রুয়েটে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ ৪ জনকে আজীবন, ৪২ জনকে হল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার
Published: 26th, February 2025 GMT
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ চারজনের ছাত্রত্ব আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে আবাসিক হলে অবৈধ অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য রাখায় ৪২ শিক্ষার্থীকে হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় দুই শিক্ষার্থীকে দুই শিক্ষাবর্ষের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিকেলে কমিটির সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম আব্দুর রাজ্জাক ও সদস্যসচিব ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মো.
আজীবন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রুয়েট শাখার সভাপতি ও পুরকৌশল বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাহমিদ লতিফ (লিয়ন), সাধারণ সম্পাদক ও কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৌমিক সাহা, যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাশ্বত সাহা সাগর ও পুরকৌশল বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মৃন্ময় কান্তি। তাঁরা গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা করেছেন বলে অভিযোগ ছিল। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ও একাডেমিক শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যসচিব মো. রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, রুয়েটের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রুয়েট প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। এসব অভিযোগ যাচাই করে দেখা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাসংক্রান্ত যে বিধি রয়েছে, সেটির ধারা লঙ্ঘন করেছেন। এ জন্য চার শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। দুজনকে চার সেমিস্টার বা দুই শিক্ষাবর্ষের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এর বাইরে ৪২ জনকে আবাসিক হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও একাডেমিক শৃঙ্খলা কমিটি সূত্রে জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর ১৯ আগস্ট রুয়েটের বিভিন্ন আবাসিক হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালায়। বিভিন্ন কক্ষে অস্ত্র, মাদকসহ নিষিদ্ধ দ্রব্য পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন বিভাগের ৪২ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় দুই শিক্ষার্থীকে চার সেমিস্টার বা দুই শিক্ষাবর্ষের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারী প্রকৌশলী ও রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাঈম রহমান (নিবিড়), পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ডেটা প্রসেসর কর্মকর্তা ও নগরের শাহ্মখদুম থানা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মহিদুল ইসলাম, শিক্ষা শাখার সহকারী প্রোগ্রামার এ কে এম আনোয়ারুল ইসলামের বিরুদ্ধেও ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা কমিটি শাস্তির সুপারিশ করেছে।
এ বিষয়ে একাডেমিক শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, তাঁরাও ছাত্রদের ওপর আন্দোলনে হামলা করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে একাডেমিক শৃঙ্খলা কমিটি শাস্তি দিতে পারে না। তাই সিন্ডিকেটে যাতে তাঁদের শাস্তি হয়, সে ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক ষ বর ষ র শ ক ষ র থ ল ইসল ম কম ট র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাসহ রুয়েটের ৪৮ শিক্ষার্থীকে শাস্তি
রুয়েট প্রতিনিধি: রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) চার শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কারসহ মোট ৪৮ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা ও পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় তাদের বিরুদ্ধে এসব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বহিষ্কৃতদের মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রুয়েট শাখার সভাপতি ফাহমিদ লতিফ লিয়ন ও সাধারণ সম্পাদক সৌমিক সাহাসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীরা রয়েছেন।
আজীবন বহিষ্কৃতরা হলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রুয়েটের সভাপতি ও পুরকৌশল বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী ফাহমিদ লতিফ লিয়ন, সাধারণ সম্পাদক ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী সৌমিক সাহা, যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২০১৯-২০২০ সেশনের শিক্ষার্থী শাশ্বত সাহা সাগর, পুরকৌশল বিভাগের ২০১৯-২০২০ সেশনের শিক্ষার্থী মৃন্ময় কান্তি বিশ্বাস।
এছাড়াও রুয়েটের প্রকৌশল শাখার সহকারী প্রকৌশলী নাঈম রহমান নিবিড়, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ডাটা প্রসেসর মো. মহিদুল ইসলাম, শিক্ষা শাখার সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রামার একেএম আনোয়ারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রুয়েটের সংশ্লিষ্ট ফোরামে অনুরোধ করা হয়েছে।
গত বছল ১৯ আগস্ট অভিযানের প্রেক্ষিতে হলের বিভিন্ন কক্ষে অস্ত্র ও মাদকসহ নিষিদ্ধ দ্রব্যাদি রাখার দায়ে আপাতত আবাসিক হল থেকে বহিষ্কার ও তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় দুই শিক্ষার্থীকে চার সেমিস্টার বা দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ও ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রুয়েট প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। এসব অভিযোগ যাচাই করে দেখা যায়, অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত যে অর্ডিন্যান্স রয়েছে, তার ধারা লঙ্ঘন করেছেন। এজন্য চার শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। আরও দুইজনকে চার সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “এর বাইরে গত বছর ১৯ আগস্ট অভিযানের প্রেক্ষিতে প্রাপ্ত রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে ৪২ জনকে আবাসিক হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
ঢাকা/মাহাফুজ/মেহেদী