইলের নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

চরগোয়াল গ্রামের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম মন্টু ও স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার শুরুতে স্থানীয় ফাঁড়ির এক দারোগাকে ফোন করি। তিনি ঘটনাস্থলে আসার কথা বলেও না আসায় এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি এলে হয়তো বড় ধরনের অঘটন ঘটত না।

ঘটনা নিশ্চিত করে গাংনী থানার ওসি বানী ইসরাইল বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র‍্যাব পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে। নিহত হৃদয়ের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র মনগর স ঘর ষ এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশে ঢুকে জেলেদের হামলা করার অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে

বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে ঢুকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা জেলেদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা জানান, বিএসএফ জেলেদের মারধর করে তিনটি নৌকা নিয়ে গেছে। 

বিজিবি বলছে, তারা জানতে পেরেছে, বাংলাদেশি জেলেরা ভারতের সীমান্তে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। বিএসএফ তাদের তিনটি নৌকা আটকে দিয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সীমান্ত নদী কালিন্দির বয়ারসিং সংলগ্ন উলোখালীর চর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।  

আরো পড়ুন:

বগুড়ায় হামলায় ২ পুলিশ আহত

চট্টগ্রামের ডিসি হিলে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান মঞ্চ ভাঙচুর, আটক ৬

হামলার শিকার জেলেরা হলেন- শ্যামনগর উপজেলার টেংরাখালী গ্রামের রমজান আলী, শাহাজান আলী, শাহাদাৎ হোসেন, মো. শাহাজান, আতাউর রহমান, মো. আব্দুল, মানিকপুর গ্রামের কেরামত ও কৈখালীর নুর মোহাম্মদ।

হামলার শিকার শাহাদাৎ হোসেন জানান, পশ্চিম সুন্দরবনের কৈখালী স্টেশন থেকে পাস (অনুমতিপত্র) নিয়ে চারদিন আগে তারা সুন্দরবনে যান। তিনটি নৌকার ১২ জন জেলে দুইদিন ধরে বাংলাদেশের সীমানাভুক্ত উলোখালীর চরে পাটা জাল পেতে মাছ ধরছিলেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুইটি স্পিডবোট নিয়ে বিএসএফ সদস্যরা সেখানে যান ও তাদের মারধর শুরু করেন।

তিনি আরো জানান, তারা নদীতে পেতে রাখা জাল ও সেখানে থাকা নৌকা ফেলে বনের মধ্যে ঢুকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। নৌকা নিয়ে পরে বিএসএফ সদস্যরা চলে যায়।

শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ লাল্টু জানান, বিএসএফের মারধরের শিকার আট জেলের মধ্যে ছয়জন তার এলাকার। বিএসএফ নৌকা নিয়ে উলোখালীর চর থেকে তাড়িয়ে দেওয়ায় তারা পায়ে হেঁটে বনের মধ্য দিয়ে লোকালয়ে ফিরছেন। সেখানে পেতে রাখা জাল উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে।

সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মশিউর রহমান বলেন, “বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশী সীমানায় ঢুকে তিনটি নৌকা নিয়ে গেছে বলে শুনেছি।” 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সাতক্ষীরা ১৭ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহরিয়ার রাজিব বলেন, “আমরা যতদূর খবর পেয়েছি, মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশি জেলেরা ভারতের সীমানায় প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। তখন বিএসএফ তাদের তিনটি নৌকা আটকে দিয়েছে। হামলা বা গুলির কোন ঘটনা সেখানে ঘটেনি।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশে ঢুকে জেলেদের হামলা করার অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে