Prothomalo:
2025-02-26@21:44:14 GMT

শাহরুখের হাত ধরে ফিরছেন দীপিকা

Published: 26th, February 2025 GMT

মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটাচ্ছেন দীপিকা পাড়ুকোন। গত সেপ্টেম্বরে মা হয়েছেন দীপিকা। মেয়ে দুয়াকে নিয়েই এখন তাঁর সময় কাটছে। শোনা যাচ্ছে, ‘পাঠান ২’ ছবিতে আবার শাহরুখ খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে ফিরছেন এই তারকা। স্পাই এজেন্ট ‘রুবিনা’র চরিত্রে আবার চমকে দেবেন দীপিকা। তাঁর চরিত্রটিকে ঘিরে আরও চমক থাকছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে যশরাজ ফিল্মস।

২০২৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল শাহরুখ খান ও দীপিকা পাড়ুকোন অভিনীত ছবি ‘পাঠান’। সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত স্পাই ইউনিভার্সের এই ছবি বক্স অফিসে সুনামি এনেছিল বললে বাড়াবাড়ি হবে না।

‘পাঠান’–এ দীপিকা। আইএমডিবি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

উত্তর-ঔপনিবেশিক দেশে ভাষিক সাম্রাজ্যবাদের স্বরূপ

পৃথিবীর বহু দেশ ভাষিক সাম্রাজ্যের কবলে পড়েছে। এতে জাতীয় আদর্শ পরিপন্থি আদর্শ অনুসরণ করে দেশগুলো নিজেদের ভাষানীতি প্রণয়ন করছে। এই বাস্তবতা থেকে ভাষিক সাম্রাজ্যবাদ ধারণার জন্ম। ভাষিক সাম্রাজ্যবাদ হলো প্রভাবশালী দেশের কোনো ভাষা কোনো অনুবর্তী দেশের জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার প্রয়াসবিশেষ।

সাম্রাজ্যবাদী রাজনৈতিক শক্তি কর্তৃক অনুবর্তী দেশের জনগণের চাপিয়ে দেওয়ার এই প্রয়াস রাজনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ থেকে উৎসারিত। সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর রাজনৈতিক ক্ষমতা, সামরিক ক্ষমতা বা অর্থনৈতিক ক্ষমতার মাধ্যম ভাষিক সাম্রাজ্যবাদিতা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ইউরোপীয় দেশগুলোর এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার সাবেক উপনিবেশগুলোয় তাদের ভাষা দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে প্রচলনের যে বাস্তবতা, তা মূলত ভাষিক সাম্রাজ্যবাদের বহিঃপ্রকাশ। সমসাময়িককালে আন্তর্জাতিক অর্থ সংস্থা, জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক ইত্যাদি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ভাষিক সাম্রাজ্যবাদীদের ভাষাগুলোকে বিশ্বায়নের ভাষা হিসেবে প্রচলনে তৎপর।

বিশ্বজুড়ে ভাষিক সাম্রাজ্যবাদের বাস্তবতা হলো এই, সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশভুক্ত দেশ যেমন– কেনিয়া, নাইজেরিয়া, ফিলিপাইন, পাপুয়া নিউগিনি ও ভারত; সাবেক ফরাসি উপনিবেশভুক্ত দেশ যেমন– ক্যামেরুন, আইভরি কোস্ট, মাদাগাস্কার, হাইতি, সেনেগাল, বুরকিনা ফাসো, বেনিন ও গিনি, সাবেক স্পেনীয় উপনিবেশভুক্ত দেশ যেমন– ইকুয়েডর, কিউবা, গুয়েতেমালা, হন্ডুরাস, বলিভিয়া, এল সালভাদর, নিকারাগুয়া এবং সাবেক আরব উপনিবেশভুক্ত দেশ যেমন– সুদান, চাদ ইত্যাদি দেশে রাজনৈতিক নেতৃত্ব সেসব দেশের জাতীয় আদর্শ পরিপন্থি ভাষিক আদর্শ অনুসরণ করতে বাধ্য হচ্ছে। এসব দেশ সেখানে বিরাজিত বহুভাষিকতার বাস্তবতার কারণে জাতীয় আদর্শ পরিপন্থি ভাষিক আদর্শ অনুসরণে বাধ্য হচ্ছে। এসব সাবেক ব্রিটিশ, ফ্রান্স ও স্পেনের উপনিবেশভুক্ত দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব তাদের দেশে কথিত ভাষার চেয়েও যথাক্রমে ইংরেজি, ফরাসি ও স্প্যানিশ ভাষাকে মর্যাদায় প্রতিষ্ঠাকরণে সচেষ্ট। তারা বহুভাষিকতা সমাজভাষিক আদর্শকে পাশ কাটিয়ে যথাক্রমে ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ ও আরবি ভাষাকে আত্তীকরণের নিয়ামক হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে এবং এসব ভাষার দেশীয়করণ ত্বরান্বিত করতে গণমাধ্যম ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যবহার করছে। এসব দেশ আন্তর্জাতিকতাবাদ ভাষিক আদর্শের মুলা ঝুলিয়ে ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ ও আরবি ভাষাকে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। 
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে এ চারটি ভাষা ব্যাপকভাবে সংজ্ঞাপনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কাজেই এসব দেশে ভাষিক আত্তীকরণ, দেশীয়করণ ও আন্তর্জাতিকতাবাদ– এ তিন ভাষিক আদর্শই যুগপৎভাবে ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ ও আরবি ভাষা প্রচলনে সহায়ক সমাজ ভাষাবৈজ্ঞানিক আদর্শ হিসেবে কার্যকর। 

সাবেক ব্রিটিশ, ফরাসি ও স্পেনীয় উপনিবেশভুক্ত দেশগুলোর মধ্য থেকে কয়েকটি সাম্রাজ্যবাদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে, সাম্রাজ্যবাদের অবশেষ হিসেবে প্রাপ্ত ভাষাকে ব্যবহার না করেও অগণতান্ত্রিক ভাষা রাজনৈতিক আদর্শ অনুসরণ করছে। তার মধ্যে অন্যতম ইন্দোনেশিয়া। ইন্দোনেশিয়ার সাম্রাজ্যবাদের অবশেষ হলো ডাচ্‌ ভাষা। কিন্তু এ দেশটি ডাচ্‌ বা ইংরেজি ভাষাকে আত্তীকরণের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার না করে, মালয় উপদ্বীপের ভাষাকে দেশীয়করণে সচেষ্ট। অন্যদিকে সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ ব্রিটিশ ভারত থেকে সৃষ্ট দেশ ভারত ও পাকিস্তান ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের অবশেষ ইংরেজি এবং রাজনৈতিক অভিজাত শ্রেণির ভাষা যেমন হিন্দি ও উর্দু– এই দুটি ভাষাকেই যুগপৎ আত্তীকরণের নিয়ামক হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে। 

হিন্দু ও ইসলাম ধর্মীয় আদর্শগত বিভেদজনিত কারণে উদ্ভূত দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভেঙে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি বহুভাষিক রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। নতুন সৃষ্ট এ দুটি রাষ্ট্রে বহু ভাষা থাকার কারণে দুটি রাষ্ট্রের রাজনৈতিক নেতৃত্ব যথাক্রমে হিন্দি ও উর্দু ভাষাকে কেন্দ্র করে বহুভাষী জনগোষ্ঠীকে একীভূত করতে প্রয়াসী হয়। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই দু’দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব তাদের দেশে যথাক্রমে হিন্দি ও উর্দু ভাষাকে প্রবর্তনের প্রয়াস চালায়। এ ব্যাপারে ভারত হিন্দি ভাষা প্রবর্তনের ক্ষেত্রে প্রচ্ছন্ন ও ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করে। অন্যদিকে পাকিস্তানের রাজনৈতিক শক্তি প্রথম থেকেই উর্দু ভাষাকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রবর্তনের উদ্যোগ নেয়। ফলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বাংলাদেশ) বাংলা ভাষার অধিকার আন্দোলনের স্ফুরণ ঘটে। বাংলাদেশ নামে নতুন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। আর মূল পাকিস্তানে রয়ে যায় অফুরন্ত ভাষিক সমস্যা। এর ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের নেতৃত্ব উর্দু ও ইংরেজি ভাষাকে সে দেশের জাতীয় ও এজমালি ভাষা হিসেবে প্রবর্তন করে। অন্যদিকে যুক্তরাজ্যীয় ইন্ডিয়ার নেতৃত্ব ইংরেজি ভাষাকে যুক্তরাজ্যীয় দাপ্তরিক ভাষা এবং হিন্দি ভাষাকে ঐচ্ছিক যুক্তরাজ্যীয় ভাষা হিসেবে প্রবর্তন করে। কিন্তু এ পর্যায়ে এসে ভারত হিন্দি ভাষাকে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে প্রবর্তনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

যেহেতু এসব বহুভাষী দেশের লক্ষ্য ছিল ভাষার ভিত্তিতে বহুধাবিভক্ত জনগোষ্ঠীকে একটি এজমালি রাজনৈতিক পরিকাঠামোতে একীভূত করা, কাজেই সেসব দেশ আত্তীকরণের মাধ্যম হিসেবে গৃহীত ইংরেজি, ফরাসি ও স্প্যানিশ ভাষাকে দেশীয়করণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ উদ্যোগের ফলে এসব ভাষা দেশীয়কৃত হয়ে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে; একই সঙ্গে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সামাজিক সংজ্ঞাপনের এজমালি মাধ্যম হিসেবেও প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।

ড. এ বি এম রেজাউল করিম ফকির: প্রাক্তন পরিচালক, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ