কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 26th, February 2025 GMT
কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কোনো ধরনের ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। তবে জনসচেতনতা আরও বাড়াতে হবে। জনগণকে বলব, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আর পুলিশকে বলব আরও সক্রিয় হওয়ার জন্য। কিছুদিনের মধ্যেই পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জনবল বাড়ানো হবে।
বুধবার সাভারের রাজালাখ এলাকায় হর্টিকালচার সেন্টারে কৃষকের মিনি কোল্ডস্টোরেজ ও খামারি অ্যাপসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। আমি অস্বীকার করব না যে, ঘটনাগুলো ঘটছে না। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা লোকজনকে আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। যারা এসব অপরাধ করছে, তারা আমাদেরই পোলাপান, ওদের একটু বোঝাতে হবে, যেন অপকর্ম থেকে সরে আসে। আরেকটা বিষয়, আমাদের যে স্ট্যাটিসটিকস আছে, এর আগেও কিন্তু এ রকম ঘটনা ঘটেছে।’
তিনি বলেন, সাভার শিল্পাঞ্চলে বহুদিন ধরেই গার্মেন্টস খাতে অস্থিরতা নিয়ে আমাদের নানা ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়েছে। এখন কিন্তু পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখানে শিল্প পুলিশ, থানা-পুলিশ, র্যা ব, বিজিবি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছাইফুল আলম, টিস্যু কালচার ল্যাবরেটরি কাম হর্টিকালচার সেন্টার স্থাপন ও উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক তালহা জুবাইর মাসরুর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইন
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন ছাত্রসংগঠনে ‘বঞ্চিত’দের আজ বিক্ষোভ, ঢাকা ব্লকেডের হুঁশিয়ারি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে নবগঠিত ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদে’র আত্মপ্রকাশ ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আটজন শিক্ষার্থী আহত হন। এর বিচারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন এবং দাবি পূরণ না হলে পরদিন ‘ঢাকা ব্লকেডে’র হুঁশিয়ারি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলামোটর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাইম আবেদিন এবং সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক এম জে এইচ মঞ্জু। পরে রাত ১১ টার দিকে তারা সড়ক ছাড়েন।
কর্মসূচিতে নাঈম আবেদিন বলেন, প্রাইভেট রক্ত মাড়িয়ে তারা এই ছাত্রসংগঠন করতেছে। প্রাইভেটের রক্ত ওপর দাঁড়ায়া সব উপদেষ্টা হইছে। প্রাইভেটের রক্তের ওপর এ দেশ স্বাধীন হইছে। কিন্তু নেতৃত্বে প্রাইভেটকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে নতুন ছাত্রসংগঠনে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ন্যাশনাল, মাদরাসা, সাত কলেজ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় কাউকে রাখে নাই। তারা আমাদের বাদ রাখলে পুরো ‘ঢাকা ব্লকেড’ করে দিব। কোনো দল কিছুই হইতে দিব না।
এম জে এইচ মঞ্জু বলেন, হামলার বিচারের দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। তাতেও হামলাকারীদের বিষয়ে কোনো সুরাহা যদি না হয়, তাহলে ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘ঢাকা ব্লকেড’ করা হবে।
গত এক সপ্তাহ থেকে সমন্বয়ক রিফাত রশীদকে সদস্যসচিব করার দাবিতে সরব ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা। সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটিটি দিয়েছিলেন রিফাত রশীদ। এরসঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক নাঈম আবেদীনকে মুখ্য সংগঠক করার পক্ষে ছিলেন তারা। তবে এদের কেউই শীর্ষ পদে জায়গা পাননি। এর ফলেই বাঁধে বিপত্তি।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নুর হাসান নির্বাহী কমিটির সদস্য নাঈম আবেদীনের সঙ্গে ছবিযুক্ত করে ফেসবুকে পোস্ট করেন, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, নতুন রাজনৈতিক চিন্তাধারা এখন সময়ের দাবি। তাই নতুন ছাত্র সংগঠনে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি নাইম আবেদিন ভাইকে মুখ্য সংগঠক হিসেবে দেখতে চাই।
এর ফলশ্রুতিতে বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে নতুন ছাত্রসংগঠনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রাইভেটের একদল শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে এসে প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকেন। তারা ‘ঢাবির সিন্ডিকেট মানি না মানবো না’, ‘রিফাত রশীদ ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘রিফাত রশীদ এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে’- ইত্যাদি স্লোগান দেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম আহ্বায়ক ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রী শাহজাদী কথা সমকালকে বলেন, প্রাইভেটের কাউকে রাখা হয়নি। আমরা অন্তত রিফাত রশীদকে চেয়েছিলাম। রিফাত রশীদকে সব জায়গায় বঞ্চিত করা হয়েছে। এখানে ঢাবিয়ানদের স্বৈরাচারমূলক কমিটি আমরা মেনে নিব না।
বিকেল ৫টার দিকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাঁধার মুখে বাইরে সংবাদ সম্মেলন করতে না পেরে মধুর ক্যান্টিনের ভেতরে ছাত্রসংগঠনের আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। এ সময় প্রাইভেটের শিক্ষার্থীরা ভেতরে প্রবেশ করে সাংবাদিকদের ধাক্কা দিয়ে সংগঠনের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করতে থাকেন। এরমধ্যেই আবু বাকের মজুমদার কমিটি ঘোষণা করেন।
তারপর তারা বের হয়ে মিছিল নিয়ে লেকচার থিয়েটার ভবন হয়ে এগোলে মলচত্বরে উভয় পক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে কয়েকজন আহত হন। চার-পাঁচজনের জামা ছিঁড়ে যায়। পরে তারা টিএসসি হয়ে ডাকসু ভবনে গিয়ে মিছিল শেষ করেন। এর আগে মধুর ক্যান্টিন থেকে বের হওয়ার সময় প্রাইভেটের বিক্ষোভরত কয়েকজনকে চিহ্নিত করে কলার চেপে ধাক্কা দিতে দেখা যায় ঢাবি শিক্ষার্থীদের।
মারামারিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফারহানা বুশরা অমি, মো. রিয়াদসহ চারজন গুরুতর আহত হন। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিশু আলী, রিয়াজ হোসেন, আকিবুল হাসান আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ছাত্রসংগঠনের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, মধুর ক্যান্টিনে যারা বিক্ষোভ করেছে, তারা কমিটি ঘোষণা হওয়ার আগেই বৈষম্যের অভিযোগ তুলে স্লোগান দিচ্ছিল। এতে বোঝা যায়, তাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে। তবে আমরা সারা দেশের ছাত্রদের সঙ্গে নিয়েই কাজ করে যাব, কারও কোনো যৌক্তিক দাবি থাকলে আমরা আলোচনা করে তা সমাধান করব।