তোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার মামলা পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ
Published: 26th, February 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামান আজ বুধবার এ আদেশ দেন।
এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সিএমএম আদালতে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রের বিপরীতে নারাজি আবেদন করেছিলেন মামলার বাদী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ।
অপর দিকে তোফাজ্জলের ফুফাতো বোন আসমা আক্তার পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করার আবেদন করেন। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আজ মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।
আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার নিচে নন, এমন কর্মকর্তাকে মামলাটি তদন্ত করে আগামী ৪ মের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
২ ফেব্রুয়ারি বাদীপক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যানেল আইনজীবী সেলিম জাবেদ আদালতকে বলেছিলেন, তোফাজ্জল হত্যা মামলায় ছয়জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন। তাঁদের জবানবন্দিতে উঠে আসা আটজনের নাম অভিযোগপত্রভুক্ত করা হয়নি। তাঁদের মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।
তবে তোফাজ্জলের ফুফাতো বোন আসমা আক্তারের আইনজীবী জিয়াউর রহমান আদালতকে বলেছিলেন, তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে সংরক্ষিত আছে। তদন্ত কর্মকর্তা যথাযথভাবেই তদন্ত করে ২১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছেন। ভিডিও ফুটেজে যাঁদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, তাঁদের প্রত্যেককে আসামি করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। সুতরাং এ মামলা অধিকতর তদন্তের কোনো সুযোগ নেই।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্রদের ছয়টি মুঠোফোন ও মানিব্যাগ চুরি হয়েছিল। সেদিন রাত আটটার দিকে তোফাজ্জল নামের ওই যুবক হলের ফটক দিয়ে মাঠের ভেতরে যান। তখন কয়েকজন শিক্ষার্থী চোর সন্দেহে তাঁকে আটক করে হলের অতিথিকক্ষে নিয়ে যান। পরে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাঁকে স্টাম্প দিয়ে মারধর করা হয়। এরপর তাঁকে হলের ক্যানটিনে নিয়ে রাতের খাবার খাওয়ানো হয়। খাওয়া শেষে আবার তাঁকে হলের অতিথিকক্ষে এনে ব্যাপক মারধর করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। মারধরের পর দিবাগত রাত ১২টার দিকে হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক তোফাজ্জলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তাঁরা জানতে পারেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় তোফাজ্জল মারা গেছেন। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ১৯ সেপ্টেম্বর ফজলুল হক মুসলিম হল থেকে ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সেদিন রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পরে তোফাজ্জলের ফুফাতো বোন আসমা আক্তার বাদী হয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীকে আসামি করে মামলা করেন। আদালত দুটি মামলা একসঙ্গে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর এ মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ছাত্রের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় শাহবাগ থানা-পুলিশ।
পুলিশ ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, অভিযোগপত্রভুক্ত ২১ ছাত্রের মধ্যে ছয়জন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তাঁরা এ হত্যাকাণ্ডে দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন আর অন্যরা পলাতক। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আদালতে আবেদন করা হয়।
আরও পড়ুনতোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যা: অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দিল্লিতে ভ্যান্স এবং মোদির বৈঠক আজ
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও তার পরিবার ভারতের রাজধানী দিল্লিতে পৌঁছেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আজ তার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। খবর বিবিসির।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধির জৈসওয়াল বলেন, এই সফর আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে বলে আমরা আশাবাদী।
বিশ্বব্যাপী ওয়াশিংটনের শুল্কনীতি ঘিরে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই সফর বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে দেশগুলো দ্রুত চুক্তি চূড়ান্তে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
ভ্যান্সের সফরের অংশ হিসেবে তিনি তার স্ত্রী উষা ভ্যান্স এবং সন্তানদের সঙ্গে আগ্রা ও জয়পুর ভ্রমণে যাবেন। তার স্ত্রী উষার পরিবার ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিল।
সোমবার সকালে দিল্লিতে পৌঁছে ভ্যান্স আকসারধাম মন্দির পরিদর্শন করেন। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী মোদী তাকে নৈশভোজে আপ্যায়ন করেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বর্তমানে প্রায় ১৯০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, ভারতের উচ্চ শুল্ক হার এবং ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।
সম্প্রতি ভারত কিছু মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক হ্রাস করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে।
ভবিষ্যতে ট্রাম্পের সম্ভাব্য ভারত সফর এবং কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের প্রেক্ষাপটে ভ্যান্সের সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।