চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ ধাম মহাতীর্থে তিন দিনব্যাপী শিব চতুর্দশী মেলার দ্বিতীয় দিনে কয়েক লাখ পুণ্যার্থীর আগমন ঘটেছে। গতকাল বুধবার মেলার দ্বিতীয় দিন ছিল শিব চতুর্দশীর পুণ্য তিথি। এই তিথি ঘিরে বিপুল সংখ্যক মানুষের আগমন ঘটলে ভিড়ের চাপে তিনজন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম জেলার চকরিয়ার বান্টু দাস (৫০); বাকি দু’জন নারী। তাদের বয়স ৫৫ ও ১৮ বছর; পরিচয় জানা যায়নি। 

সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আয়োজকরা জানান, বুধবার সকাল ১০টা ১১ মিনিট ২৫ সেকেন্ডে শুরু হয়ে তিথি থাকবে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫৯ মিনিট ৫০ সেকেন্ড পর্যন্ত। এ সময় চন্দ্রনাথ ধামে ১০-১২ লাখ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়।

তিন দিনের এ মেলায় পুণ্যার্থীরা যেন নিরাপদে তীর্থ দর্শন ও পূজা-অর্চনা সম্পন্ন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে দুপুরে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কাজ করছেন মেলা কমিটির নেতারা। সরেজমিন দেখা যায়, পুণ্য তিথি ঘিরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পুণ্যার্থীরা ধামে এসেছেন। বেশি পুণ্যার্থীর আগমন ঘটে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর। 

ভক্তরা মহাতীর্থে এসে নানা স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। সীতাকুণ্ড মোহন্ত আস্তানায় আশ্রয় নেওয়া পুণ্যার্থী সন্ধ্যা সচন্দা দাশ বলেন, বরিশাল থেকে তিনি পরিবারের সঙ্গে এসেছেন এই মহাতীর্থে শম্ভুনাথ, চন্দ্রনাথ দর্শন করতে। শিব চতুর্দশী তিথি শুরু হলে ব্যাসকুণ্ডে পুণ্যস্নান শেষে মন্দিরে পূজা ও তীর্থ দর্শন করে মনের আশা পূরণ করতে চান। আরেক পুণ্যার্থী বলরাম রায় বলেন, ‘চন্দ্রনাথ ধামে আসতে পারা পরম সৌভাগ্যের বিষয়। আমি আসতে পেরেছি।’ 

পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, মেলাকে কেন্দ্র করে এদিন পুরো তীর্থভূমিতে বসেছে অনেক দোকানপাট। সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ ধাম পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক চন্দন দাশ বলেন, ‘দেশ-বিদেশ থেকে আগত পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করছি।’ 

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফকরুল ইসলাম বলেন, মেলাটি সুষ্ঠু করতে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কমিটির সঙ্গে কাজ করছেন।  

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মাধবপুরে কৃষি রাবার ড্যামে দর্শনার্থীদের ভিড়

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী রাবার ড্যাম এখন দর্শনার্থীদের বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দু পরিণত হয়েছে। ঈদের দিন সকাল থেকে সোনাই নদীর সবুজ শ্যামল তীরে দর্শনার্থীরা দলবেঁধে আসতে শুরু করেন। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে মানুষের ভিড় আরও বাড়তে দেখা যায়। ঈদের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সকাল থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় আরও বাড়ছে। সকাল থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজনের আগমন ঘটেছে রাবার ড্যামে।

রাবার ড্যামের কর্মকর্তারা বলছেন, চৌমুহনী রাবার ড্যামকে পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা সৃষ্টি করে দিতে পারলে প্রতি বছর এখানে হাজারও দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটবে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ঈদ ও বিভিন্ন জাতীয় দিবসে হাজার হাজার মানুষ সোনাই নদীর পাড়ে রাবার ড্যামে ভিড় করেন। সোনাই নদীর রাবার ড্যামটি অকোজো হয়ে পড়ায় এখন নদীতে পানি ধরে রাখা যাচ্ছে না। যতটুকু পানি আছে তাতেই দর্শনার্থীরা খুশি।

চৌমুহনী রাবার ড্যাম সভাপতি সায়েদুর রহমান জানান, চৌমুহনী ও বহরায়  সোনাই নদীর ওপর প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৩ সালে রাবার দিয়ে বাঁধ তৈরি করা হয়। খরা মৌসুমে রাবার ফুলিয়ে নদীতে পানি জমাট করা হয়। শুষ্ক মৌসুমে নদী তীরবর্তী ২০/২৫টি গ্রামের কমপক্ষে ৫ হাজার কৃষক এই পানি ব্যবহার করে বোরো ধানসহ বিভিন্ন রবি শস্য চাষাবাদ করে থাকেন। এ ছাড়া ঈদ ও বিভিন্ন জাতীয় দিবসে ছুটির দিনে নদীতে নেমে মানুষ সাঁতার কাটেন। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা গেলে এ খাত থেকে প্রচুর টাকা আয় করা সম্ভব। কারণ, মাধবপুরে স্থানীয়ভাবে বিনোদনের জন্য এটি একটি ভাল জায়গা। আমরা এ ব্যাপারে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাইব।

স্থানীয় চৌমুহনী ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুর রহমান সোহাগ বলেন, প্রতি বছর ঈদ ও নববর্ষে এবং জাতীয় দিবসে দর্শনার্থীদের পদচারণায় রাবার ড্যাম নদী মুখরিত হয়ে উঠে।। আগত এ সকল দর্শনার্থীরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগসহ নদীর স্বচ্ছ জলে গা ভাসিয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতে ওঠেন। নদীতে কেউ গোসল করছেন, কেউ ছবি তুলছেন, কেউ নৌকায় চড়ে নদীর ঢেউ উপভোগ করছেন। মানুষের আগমনকে ঘিরে এখানে অনেক দোকানপাট গড়ে ওঠে।

বিজয়নগর ইসলাম পুর থেকে রাবার ড্যামে বেড়াতে আসা রফিকুল নামে একজন দর্শনার্থী বলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে পরিবার নিয়ে তিনি রাবার ড্যাম সোনাই নদী দেখতে এসেছেন। তার বেশ ভালো লাগছে।

মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহেদ বিন কাশেম বলেন, চৌমুহনী রাবার ড্যামে অনেক দর্শানর্থীদের আগমন ঘটে। এটির পরিবেশসম্মত উন্নয়ন করতে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাধবপুরে কৃষি রাবার ড্যামে দর্শনার্থীদের ভিড়