যাদের টাকা আর মাস্তান আছে তারাই নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে
Published: 26th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আমাদের একটি বন্ধু সংগঠন নির্বাচনের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তারা ভাবছে নির্বাচন দিলেই ক্ষমতায় এসে যাবে। এত ব্যস্ততার কারণ জানতে চেয়ে তিনি বলেন, যাদের টাকা আর মাস্তান আছে এবং রাতের আঁধারে ভোট কেটে বাক্স ভর্তি করতে পারবে তারাই নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। জামায়াতে ইসলামীর যেহেতু টাকা অথবা মাস্তান নেই, তাই নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চায়।’
বুধবার বরগুনা টাউন হল মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরগুনা জেলা শাখার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, এক শাসকের পতনের পর আরেকটি গ্রুপ হাট-বাজার ইজারা, মাদ্রাসা-স্কুল, মসজিদ কমিটি, বাস-ট্রাক স্ট্যান্ড সব দখল করে নিচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী সম্পৃক্ত নয়।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অনেকে জামায়াত ইসলামকে অপব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করছে। তারা বলতে চান, জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রের সবকিছু সংস্কারের আগে জাতীয় নির্বাচন চায় না। কিন্তু আমরা জামায়াতে ইসলামী সে কথা বলিনি। আমরা বলেছি- একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন সেটা শেষ করে নির্বাচন দিতে। বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসন, নির্বাচন পদ্ধতি, সিভিল প্রশাসন, সংবিধানের কিছু অংশ এবং বিচার বিভাগসহ ৫-৬টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সংস্কার শেষে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
তিনি বলেন, বেশিরভাগ মানুষ ক্ষমতা পেলে আর ছাড়তে চায় না। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা ড.
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘শেখ হাসিনা যেখানের লোক সেখানেই চলে গেছেন। কিন্তু সেখানে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশে আসার স্বপ্ন দেখছেন। আর তার দলের কিছু লোক পুনরায় দেশে আনার চিন্তুা করছেন। কিন্তু তা আর বাস্তবায়ন হবে না। গত ১৫ বছরের দুঃশাসনের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তাদের (জামায়াতে ইসলাম) দলের সিনিয়র নেতাদের অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। মানুষের ভোটের অধিকার, বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল। এখন বস্তায় বস্তায় টাকা পাচার করে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরগুনা জেলা আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য অধ্যাপক মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ্ হারুনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুয়ায্যাম হোসাইন হেলাল, বরিশাল মহানগরী আমীর অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা ও অঞ্চল টিম সদস্য এ কে এম ফখরুদ্দীন খান রাযী, ঢাকা মহানগরী মজলিসে শুরা সদস্য ডা. সুলতান আহমেদ।
বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার বরগুনার দু’টি আসনের জন্য মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ্ হারুন ও ডা. সুলতান আহমেদের নাম ঘোষণা করে তাদের পরিচয় করিয়ে দেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ জ ম য় ত ইসল ম ক ষমত বরগ ন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীনতাবিরোধী বলায় বিএনপিকে এক হাত নিল জামায়াত
স্বাধীনতাবিরোধী বলায় বিএনপিকে এক হাত নিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যারা জামায়াতকে স্বাধীনতাবিরোধী বলে তাদের অনেকের বাবাও রাজাকার ছিলেন। কোন দলের কোন নেতা স্বাধীনতাবিরোধী, জনগণ জানে। যারা আজ আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ভাষায় কথা বলে, তারাও স্বাধীনতাবিরোধীদের এমপি-মন্ত্রী এমনকি রাষ্ট্রপতিও বানিয়েছে।
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বুধবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের কার্যালয়ে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন, জামায়াত তাদের সঙ্গে থাকলে সঙ্গী, না থাকলে জঙ্গি।
বিএনপির উদ্দেশ্য করে গোলাম পরওয়ার বলেন, বিরোধিতা করার আগে জামায়াতে অবদানের কথা স্মরণ করতে হবে। জামায়াতের সমর্থন ছাড়া সরকার গঠন করতে পারেননি। রাজপথে আন্দোলন করতে পারেননি। আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে জামায়াতের কত নেতাকর্মী মার খেয়েছে, রক্ত দিয়েছে, তাদের কতজন মার খেয়েছে?
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে।
বিএনপি চব্বিশের অভ্যুত্থানকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলতে রাজি না হলেও গোলাম পরওয়ার বলেন, একাত্তরে বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি। সে কারণেই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে কোটি কোটি মানুষ বলেছে, এটাই দ্বিতীয় স্বাধীনতা। জামায়াতে ইসলামী আদর্শিক কারণেই দেশ ও স্বাধীনতাকে ভালোবাসে।
জামায়াত নিয়ে ‘খেললে’ শেখ হাসিনা মতো পরিণতি হবে হুঁশিয়ারি দিয়ে গোলাম পরওয়ার বলেন, মতের দ্বিমত থাকতে পারে, কিন্তু দেশ ও জাতির সঙ্গে আমাদের এক হতে হবে।
শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ চাননি দাবি করে জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ৭ মার্চ যদি শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েই থাকেন, তাহলে ৭ থেকে ২৩ মার্চ শেখ মুজিব পাকিস্তানের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন কেন?
ভারতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার মিশনে নেমেছে, গুজব ছড়াচ্ছে। সংস্কার শেষে সরকার নির্বাচন দেবে, তখনই জামায়াত ভোটের জন্য প্রস্তুত।
মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির ড. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম খান, আব্দুল হালিম প্রমুখ।