রুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের ছাত্রত্ব বাতিল, শাস্তির আওতায় ৪৮ জন
Published: 26th, February 2025 GMT
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) শাখার সভাপতি-সম্পাদকসহ চার শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া দুইজন শিক্ষার্থীকে চার সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কারসহ মোট ৪৮ জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ও ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড.
এদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন রুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক।
আজীবন বহিষ্কৃতরা হলেন—নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রুয়েট শাখার সভাপতি ও পুরকৌশল বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ফাহমিদ লতিফ লিয়ন, শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী সৌমিক সাহা, যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী শাশ্বত সাহা সাগর ও পুরকৌশল বিভাগ ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মৃন্ময় কান্তি। জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার কারণে তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়।
এছাড়া পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় দুই শিক্ষার্থীকে ৪ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। অপরদিকে, ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট রুয়েটের হলে অভিযানের প্রেক্ষিতে প্রাপ্ত রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে আবাসিক হলের বিভিন্ন কক্ষে অস্ত্র, মাদকসহ নিষিদ্ধ দ্রব্যাদি রাখার দায়ে ৪২ জনের আবাসিকতা বাতিল করা হয়েছে।
এই বিষয়ে রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ও ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রুয়েট প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। এসব অভিযোগ যাচাই করে দেখা যায়, অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত যে অর্ডিন্যান্স রয়েছে সেটির ধারা লঙ্ঘন করেছেন। এজন্য ৪ শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। আরও ২ জনকে ৪ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া, ৪২ জনকে আবাসিক হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জি কে শামীমের দুর্নীতি মামলায় রায় আজ
অবৈধ ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় আলোচিত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের রায়ের দিন আজ ধার্য রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালত এ রায় ঘোষণা করবেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী বেলাল হোসেন এ তথ্য জানান।
গত ২০ মার্চ দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের এ তারিখ ঠিক করেন।
এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য ছিলো। মামলায় জি কে শামীমের মা পলাতক ছিলেন। পরে তিনি আত্মসমর্পণ কর। জামিন নেন। এরপর জি কে শামীমের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে পুনরায় জেরা করার আবেদন করেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। মামলাটি রায় থেকে উত্তোলন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য করা হয়। এরপর তদন্ত কর্মকর্তাকে, আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি, সাফাই সাক্ষ্য এবং যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আবার রায়ের তারিখ ধার্য করা হলো।
২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর জি কে শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় -১ এর উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর তাদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলার সময় ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে নিকেতনের বাসা থেকে শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ভবন থেকে নগদ এক কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার ১০টি এফডিআর, ৩২টি ব্যাংক হিসাবের চেক বই, আটটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পাওয়ার কথা জানানো হয় অভিযান শেষে।
গ্রেপ্তারের সময় র্যাব সদরদপ্তর, সচিবালয়ে ও কয়েকটি হাসপাতালের নতুন ভবনসহ অন্তত ২২টি নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদারি কাজ শামীমের প্রতিষ্ঠান জিকে বিল্ডার্সের হাতে ছিল। এসব প্রকল্পের ব্যয় বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার কোটি টাকা। পরে সেগুলোর কার্যাদেশ বাতিল হয়। জব্দ করা হয় তার ১৯৪টি ব্যাংক হিসাব।
অভিযনের পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে জি কে শামীমের বিরুদ্ধে মামলা করেন র্যাব-১ এর নায়েব সুবেদার মিজানুর রহমান।
২০২৩ সালের ১৭ জুলাই মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় জি কে শামীমকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। বাকি সাত আসামিকে (জিকে শামীমের দেহরক্ষী) ৪ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জি কে শামীম ও তার ৭ দেহরক্ষীকে অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম।
ঢাকা/মামুন/ইভা