বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আইনজীবী আহমেদ আযম খান বলেছেন, ‘৫ আগস্টের যে ঐতিহাসিক অভ্যুত্থান হয়েছিল, তার পেছনের নায়ক ছিলেন তারেক রহমান। ছাত্রদল নেতাদের তারেক রহমান ওই সময় নির্দেশ দিয়েছিলেন, “তোমরা ছাত্রদলের ব্যানারে আন্দোলন-মিছিল করবে না। তোমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারের পেছনে থেকে আন্দোলন করবে।” ওই আন্দোলনের মূলশক্তি ছিল ছাত্রদল। গত ১৭ বছরে বিএনপি নেতাদের খুন, গুম, জেল-জুলুম অত্যাচার-নির্যাতনের ফসল হচ্ছে ৫ আগস্টের ঐতিহাসিক অভ্যুত্থান।’

আজ বুধবার বিকেলে টাঙ্গাইলের সখীপুর সরকারি কলেজে (প্রস্তাবিত) নবীনবরণ উৎসবে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির আগের নাম ছিল সরকারি মুজিব কলেজ।

ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠন বিষয়ে আহমেদ আযম খান বলেন, ‘ছাত্ররা কোনো রাজনৈতিক দল করছে না, আমার কথা পরিষ্কার। রাজনৈতিক দল করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু সমন্বয়ক, তারা সাবেক ছাত্র, বর্তমানে তারা ছাত্র নয়।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মার্সিডিজ উপঢৌকন নিয়ে, হেলিকপ্টারে ঘুরে রাজনীতি হয় না। রাজনীতি করতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে। রোদে পুড়তে হবে, বৃষ্টিতে ভিজতে হবে।’  

কলেজের নবীন বরণ উৎসবের উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম হেলাল উদ্দিন। কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো.

শরিফুল হকের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান সাজু, সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাছেদ, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর আবুল হাশেম, ইউসিসিএ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফরহাদ ইকবাল প্রমুখ। সব শেষে সাংস্কৃতিক পর্বে গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে মহা বারুনীর স্নান উৎসবে মানুষের ঢল

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দিতে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১৪তম জন্ম তিথি উপলক্ষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মতুয়া সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ মহা বারুনীর স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পুণ্য লাভের আশায় দেশ ও বিদেশের লাখো মতুয়া ভক্ত এ স্নানে অংশ নিচ্ছেন। 

এ স্নান উপলক্ষে ঠাকুর বাড়ীতে বসেছে তিনদিন ব্যাপী গ্রামীণ মেলা। এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঠাকুর বাড়িসহ পাশপাশ এলাকায় নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়ি

ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়িতে গিয়ে জানা গেছে, শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর কাশিয়ানী উপজেলা সাফলীডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আর লীলা করেন পার্শ্ববর্তী ওড়াকান্দি গ্রামে। শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ফাল্গুন মাসের মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথিতে প্রতি বছর ওড়াকান্দিতে এ স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার (২৬ মার্চ) রাত ১১টা থেকে শুরু হয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) রাত ৯টা পযর্ন্ত চলবে স্নান উৎসব। পুণ্য লাভের আশায় দেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত অন্তত ১০ লক্ষাধিক পুণ্যার্থী অংশ নিচ্ছেন এ স্নান উৎসবে। ভক্তদের পদচারণায়, ঢাক ঢোল ও কাসরের শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো ঠাকুরবাড়িসহ আশপাশের অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা। ভক্তরা মন্দিরে পূজা অর্চনা শেষে ঠাকুর বাড়িতে অবস্থিত কামনা সাগর ও বাসনা সাগরে (মূলত পুকুর) স্নান করে দেশবাসীর মঙ্গল প্রার্থণা করেন।

ওড়াকান্দিতে মহা বারুনীর স্নান উৎসব

এ উৎসব সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে ঠাকুর বাড়ি এলাকায় সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ চৌকি ও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃংখলা বাহিনী সদস্যের পাশাপাশি মতুয়া সংঘের প্রায় সাত শতাধিক স্বেচ্ছাসবক সার্বিক নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন। 

স্নানোৎসবকে ঘিরে ঠাকুর বাড়ির পাশ ঘেঁষে ৬০ একর জায়গাজুড়ে বসেছে ৩ দিনব্যাপী লোকজ মেলা। মেলায় কাঠ, বাঁশ, বেত, মাটির তৈরি জিনিসপত্র ও খেলনা সামগ্রী, তালপাখা, চানাচুর, মিষ্টির দোকান, হোটেল-রেস্তোরার দোকান বসেছে।

ওড়াকান্দির স্নানোৎসবে খুলনা থেকে আসা অশোক বিশ্বাস বলেন, “পুণ্য লাভের আশায় আমি ঠাকুর বাড়িতে এসেছি। বিশ্বাস করি এখানে স্নান করে পুণ্য লাভ করেছি।”

ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়ি

মাদারীপুর থেকে আসা কলেজ ছাত্র পলাশ বিশ্বাস বলেন, “আমি এবারই প্রথম ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়িতে এসেছি বন্ধুদের সাথে। স্নান করলাম, পরিবারের সবার জন্য মঙ্গল চেয়ে প্রার্থণা করেছি।”

যশোর থেকে আসা শিউলী বিশ্বাস বলেন, “বিগত ৫ বছর ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়ির বারুনী স্নানে অংশ নিতে আসি। এখানে স্নান করলে মনোবাসনা পুর্ণসহ সকল পাপ-কষ্ট দূর হয়।”

শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর পরিবারের সদস্য ও স্নানোৎসব কমিটির সভাপতি  সুব্রত ঠাকুর বলেন, “এখানে পুণ্য লাভের আশায় সারা দেশ থেকে পুণ্যার্থীরা আসেন, স্নান করেন। শুধু বাংলাদেশই নয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, চীন, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মতুয়া ভক্তের আগমন ঘটে। ভক্তরা এখানে এসে স্নান করলে তাদের মানোবাসনা পূরণ হয়। এ উৎসবকে ঘিরে ভক্তদের থাকার জন্য করা হয়েছে আবাসন ও প্রসাদের ব্যবস্থা। সেনাবাহিনী ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি মতুয়া সংঘের প্রায় সাত শতাধিক স্বেচ্ছাসবক সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।”

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, “এ স্নান উৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ঠাকুর বাড়ি এলাকায় সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ চৌকি ও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আইন-শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।”

ঢাকা/বাদল/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশে দেশে ঈদ
  • উৎসবের অর্থনীতি
  • যাদুকাটা নদীতে স্নান লাখো পুণ্যার্থীর
  • ১ টাকায় ঈদের নতুন পোশাক
  • রাজধানীতে ‘মেহেন্দি বাই মিমি’ আয়োজিত ‘ঈদ মেহেদী ফেস্ট’  
  • গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে মহা বারুনীর স্নান উৎসবে মানুষের ঢল
  • ঈদ আনন্দের কুশীলব
  • ঈদ উৎসবে ছেলেদের ফেসিয়াল
  • এমন মানুষ জন্মেছিলেন বলে আমরা যেকোনো দুঃসময়ে দাঁড়িয়েও স্বপ্ন দেখতে পারি
  • ব্র্যাকে খণ্ডকালীন চাকরি, বেতনের সঙ্গে উৎসব বোনাস, স্বাস্থ্যবিমাসহ নানা সুবিধা