বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতা কমা সত্ত্বেও অগ্রগতি বাংলাদেশের
Published: 26th, February 2025 GMT
বিশ্বজুড়ে মানুষের স্বাধীনতা চর্চার অধিকার কমার মধ্যেও ২০২৪ সালে স্বাধীনতার সূচকে অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশের। আগের বছরের চেয়ে ৫ বেড়ে বাংলাদেশের স্কোর এখন ১০০-এর মধ্যে ৪৫। ২০২৩ সালে এ স্কোর ছিল ৪০। বুধবার প্রকাশিত ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ফ্রিডম হাউসের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
১৯৫টি দেশ ও ১৩টি অঞ্চলের রাজনৈতিক অধিকার এবং নাগরিক স্বাধীনতা চর্চা মূল্যায়ন করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। রাজনৈতিক অধিকার চর্চায় বাংলাদেশের স্কোর ৪০-এর মধ্যে ১৬ এবং নাগরিক স্বাধীনতা চর্চায় বাংলাদেশের স্কোর ৬০-এর মধ্যে ২৯।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে টানা ১৯ বছরের মতো বিশ্বজুড়ে মানুষের স্বাধীনতা চর্চার অধিকার কমেছে। এর মধ্যেই অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশের। ৬০টি দেশে রাজনৈতিক চর্চার অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা চর্চার অধিকার কমেছে। আর উন্নতি হয়েছে ৩৪টি দেশে। যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা কমেছে, সেসব দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য– এল সালভাদর, হাইতি, কুয়েত ও তিউনিসিয়া। সবচেয়ে বেশি উন্নতি হওয়া চার দেশের মধ্যে তিনটিই দক্ষিণ এশিয়ার। দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা। অন্য দেশটি সিরিয়া।
তবে স্বাধীনতার সূচকে অগ্রগতি হলেও রাজনৈতিক অধিকার চর্চা ও নাগরিক স্বাধীনতার চর্চায় বাংলাদেশ এখনও ‘আংশিক স্বাধীন’ দেশের শ্রেণিতেই রয়ে গেছে। বাংলাদেশে গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্রায় ১৫ বছর বাংলাদেশের ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে ছিলেন। বাংলাদেশ ছাড়াও গত বছরের ডিসেম্বরে সিরিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদের পতন হয়। ইসলামপন্থি যোদ্ধারা তাঁকে উৎখাত করে। তিনি দেশে ছেড়ে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন।
ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ও সিরিয়া প্রসঙ্গে বলা হয়, যদিও উভয় দেশেই সরকার পতনের পর দ্রুত নাগরিক স্বাধীনতার মান উন্নত হয়েছে। তবে রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বে এ উন্নয়ন দেখতে আরও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগের সবার হাতে রক্ত, সেই দলে সাকিবের যাওয়া ঠিক হয়নি: প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগের সবার হাতে রক্তের দাগ, সেই দল থেকে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নির্বাচন করা ঠিক হয়নি।
শুক্রবার দুপুরে মাগুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রেস সচিব বলেন, মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান ক্রিকেট খেলাকে সর্বোচ্চ উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। আবার সেই সাকিব আল হাসান আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীর হাতে রক্ত, খুন, গুমে জড়িত, ব্যাংক ডাকাতিতে জড়িত। একজন বিশ্বসেরা ক্রিকেটার হয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন সাবেক এ সংসদ সদস্য। আওয়ামী লীগ জুলাই আন্দোলনে তিন-চার হাজার ছাত্র-জনতাকে খুন করেছে।
ইলিয়াস আলীর কথা মনে করিয়ে তিনি বলেন, তিনি ২০১২ সালে গুম হয়েছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচন কীভাবে হয়েছিল সাকিব আল হাসান ভালোভাবে জানতেন।
সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে সাকিব আল হাসান বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়া তো ভুল নয়।
এ প্রসঙ্গ টেনে প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশের যেকোনো মানুষের রাজনৈতিক দলে যোগদান করা ভুল না। বরং আনন্দের বিষয়। তবে ভুল তথ্য নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলে যোগদান করলেন, জেনে বুঝে কি জঙ্গি পার্টিতে যোগদান করবেন? মাগুরায় ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত একটি নির্বাচনও কি ঠিকভাবে হয়েছে? সব ছিল সাজানো নির্বাচন। ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টের আন্দোলন সারা দেশের মতো মাগুরায়ও হয়েছে। আন্দোলনে নির্মমভাবে তিন-চারটা ছেলে মারা গেছে। সাকিব তো তখন মাগুরার সংসদ সদস্য। তিনি কি আন্দোলনে নিহত মানুষের কথা জানতেন না? সাকিব কি কখনও বলেছেন, আমি সরি, আমার নির্বাচনী এলাকার মধ্যে নিহত হয়েছে, আমি এর নিন্দা জানাই?
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালে মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচন কাভার করতে এসেছিলাম। নির্বাচনী এলাকায় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। একটা সাজানো নির্বাচন ছিল। আগে থেকে বোঝা যাচ্ছিল কে জিতবে কে হারবে। অনেক রাজনৈতিক প্রার্থী এক-দুই মাস ধরে নির্বাচনী প্রচারণা করেন। সেখানে সাকিব আগে থেকে জানতেন, তার হয়ে কেউ তাকে নির্বাচনে বিজয়ী করে দেবে।
শফিকুল ইসলাম বলেন, মাগুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থানান্তরিত হচ্ছে না। হাসপাতালটির উন্নয়নে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের অন্য একটি ভালো মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। মাগুরা মেডেকিলে কলেজ হাসপাতালটি খুবই ভালো মানের। ইতোমধ্যে মেডিকেল কলেজটি ফলাফলের দিক থেকে চারবার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন- মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ অহিদুল ইসলাম, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল হাসান, সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহে কাফীসহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা।