যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ সারা দেশে আরও ৬৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে আজ বুধবার বিকেল পর্যন্ত এই অভিযানে ১০ হাজার ৫৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

আজ সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, অপারেশন ডেভিল হান্টের পাশাপাশি বিভিন্ন মামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে আজ বিকেল) আরও ১ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় কিছু অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি ৪ পয়েন্ট ৫ এমএম পিস্তল, একটি এলজি, একটি শুটারগান, একটি দেশীয় একনলা বন্দুক, একটি ম্যাগাজিন, ৭টি কার্তুজ ও রাইফেলের একটি গুলি।

৭ ফেব্রুয়ারি রাতে গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার শিকার হন ১৫ থেকে ১৬ শিক্ষার্থী। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা ওই রাতে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ডাকাতির খবর পেয়ে তা প্রতিহত করতে গিয়েছিলেন। তখন তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনায় আহত একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঘাটাইল-সাগরদীঘি সড়ক পাহারায় গ্রামবাসী

বর্তমানে আলোচিত টাঙ্গাইলের ঘাটাইল-সাগরদীঘি সড়ক। রাত নামলেই সেখানে ডাকাত আতঙ্ক। ১০ দিনে এই সড়কে ঘটেছে তিনটি ডাকাতির ঘটনা। লক্ষণেরবাধা এলাকাতেই দুটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ মঙ্গলবার ভোরে ডাকাতদের কবলে পড়ে শিক্ষা সফরগামী চারটি স্কুলবাস। এর পরই সড়কের ওই স্থানে সারারাত পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসী। 

স্কুলবাসে ডাকাতির ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই থানায় মামলা করেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সোয়াইতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ খলিলুর রহমান। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। 

এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে একই স্থানে ডাকাতি হয়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেল ও কাঁচা পণ্যের ট্রাক আটক করে তাদের থেকে সব লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতরা। একই সড়কে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে উপজেলার সন্ধানপুর ইউনিয়নের ফকিরচালা এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতির কবলে পড়েছিল ১০টি ট্রাক, সিএনজি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল। ডাকাতরা চালকদের কাছ থেকে নগদ টাকাসহ নিয়ে যায় স্মার্টফোন। তিনটি ডাকাতির ঘটনাতেই সড়কের পাশে থাকা বনের গজারি গাছ কেটে সড়কে ফেলে রাখা হয়। 

ঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে সাগরদীঘি পর্যন্ত সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০ কিলোমিটার। প্রতিবছর এই সড়কে দুটি স্থানে ডাকাতি হয়। এ বছরও ঘটনা ঘটেছে সেই দুটি স্থানেই। স্থান দুটি সাগরদীঘি ইউনিয়নের লক্ষণেরবাধা ও সন্ধানপুর ইউনিয়নের ফকিরচালা। লক্ষণেরবাধা স্থানের দূরত্ব সাগরদীঘি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে প্রায় চার কিলোমিটার এবং ফকিরচালার দূরত্ব ঘাটাইল থানা থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার। লক্ষণেরবাধা এলাকায় সড়কের আশপাশে এক কিলোমিটারের মধ্যে নেই জনবসতি। এলাকাটি ঘন জঙ্গলে ভরা। ফকিরচালার আশপাশেও তেমন বসতি নেই। 

এদিকে, ঘাটাইল-সাগরদীঘি সড়কের লক্ষণেরবাধা এলাকায় আধা কিলোমিটারের মধ্যে রাতে পাহারার ব্যবস্থা করেছেন এলাকাবাসী। ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল কামালপুর থেকে মালিরচালা ব্রিজপাড় পর্যন্ত সড়কের আধা কিলোমিটার এলাকায় হাতে লাঠি নিয়ে পাহারা দেয়। 

মালিরচালা গ্রামের আব্দুস সালাম ভূঁইয়া লিটন বলেন, এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে লক্ষণেরবাধা এলাকায় পুলিশ চেকপোস্টের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু কাজে আসছে না। পুলিশ চেকপোস্ট বসানো হলে হয়তো ডাকাতির ঘটনা বন্ধ হবে। 

এদিকে ডাকাতির কবলে পড়া শিক্ষার্থীদের এখনও আতঙ্ক কাটেনি। সহকারী শিক্ষক ওবায়দুল হক রুবেল বলেন, ডাকাতদের কবলে পড়ে আমরা মারাত্মকভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। ডাকাতরা আমাদের স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তামিমকে আহত করে তার মোবাইল ফোনসহ টাকা লুটে করে নিয়ে যায়। শিক্ষার্থী তামিম জানায়, এক দল ডাকাত বাসের ভেতরে উঠে চালককে মারতে শুরু করে। পরে আমাদের গাড়ির সবার শরীর চেক করে মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে যায়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ