চারটি পদ ছাড়া জাতীয় নাগরিক কমিটির সব কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
Published: 26th, February 2025 GMT
আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, মুখপাত্র ও মুখ্য সংগঠক ছাড়া জাতীয় নাগরিক কমিটির অন্যান্য অর্গানোগ্রাম, নির্বাহী, সেল ও সার্চ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির ১১তম সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আসন্ন রাজনৈতিক দলে যোগদানকারী সব কেন্দ্রীয় সদস্যের সদস্যপদ ২৮ ফেব্রুয়ারি দল ঘোষণার আগপর্যন্ত বহাল থাকবে। রাজনৈতিক দলে অন্তর্ভুক্তির সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সদস্যের সদস্যপদ বাতিল হিসেবে গণ্য হবে। দলে যোগ দিচ্ছেন না, এমন সদস্যদের সদস্যপদ বহাল থাকবে।
আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, মুখপাত্র ও মুখ্য সংগঠক ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী ১৫ দিন অনানুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁদের উদ্যোগে জাতীয় নাগরিক কমিটির তিনজনের আনুষ্ঠানিক ফোরাম পরবর্তী অর্গানোগ্রাম নির্ধারণ করবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় ২৮ ফেব্রুয়ারি নতুন দল আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক কমিটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবে। এরপর থেকে নাগরিক কমিটি সিভিল-পলিটিক্যাল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে থেকে যাবে। আর কোনো দল গঠনের উদ্যোগ নেবে না। আগামী দিনে তারা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জনগণের স্বার্থে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৬২০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দীর মুক্তি ছাড়া কোনো আলাপ নয়: হামাস
আগে ফিলিস্তিনি কারাবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। তাহলেই কেবল গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করবে হামাস।
হামাস নেতা বাসেম নাঈম গতকাল রোববার এ কথা বলেন।
হামাসের রাজনৈতিক শাখার সদস্য নাঈম রয়টার্সকে বলেন, ‘মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে শত্রুদের সঙ্গে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কোনো ধরনের আলোচনার শর্ত হচ্ছে আগে ৬২০ বন্দীকে মুক্তি দিতে হবে, যাদের ৬ ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তি এবং ৪ জিম্মির মৃতদেহ ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। ছয় জিম্মিকে ও চার মৃতদেহ গত শনিবারই হস্তান্তর করা হয়েছে।’
বাসেম নাঈম জোর দিয়ে আরও বলেন, চুক্তিতে সেসব শর্ত থাকে, শত্রুরাও যেন তা মেনে চলে, তা মধ্যস্থতাকারীদের নিশ্চিত করতে হবে।
শনিবার ছয় ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। তাদের সঙ্গে চার জিম্মির মৃতদেহও হস্তান্তর করা হয়। বিনিময়ে ৬২০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরায়েলের। কিন্তু ইসরায়েল ফিলিস্তিনি কারাবন্দীদের মুক্তি পিছিয়ে দিয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে গতকাল বলা হয়েছে, ‘পরবর্তী জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এবং জিম্মি মুক্তির সময় অসম্মানজনক অনুষ্ঠান বাতিল না করা পর্যন্ত ৬২০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দী ও বন্দীদের হস্তান্তর করার অপেক্ষা করবে ইসরায়েল।’
ইসরায়েলের অভিযোগ, সম্প্রতি জিম্মি মুক্তি দেওয়ার সময় হামাস জিম্মিদের সঙ্গে ‘অসম্মানজনক আচরণ’ করছে। জাতিসংঘের কর্মকর্তারাও বলেছেন, জিম্মিদের সম্মান রক্ষা পায়নি, যা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।
হোয়াইট হাউস থেকেও ইসরায়েলের সিদ্ধান্তে সমর্থন দেওয়া হয়েছে। গতকাল হোয়াইট হাউস থেকে বলা হয়, ‘হামাস ইসরায়েলি জিম্মিদের সঙ্গে বর্বর আচরণ করেছে। (ফিলিস্তিনি কারাবন্দীদের মুক্তি) পিছিয়ে দেওয়া এর যথাযথ জবাব হয়েছে।’
এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র ব্রায়ান হিউস বলেন, ‘হামাস সম্পর্কে ইসরায়েল যে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেবে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাতেই সমর্থন দিতে প্রস্তুত আছেন।’
হামাস জিম্মিদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। ওই অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে মুখোশ পরা হামাসের যোদ্ধারা জিম্মিদের একটি মঞ্চে নিয়ে যান। এ সময় সেখানে উপস্থিত গাজাবাসীর উদ্দেশে জিম্মিদের হাত নাড়াতে এবং বক্তব্যও দিতে দেখা যায়। জিম্মিদের মৃতদেহের কফিনগুলোও ভিড়ের ভেতর দিয়ে আনা হয়।
ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি পিছিয়ে দেওয়ায় বন্দীদের পরিবারগুলোর মধ্য হতাশা নেমে এসেছে।
আরও পড়ুনছয় জিম্মিকে ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিলেন না নেতানিয়াহু২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইসরায়েলের কারাগার থেকে শনিবার মুক্তি পাবেন ভাই, গাজায় সেই অপেক্ষায় ছিলেন ঘাসান ওয়াশাহি। তিনি বলেন, ‘প্রতিবার কারাগার থেকে কে কে মুক্তি পাচ্ছেন, তার একটি তালিকা দেওয়া হয়। আমরা অপেক্ষা করি, আশায় থাকি, এবার হয়তো আমার ভাই ইসলামের নাম আসবে, কিন্তু কখনো তাঁর নাম তালিকায় থাকে না।’
তাঁর মা ছেলের মুক্তির আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন বলেও জানান ঘাসান ওয়াশাহি। তিনি বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত যখন মুক্তির তালিকায় তাঁর নাম এল, ইসরায়েল চুক্তিই স্থগিত করে দিল।’
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের ৪২ দিনে হামাসের মোট ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে।