কুড়িগ্রামে গরু-মহিষের বিমা প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমার অন্তর্ভুক্ত গরু-মহিষ দুর্ঘটনায় মারা গেলে কৃষক ক্ষতিপূরণ পাবেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনের আলোর ভুবন হলরুমে এ প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন হয়।

কার্নিভ্যাল অ্যাসিউরের তত্ত্বাবধানে, সুইচ কন্টাক্ট-এর সার্বিক সহযোগিতায় এবং সুইস দূতাবাসের অর্থায়নে গরু-মহিষের বিমাবিষয়ক প্রকল্পটি ডটলাইনস সোশ্যালের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডটলাইনস সোশ্যালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ কামরুল আরেফিন প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, এই বিমা প্রকল্প প্রাথমিকভাবে কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট, উলিপুর এবং সদর উপজেলায় শুরু করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় জেলার সাত হাজার কৃষক উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গরু-মহিষের বিমার সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে ৩ উপজেলার ১ হাজার ৮০০ খামারি সরাসরি বিমাসুবিধার আওতায় আসবেন। যাঁরা বিমা সুবিধার আওতায় আসবেন, সেই কৃষকদের গরু-মহিষ দুর্ঘটনায় মারা গেলে বা অক্ষম হলে ১০–১৫ দিনের মধ্যে তাঁরা ক্ষতিপূরণ পাবেন।

প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চিকিৎসক মো.

হাবিবুর রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন উলিপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চিকিৎসক মোছা. রেবা বেগম। দাতা সংস্থা সুইস কন্ট্যাক্টের পক্ষ থেকে ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট, বিএমএমডিপি কো-অর্ডিনেটর নাজিম রেজা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ডটলাইনস সোশ্যাল এবং কার্নিভ্যাল অ্যাসিউর-এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চিকিৎসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বৈশ্বিক আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং এলাকার বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে গবাদিপশুর লালনপালনে যে সমস্যাগুলো দেখা দিচ্ছে, সেগুলো মোকাবিলায় এই মাইক্রো ইনস্যুরেন্স প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কুড়িগ্রামের বিভিন্ন চরাঞ্চলের ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিরা এই মাইক্রো ইনস্যুরেন্স প্রকল্প গ্রহণ করলে তাঁদের মূলধন হারানোর ভয় কমে যাবে।

উলিপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চিকিৎসক মোছা. রেবা বেগম বলেন, এই বিমা প্রকল্প গবাদিপশু লালনপালনকারী প্রান্তিক কৃষকদের আর্থিক ক্ষতি কমাতে সাহায্য করবে। তবে বিমা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো এবং বিমার পলিসি বিষয়ে কমিউনিটি পর্যায়ে সঠিক ধারণা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
পরে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চিকিৎসক মো. হাবিবুর রহমান বেলুন উড়িয়ে প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক ম প রকল প র অন ষ ঠ ন র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মালয়েশিয়ায় অভিযানে ১৬৫ বাংলাদেশি আটক

মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের (জেআইএম) অভিযানে বাংলাদেশি ও বিভিন্ন দেশের প্রায় ৫০৬ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৬৫ জনই বাংলাদেশি।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদ মাধ্যম নিউ স্ট্রেট টাইমস।

এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, কুয়ালালামপুরের মেদান ইম্বির একটি ব্যবসায়িক এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়। ইমিগ্রেশন বিভাগের সদর দপ্তর এবং নেগেরি সেম্বিলান ইমিগ্রেশন বিভাগের বিভিন্ন পদের ১৮৫ জন ইমিগ্রেশন অফিসারের একটি বাহিনী এবং জাতীয় নিবন্ধন বিভাগসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার সহায়তায় এই যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়। 

প্রতিবেদন বলছে, আটক ৫০৬ জনের মধ্যে ৪৪৮ জন পুরুষ এবং ৫৮ জন নারী। আটক হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে ১৬৫ জন বাংলাদেশি ছাড়াও নেপালের রয়েছেন ১২৪ জন। তবে আটক বাংলাদেশিদের সবাই পুরুষ। নারীদের মধ্যে ৪০ জন ইন্দোনেশিয়ান এবং বাকি ১৮ জন হলেন নেপালের নাগরিক।

দেশটির অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক ওয়াইবিএইচজে দাতো জাকারিয়া বিন শাবান অভিযান পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই অভিযানে মোট ৮৯৫ জন ব্যক্তির ডকুমেন্টস পরীক্ষা করা হয়েছে, যার মধ্যে ৭৪৯ জন অভিবাসী নাগরিক এবং ১৪৬ জন স্থানীয় নাগরিক ছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ৫০৬ জন অভিবাসী নাগরিককে অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের সন্দেহে আটক করা হয়েছে। তাদের সবার বয়স ২৫ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে।

তিনি আরও বলেন, পরিচয়পত্র না থাকা, পাসের শর্ত লঙ্ঘন, অতিরিক্ত সময় ধরে থাকা, অভিবাসন আইন লঙ্ঘন, মেয়াদহীন ভিসা ইত্যাদি অভিযোগে আটক করা হয় তাদের।

অভিযানের সময় অনেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেন বলে জানান এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, যারা পালানোর চেষ্টা করেছিল তাদের মধ্যে একজন মায়ানমার এবং একজন নেপালি নাগরিক ছিল, যাদের দুজনকেই সাদা পোশাকের ইমিগ্রেশন অফিসাররা তাড়া করেছিল। এ সময় দুজন অভিবাসী পড়ে যান এবং সামান্য আঘাত পান। ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ বিভাগের কর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের চিকিৎসা দেন।

এ ছাড়া একজন গর্ভবতী ভারতীয় নাগরিক অসুস্থ বোধ করার পরে চিকিৎসার জন্য তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান তিনি।

জাকারিয়া বলেন, অভিযান চালানো কয়েকটি কক্ষে অত্যন্ত ভিড় ছিল। একটি রুমে, পাঁচ বা ছয়জন থাকতো। কিছু কক্ষে আরও বেশি বাসিন্দা রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পরবর্তী তদন্তের জন্য তাদের বুকিত জলিল ইমিগ্রেশন ডিপোতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ