বিলিয়নেয়াররা ট্রাম্পে আসক্ত কেন!
Published: 27th, February 2025 GMT
সব ধরনের বিপরীত বিশ্বাস থাকা সত্ত্বেও গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট পদে জয়লাভ করেছেন ট্রাম্প। তার পর থেকে ধনকুবেররা ডোনাল্ড ট্রাম্পের চারপাশে ঘুরঘুর করছে। তারা ট্রাম্পের শুধু দোসর নয়; বিষয়টি ওয়াশিংটন পোস্টের সাবেক রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট অ্যান টেলনেসের জানা উচিত।
গত মাসে তাঁর আঁকা কার্টুনটি পত্রিকাটির সম্পাদক প্রকাশ করতে অস্বীকার করেছিলেন। এর জের ধরে টেলনেস চাকরি ছেড়ে দেন। ওই কার্টুনে টেলনেস অ্যামাজন ও ওয়াশিংটন পোস্টের মালিক জেফ বেজোস, লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের মালিক প্যাট্রিক সুন-শিয়ং, ওপেনএআই বিলিয়নেয়ার স্যাম অল্টম্যান, মেটার মার্ক জাকারবার্গ, মিডিয়া জায়ান্ট ডিজনি ও আমেরিকান ব্রডকাস্টিং কোম্পানির প্রতিনিধিত্বকারী মিকি মাউস হয় প্রেসিডেন্টের সামনে হাঁটু গেড়ে বসেন অথবা নতজানু হয়ে যাওয়ার চিত্র উঠে এসেছে।
পদত্যাগ করার সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে টেলনেস লিখেছেন, ‘এ ধরনের প্রেস সংস্থার মালিকের হাতেই মুক্ত সংবাদপত্রের সুরক্ষা ন্যস্ত এবং একজন স্বৈরাচারীর অনুগ্রহ পেতে চেষ্টা করা শুধু সেই মুক্ত সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করবে।’
ট্রাম্পের অনুগ্রহ পেতে বিলিয়নেয়ার ও মেগা করপোরেশনের প্রচেষ্টার কারণ নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থ ও সরকারি চুক্তি রক্ষা করা। আর টেলনেস ও অন্য সমালোচকরা যাতে ‘জি হুজুরে’ পরিণত হন, সেই লক্ষ্যে তারা সক্রিয়।
ধনী ও বিশাল করপোরেশনগুলোর শেষ লক্ষ্য ট্রাম্পের সঙ্গে থেকে নিজেদের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রাখা। যদি ফেডারেল সরকারের অর্থাগারের আরও বেশি শেয়ার বা আরও বেশি ক্ষমতা লাভের জন্য একটু বাঁকানো হাঁটু বা প্রশংসার দরকার পড়ে, তবে তাই হোক।
বিলিয়নেয়ার শ্রেণি প্রকৃতপক্ষে ফেডারেল সরকারের অগ্রাধিকারগুলো পুনরায় সাজিয়ে নিতে ট্রাম্পকে ব্যবহার করছে। তাদের ক্ষেত্রে ট্রাম্প যেন শর্তাদি জুড়ে না দেয় এবং কর্তৃত্ব না চালাতে পারে, তা খুঁজে বের করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো গত এক বছরে ট্রাম্পের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের দিকে নজর দেওয়া। ইলন মাস্ক, মিরিয়াম অ্যাডেলসন ও লিন্ডা ম্যাকমোহনের মতো লাখ লাখ মাল্টি-বিলিয়নেয়ার ট্রাম্পের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। নির্বাচন-পরবর্তীকালে মাস্ক, অল্টম্যান, বিবেক রামস্বামী ও অ্যাপলের টিম কুক, অ্যামাজন, মেটা, ব্যাংক অব আমেরিকা ও গোল্ডম্যান স্যাকসের মতো ট্রিলিয়ন ডলার করপোরেশনগুলোর সঙ্গে তারা ট্রাম্পের ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অর্থ দেন। গত কয়েক মাসে ডিজনি-এবিসি ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের জন্য ট্রাম্পের করা একটি মানহানির মামলা নিষ্পত্তি করেছে। আবার ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি বিদ্রোহের পর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম থেকে ট্রাম্পকে নিষিদ্ধ করার জন্য মেটা ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে নিষ্পত্তি করেছে।
এ ধরনের বিপুল পরিমাণ অর্থ জোগান দেওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার মধ্য দিয়ে অন্তত তারা ট্রাম্পের প্রশাসনে প্রধান প্রধান ভূমিকার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। অবশ্যই তাদের পদক্ষেপের অন্যান্য সম্ভাব্য কারণ রয়েছে। যেমন তাদের ব্যবসার জন্য সরকারি চুক্তিতে আরও প্রবেশাধিকার বা প্রেসিডেন্টের কাছে অনায়াসে পৌঁছা। কেননা, তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নীতি গ্রহণ করেন। তাদের কারণ যা-ই হোক, এই পুঁজিপতি ও করপোরেশনগুলো শুধু সম্মান প্রদর্শনের জন্য ট্রাম্পকে এই অর্থ দিচ্ছে না।
কারণ দ্বিতীয়বার ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকলে তারা তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্যের কাছাকাছি যেতে পারে। একটি পুঁজিবাদী ব্যবস্থা, যাকে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারের কাছে জবাবদিহি করতে হয় না; মার্কিন জনগণ তাদের থামাতে গিয়ে খুব বিভ্রান্ত এবং ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সব ধরনের উপস্থিতি সত্ত্বেও নার্সিসিস্টিক ডাকাত ব্যারন অভিজাতরা ট্রাম্প ও মার্কিন সরকারকে তাদের পুতুল বানানোর প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
ডোনাল্ড আর্ল কলিন্স: ওয়াশিংটন ডিসির আমেরিকান ইউনিভার্সিটির প্রফেসরিয়াল লেকচারার: আলজাজিরা থেকে ভাষান্তর ইফতেখারুল ইসলাম
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য সরক র করপ র ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
মিয়ানমারে ৫ হাজার কারাবন্দিকে মুক্তি
নববর্ষ উপলক্ষে প্রায় ৪ হাজার ৮৯৩ বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার। বৃহস্পতিবার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নতুন বছর উপলক্ষে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লেইং ৪ হাজার ৮৯৩ বন্দিকে ক্ষমা করেছেন।
মুক্তি পাওয়া বন্দিদের মধ্যে কতজন রাজনৈতিক বন্দি, তা এখনও পরিষ্কার নয়। মিয়ানমারের স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা পলিটিক্যাল প্রিজনার্স নেটওয়ার্ক বলেছে, জান্তাপ্রধানের ঘোষণায় কমপক্ষে ২২ রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
দেশটির বিভিন্ন কারাগারে গত সপ্তাহ পর্যন্ত প্রায় ২২ হাজার ১৯৭ রাজনৈতিক বন্দিকে আটক রাখা হয়। এই বন্দিদের মাঝে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া দেশটির গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চিও রয়েছেন। মুক্তি পাওয়া বন্দিরা আইন অমান্য করলে বাকি সাজা ভোগ করতে হবে। ইরাবতী।