রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ চারজনের ছাত্রত্ব আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে আবাসিক হলে অবৈধ অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য রাখায় ৪২ শিক্ষার্থীকে হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় দুই শিক্ষার্থীকে দুই শিক্ষাবর্ষের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিকেলে কমিটির সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম আব্দুর রাজ্জাক ও সদস্যসচিব ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মো.

রবিউল ইসলাম সরকার প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আজীবন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রুয়েট শাখার সভাপতি ও পুরকৌশল বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাহমিদ লতিফ (লিয়ন), সাধারণ সম্পাদক ও কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৌমিক সাহা, যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাশ্বত সাহা সাগর ও পুরকৌশল বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মৃন্ময় কান্তি। তাঁরা গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা করেছেন বলে অভিযোগ ছিল। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ও একাডেমিক শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যসচিব মো. রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, রুয়েটের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রুয়েট প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। এসব অভিযোগ যাচাই করে দেখা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাসংক্রান্ত যে বিধি রয়েছে, সেটির ধারা লঙ্ঘন করেছেন। এ জন্য চার শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। দুজনকে চার সেমিস্টার বা দুই শিক্ষাবর্ষের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এর বাইরে ৪২ জনকে আবাসিক হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় ও একাডেমিক শৃঙ্খলা কমিটি সূত্রে জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর ১৯ আগস্ট রুয়েটের বিভিন্ন আবাসিক হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালায়। বিভিন্ন কক্ষে অস্ত্র, মাদকসহ নিষিদ্ধ দ্রব্য পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন বিভাগের ৪২ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় দুই শিক্ষার্থীকে চার সেমিস্টার বা দুই শিক্ষাবর্ষের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারী প্রকৌশলী ও রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাঈম রহমান (নিবিড়), পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ডেটা প্রসেসর কর্মকর্তা ও নগরের শাহ্‌মখদুম থানা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মহিদুল ইসলাম, শিক্ষা শাখার সহকারী প্রোগ্রামার এ কে এম আনোয়ারুল ইসলামের বিরুদ্ধেও ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা কমিটি শাস্তির সুপারিশ করেছে।


এ বিষয়ে একাডেমিক শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, তাঁরাও ছাত্রদের ওপর আন্দোলনে হামলা করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে একাডেমিক শৃঙ্খলা কমিটি শাস্তি দিতে পারে না। তাই সিন্ডিকেটে যাতে তাঁদের শাস্তি হয়, সে ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক ষ বর ষ র শ ক ষ র থ ল ইসল ম কম ট র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

নলছিটিতে এসএসসি পরীক্ষায় ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, কেন্দ্রসচিবসহ ৯ শিক্ষককে অব্যাহতি

ঝালকাঠির নলছিটিতে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় ৮ পরীক্ষার্থী, কেন্দ্রসচিব ও সুপারসহ ৯ শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার হদুয়া বৈশাখিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় নকল করার দায়ে এসব শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার, দায়িত্ব পালনে অবহেলার দায়ে কক্ষ পরিদর্শক এবং কেন্দ্রসচিব ও সুপারকে পরবর্তী সকল পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছেন নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নজরুল ইসলাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা শহর থেকে হদুয়া বৈশাখিয়া কেন্দ্রটি দূরে হওয়ার সুবাধে উপজেলা প্রশাসনের নজরদারি কম থাকার সুযোগ নিত শিক্ষার্থী ও পরিদর্শকরা। পরীক্ষা শুরুর দিনেই কেন্দ্রটিতে মোবাইল নিয়ে যাওয়ায় এক পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল।

এ পরীক্ষা কেন্দ্রটির বিরুদ্ধে অসদুপায় অবলম্বনে সহযোগিতার অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নজরে এলে গুরুত্বের সঙ্গে নজরদারি করে পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল ও দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ হাতেনাতে পাওয়ায় ব্যবস্থা নেন।

এ বিষয়ে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, দেশে শিক্ষার সঠিক মান ফিরিয়ে আনতে এবং মেধার বিকাশকে গতিশীল করতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী কঠোর অবস্থানে রয়েছে উপজেলা প্রশাসন। যেকোনো পরীক্ষা কেন্দ্রে অনিয়ম পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

এ বছর চলমান এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় হদুয়া বৈশাখিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রটিতে ১২টি মাদ্রাসার ৩২৭জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নলছিটিতে এসএসসি পরীক্ষায় ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, কেন্দ্রসচিবসহ ৯ শিক্ষককে অব্যাহতি
  • তরুণের কাছে পুলিশ-সেনাবাহিনী পরিচয়ে চাঁদা দাবি, ছাত্র প্রতিনিধিসহ গ্রেপ্তার ৫