‘গবেষণা যেন কেবল একাডেমিক চর্চায় সীমাবদ্ধ না থাকে’
Published: 26th, February 2025 GMT
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা ও পরিবেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে গবেষণার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। আমাদের গবেষণা যেন কেবল একাডেমিক চর্চায় সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং তা বাস্তবসম্মত ও জনসম্পৃক্ত হতে হবে। গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে যদি পরিবেশবান্ধব নীতি গ্রহণ করা যায়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে আয়োজিত ‘গবেষণা উদ্ভাবনা ও প্রকাশনা মেলা ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক সম্পদের সুষম ব্যবহারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সমূহে গবেষণা আরও জোরদার করতে হবে।”
গবেষণার মাধ্যমে মানবাধিকার, পরিবেশ ও জনসম্পৃক্ততার উন্নয়ন ঘটানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “গবেষণা হবে বিজ্ঞানভিত্তিক, বস্তুনিষ্ঠ এবং মানুষের কল্যাণে নিবেদিত। টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে আমাদের পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও গবেষণার প্রতি অধিক মনোযোগী হতে হবে।”
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘সিঙ্গেল-ইউজ প্লাস্টিক এবং শব্দ দূষণমুক্ত ক্যাম্পাস’ ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানান। বিজ্ঞানী ও গবেষক জামাল নজরুল ইসলামের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে উপদেষ্টা ‘গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রকাশনা মেলা ২০২৫’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পরে উপদেষ্টা মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
গবেষণা মেলায় এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
উল্লেখ্য, ‘গবেষণা মেলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ চট্টগ্রাম বিভাগের ভেতরে ও বাইরে প্রায় শতাধিক স্টলে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ, গবেষণাগার এবং গবেষণা ইনস্টিটিউট তাদের গবেষণাকর্ম ও বিগত বছরের গবেষণায় অবদান সমূহ তুলে ধরেন।
ঢাকা/রেজাউল/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি ৫.৪%
বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের প্রত্যাশাতীত প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই সময় দেশটিতে মানুষের ভোগ যেমন বেড়েছে, তেমনি শিল্পোৎপাদনও বেড়েছে। যদিও দেশটির নীতিনির্ধারকেরা ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা নিয়ে চিন্তিত। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই শুল্ক গত কয়েক বছরে চীনের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক ঘোষণার পর ৯ এপ্রিল তা স্থগিত করেন। কিন্তু চীনের শুল্ক স্থগিত করেননি তিনি। শুধু তাই নয়, চীনের পণ্যে শুল্ক আরও বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশে উন্নীত করেছেন। চীনও মার্কিন পণ্যে প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করেছে ১২৫ শতাংশ।
চীনের সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, বছরের প্রথম অর্থাৎ জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, যদিও রয়টার্সের জরিপে বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার ছিল যে প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। গত বছরের শেষ প্রান্তিকেও চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ।
তবে চীনের প্রবৃদ্ধি এই গতি থাকবে না বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা। ওয়াশিংটনের উচ্চ শুল্কের কারণে চীনের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি অর্থাৎ রপ্তানি মার খাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ফলে চীনের নেতারা বড় ধরনের চাপে পড়বেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। রপ্তানি মার খেলে কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে এবং অনেক মানুষের চাকরি যাবে, এই পরিস্থিতি সামলানো নেতাদের পক্ষে কঠিন হয়ে যাবে।
সরকারি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রকৃতি কিছুটা অসম। বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ বেড়েছে এবং কারখানার কার্যক্রমেও এসেছে গতি; কিন্তু বেকারত্বের উচ্চহার ও মূল্যহ্রাসের কারণে চাহিদা নিয়ে শঙ্কা আছে।
মার্চে চীনের রপ্তানি বৃদ্ধির পেছনে কিছু কাঠামোগত কারণ আছে। বিষয়টি হলো, ট্রাম্পের শুল্কের হাত থেকে বাঁচতে চীনের রপ্তানিকারকেরা মার্চে দ্রুততার সঙ্গে অনেক পণ্য জাহাজিকরণ করেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, শুল্ক–ঝড়ের প্রভাব অনুভূত হওয়ার আগে চীনের জিডিপির পালে কিছুটা হাওয়া লেগেছে। মূলত অভ্যন্তরীণ চাহিদার বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
কয়েক বছর ধরেই চীনের প্রবৃদ্ধির গতি কম। অর্থনীতি চাঙা করতে চীনের সরকার বেশ কয়েকবার প্রণোদনা দিয়েছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, সেই প্রণোদনা অনেকটা কাজে আসছে। কিন্তু যেভাবে ট্রাম্প চীনের পণ্যে শুল্ক আরোপ করে যাচ্ছেন, তাতে আরও প্রণোদনা প্রয়োজন হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা।
আগের প্রান্তিকের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে, আগের প্রান্তিকের তুলনায় বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ২ শতাংশ; অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে যা ছিল ১ দশমিক ৬ শতাংশ। মার্চে দেশটির খুচরা বিক্রয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ; জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে যা ছিল ৪ শতাংশ।
এদিকে রয়টার্সের জরিপে দেখা গেছে, ২০২৫ সালে চীনের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২৪ সালে যেখানে তাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ শতাংশ। চলতি বছর চীনের সরকারি পূর্বাভাস ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির। অর্থাৎ দেশটি সেই লক্ষ্যমাত্রা এবার অর্জন করতে পারবে না বলেই ধরে নেওয়া যায়।
এদিকে বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ইউবিএস ২০২৫ সালে চীনের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, যদিও আগের তাদের পূর্বাভাস ছিল ৪ শতাংশ। মূলত শুল্ক–যুদ্ধের প্রভাব বিবেচনা করে তারা প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস হ্রাস করেছে।