বাংলাদেশের তরুণদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে পরামর্শ দিয়েছেন আবুধাবি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দ্বিতীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহমিজ আলী আল দাহিরি।

শাহমিজ আলী আল দাহিরি বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) নিজেদের বিনিয়োগ সম্প্রসারণের পাশাপাশি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সাফল্য দেখিয়েছে। নিজেদের বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে পারলে ইউএইসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের বিনিয়োগ পাওয়া বাংলাদেশের জন্য সহজ হবে। বাংলাদেশে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ইউএইর পক্ষ হতে সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি।

সংযুক্ত আরব আমিরাত সফররত ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সৌজন্যে আবুধাবি চেম্বার আয়োজিত ‘আবুধাবি ও বাংলাদেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ’ শীর্ষক আলোচনায় এ কথাগুলো বলেন শাহমিজ আলী আল দাহিরি। গত মঙ্গলবার আবুধাবি স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের সম্মেলনকেন্দ্রে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ সফররত ২৯ সদস্যবিশিষ্ট ডিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ঢাকা চেম্বারের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

আলোচনা অনুষ্ঠানে আবুধাবির বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনার ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আবুধাবি ইনভেস্টমেন্ট অফিসের হেড অব ইনভেস্টর এনগেজমেন্ট ওমর আল হোসাইনি। তিনি বলেন, পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি এবং জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ইউএই। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের তাদের বিনিয়োগে শতভাগ মালিকানা ও শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করছে ইউএই সরকার। এখানকার বিনিয়োগের ইকোসিস্টেমের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারেন।

অপর দিকে ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনার ওপর একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তা এখনো কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে দুই দেশের উদ্যোক্তাদের আরও সম্পৃক্ত করা জরুরি।

গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১৩৫ কোটি ডলার ও ৪০ কোটি ডলার। এমন তথ্য উল্লেখ করে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ইউএইর উদ্যোক্তারা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে ৩২ কোটি ডলারের বিনিয়োগ করেছেন। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অবকাঠামো ও লজিস্টিক, তথ্যপ্রযুক্তি, পর্যটন ও স্বাস্থ্যসেবা প্রভৃতি খাতে নতুন বিনিয়োগের জন্য দেশটির উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি, বস্ত্র ও প্রকৌশলশিল্পে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের পাশাপাশি কৃষিজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, পাটজাতপণ্য, ওষুধ বিভিন্ন পণ্য আমদানির ওপর জোর দেন ডিসিসিআইয়ের সভাপতি তাসকীন আহমেদ। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ডিসিসিআই বিজনেস ইনস্টিটিউট (ডিবিআই) ও আবুধাবি স্কুল অব বিজনেস একসঙ্গে কাজ করার আহ্বানও জানান তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিতীয় দফায় বরখাস্ত হচ্ছেন অনেক কর্মী

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মানবসম্পদ সংস্থা (ওপিএম) পুরো বিভাগ বন্ধ করে দিতে বা ছোট করে ফেলতে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এর সঙ্গে পরিচিত সূত্রগুলো জানিয়েছে, এটি ফেডারেল প্রশাসনে দ্বিতীয় দফায় ব্যাপক গণছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

রয়টার্স জানায়, মানবসম্পদ সংস্থা লাখ লাখ বর্তমান ও সাবেক সরকারি কর্মীর ব্যক্তিগত তথ্য তত্ত্বাবধান করে। এরই মধ্যে সংস্থার ৪০ সদস্যের একটি শক্তিশালী ক্রয় দলকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সংস্থার অভ্যন্তরে সংবেদনশীল কর্মচারী তথ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা একটি দলকেও উল্লেখযোগ্যভাবে ছোট করা হয়েছে। অর্থাৎ, ওই দলের কর্মী কমিয়ে আটজনে নামিয়ে আনা হয়েছে। ২০ সদস্যের যোগাযোগ দল সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে। সাত সদস্যের বৈচিত্র্য, সাম্য ও অন্তর্ভুক্তি দলও সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রগুলো জানিয়েছে, ওপিএমে স্থায়ী সরকারি কর্মীদের লক্ষ্যবস্তু বানানোর এই প্রক্রিয়া বৃহত্তর সরকারি সংস্থাগুলোর জন্য দ্বিতীয় ধাপে আরও ব্যাপক ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে এই বিষয়ে মন্তব্যের জন্য ওপিএমের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ২৩ লাখ সদস্যের বেসামরিক সরকারি কর্মী বাহিনীর বেশির ভাগই স্থায়ী কর্মচারী। এই কর্মীদের ছাঁটাই করাকে টেক বিলিয়নেয়ার ইলন মাস্কের পরবর্তী লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। 

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন যে পন্থায়  মাস্কের তথাকথিত ‘ডিপার্টমেন্ট অব ইফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)’ গঠন ও পরিচালনা করছে, তা সংবিধান লঙ্ঘন করে থাকতে পারে বলে ওয়াশিংটনের একজন ফেডারেল বিচারক মন্তব্য করেছেন। 

সিএনএন জানায়, সোমবার দেওয়া এক আদেশে এ সন্দেহ প্রকাশ করেন বিচারক কলিন কলার-কোটলে। কিন্তু তাঁর এমন সন্দেহ প্রকাশ করার বিষয়টি বাধ্যতামূলকভাবে মানা কোনো আদেশের অংশ নয়। তবে বিচারকের এ মন্তব্যে মাস্কের বিভাগ সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে, এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তাঁর এ বিভাগ ‘ইউএস ডিওজিই সার্ভিস’ নামেও পরিচিত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দ্বিতীয় দফায় বরখাস্ত হচ্ছেন অনেক কর্মী
  • ই-মেইলের জবাব না দেওয়া ফেডারেল কর্মীদের নতুন হুমকি মাস্কের