নবনিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এবি পার্টির বৈঠক
Published: 26th, February 2025 GMT
ঢাকায় নবনিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধান মাইকেল মিলারের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি পার্টি) নেতারা। বর্তমান সরকার, নির্বাচন, সংস্কারসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকাস্থ ইউরোপিয় ইউনিয়ন মিশনে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে এবি পার্টির নেতারা দেখা করেন।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স ইনচার্জ ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানি আবদুল হক এবং ইন্টারন্যাশনাল টিমের অন্যতম সদস্য হাজরা মেহজাবিন।
পরে তারা নবনিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধান মাইকেল মিলারের সাথে মতবিনিময় করেন।
বৈঠকে এবি পার্টির নেতারা রাষ্ট্রদূত মিলারকে ২০২০ সালে দলটির আত্মপ্রকাশ, কেন্দ্র ও তৃণমূলে সংগঠন কাঠামো, দেশজুড়ে দলের নেটওয়ার্ক এবং দ্বিতীয় প্রজন্মের রাজনীতি বিষয়ে ধারণা দেন। তরুণ প্রজন্মের কাছে সেবা এবং সমস্যা সমাধানের রাজনীতির ধারণা কীভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তা তারা তুলে ধরেন। বিগত বছরগুলোতে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন এবং বিশেষ করে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে এবি পার্টির ভূমিকা সম্পর্কেও বৈঠকে আলোচনা হয়।
এবি পার্টি মনে করে, ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী শাসক দিল্লিতে পালিয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারকে কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। তারা যে প্রেক্ষাপটে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে সে প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রতি এখনো মানুষের অগাধ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। তুলনামূলকভাবে তারা ভাল কাজ করার চেষ্টা করছে। যদিও, অগ্রগতি ও উন্নয়নের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে আরো আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার ব্যপারে এবি পার্টি দায়িত্বশীল সমলোচনা চলমান রেখেছে।
এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ মনে করে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইইউর এমনকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ এবং অবদান রয়েছে যা প্রশংসার দাবিদার। তবে বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইইউর পক্ষ থেকে আরো সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করে এবি পার্টি।
এবি পার্টি বিশ্বাস করে, ২০২৬ সালে এলডিজি গ্রাজুয়েশন বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তাই তা সংশোধন করা দরকার। বাংলাদেশে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে সাহায্য করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি বৈঠকে অনুরোধ জানানো হয়।
দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনে বিপর্যস্ত হওয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নে, প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে কোটি কোটি বেকারদের জন্য কাজের বাজার তৈরি করতে এবং তথ্যপ্রযুক্তি ও পর্যটন খাতে এফডিআইকে উৎসাহিত করতে ইইউ বাংলাদেশকে সাহায্য করবে বলে এবি পার্টি আশাবাদ ব্যক্ত করে।
রাষ্ট্রদূত মিলার গণতন্ত্রে উত্তরণ সম্পর্কে নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে আরো জানতে আগ্রহী ছিলেন এবং আশ্বস্ত করেছিলেন যে ইইউ তার সহায়তা অব্যাহত রাখতে চেষ্টা করবে।
এ সময় ইইউ প্রতিনিধি দলের ডেপুটি হেড ড.
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইইউ নাগরিকদের ৭২ ঘণ্টার রসদ মজুত রাখার পরামর্শ
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর নাগরিকদের ৭২ ঘণ্টার জন্য পর্যাপ্ত খাবার, পানি ও প্রয়োজনীয় জিনিস মজুত করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ইউরোপিয়ান কৌশলের অংশ হিসেবে এ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে বিপর্যয়কর বন্যা, অগ্নিকাণ্ড, মহামারি ও সামরিক আক্রমণের মতো পরিস্থিতিতে প্রস্তুত থাকা।
ইউরোপিয়ান কমিশনের পক্ষ থেকে প্রথমবার প্রস্তুতিমূলক কৌশলের রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। ইউরোপিয়ান কমিশন বলেছে, তারা নাগরিকদের সংকট মোকাবিলায় প্রস্তুতির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উৎসাহিত করতে এ পরামর্শ দিয়েছে। এর মধ্যে পারিবারিক জরুরি পরিকল্পনা তৈরি করা এবং প্রয়োজনীয় সরবরাহ মজুত করার মতো বিষয়গুলো যুক্ত রয়েছে।
জার্মানি ও নরডিক দেশগুলো থেকে আংশিকভাবে অনুপ্রাণিত হয়ে এ কৌশলের পথে হেঁটেছে ইউরোপিয়ান কমিশন। জার্মানিতে সামরিক হামলা বা জাতীয় সংকটের ক্ষেত্রে জনগণকে কী করতে হবে, তার পরামর্শ দিতে তথ্যসংবলিত লিফলেট তৈরি করে বিতরণ করা হয়। একই সঙ্গে অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য দেওয়া হয়।
প্রস্তুতি ও সংকট ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ইউরোপীয় কমিশনার হাদজা লাহবিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে তাদের দেশের নাগরিকদের ৭২ ঘণ্টার জন্য টিকে থাকার প্রস্তুতি নিতে পরামর্শ দিতে বলেছি।’ জনগণ কী মজুত করবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। তাতে জরুরি ব্যাগ দেখানো হয়েছে। তাতে পানিরোধী আবরণে মোড়া পরিচয়পত্র, টিনজাত খাবার, বোতলজাত পানি, দেশলাই, সুইস ছুরি, টাকা, খেলার জন্য তাস, ওষুধ ও একটি ছোট রেডিও রাখতে দেখা গেছে।
জলবায়ু–সংকট, মহামারি, সাইবার-আক্রমণ ও সামরিক আক্রমণের ফলে সম্ভাব্য পরিস্থিতির ঝুঁকির প্রতিক্রিয়ায় ইইউর আরও ভালো সমন্বয় এবং জনসচেতনতা নিশ্চিত করার জন্য এই কৌশল তৈরি করা হয়েছে। নথিটিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের অবশ্যই বড় আকারের সংকটের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এর মধ্যে সশস্ত্র আগ্রাসনের আশঙ্কাও অন্তর্ভুক্ত, যা এক বা একাধিক সদস্যরাষ্ট্রকে প্রভাবিত করতে পারে।’
ইউরোপীয় কমিশনের পক্ষ থেকে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ইউরোপব্যাপী প্রস্তুতির আহ্বান জানানো হয়েছে। এর মধ্যে স্কুলের পাঠ্যক্রমে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা, কাঁচামাল, আশ্রয়কেন্দ্র, জেনারেটর এবং সম্ভাব্য খাদ্য ও পানির পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ইইউ মজুত কৌশল তৈরির কথা বলা হয়েছে।
বেসামরিক বা সামরিক পরিষেবার ক্ষেত্রে ইইউর কোনো ক্ষমতা নেই। তবে কোভিড মহামারি সংকটে ইইউ বড় ভূমিকা পালন করে। গত বছর ফিনল্যান্ড অভিযোগ করে, কোনো সদস্যরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আগ্রাসনের ক্ষেত্রে ইইউ কী করবে, সে সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট পরিকল্পনা নেই। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলেন, পাঁচ বছর আগের তুলনায় সংকট ও দুর্যোগ মোকাবিলায় ইইউ আরও ভালোভাবে প্রস্তুত।