দুই দিনে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ অস্ত্রধারী, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ীসহ মোট ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অবৈধ অস্ত্র ও বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।

আজ বুধবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জনসাধারণের জানমালসহ সার্বিক নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড রোধ ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী নিরপেক্ষতা ও পেশাদারির সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় সুনির্দিষ্ট গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ বুধবার ও গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেড ও ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের অধীন থাকা ইউনিট, র‍্যাব ও থানা-পুলিশের সমন্বয়ে মোহাম্মদপুর, আদাবর, আজিমপুর, ঢাকা কলেজ, খিলক্ষেত, উত্তরা, আবদুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড, দক্ষিণখান, নিকুঞ্জ এলাকায় বেশ কিছু যৌথ অভিযান পরিচালনা করে।

এসব অভিযানে কামরাঙ্গীরচরে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত কিশোর গ্যাং ‘কুট্টি গ্রুপ’–এর নেতা রাসেল ও তার ভাই ব্রাদার বুশসহ (সাব্বির) কিশোর গ্যাংয়ের অন্যান্য সদস্য, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীসহ মোট ৫১ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অভিযানের সময় তল্লাশি চালিয়ে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে দেশীয় অবৈধ অস্ত্র ও বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। পরে আটক ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট এলাকার থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। পাশাপাশি যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে তথ্য দিতে সাধারণ জনগণকে অনুরোধ জানানো হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদযাত্রা: সদরঘাটে চিরচেনা ভিড়

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী সোম কিংবা মঙ্গলবার সারা দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে। ঈদের আনন্দ পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে রাজধানী ছাড়ছেন অনেকেই। যারা ঢাকা থেকে নৌপথে গ্রামের বাড়িতে ফিরতে চান, তাদের বেশিরভাগের প্রথম গন্তব্য সদরঘাট নৌ টার্মিনাল। এখান থেকেই লঞ্চে করে যাত্রা করেন কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের উদ্দেশে।  

শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুরে সদরঘাটে গিয়ে দেখা গেছে সেই চেনা দৃশ্য—যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। নৌপথে যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সদরঘাট টার্মিনালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। লঞ্চে প্রবেশমুখে দায়িত্ব পালন করছেন আনসার সদস্যরা। 

ঈদযাত্রা নিয়ে সতর্ক বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সংস্থাটি জানিয়েছে, অতিরিক্ত ভাড়া কিংবা বাড়তি যাত্রী নিলেই বাতিল করা হবে লঞ্চের লাইসেন্স।

শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ৫০টি যাত্রীবাহী লঞ্চ সদরঘাট টার্মিনাল ছেড়ে যাবে। দুপুরের মধ্যে বেশকিছু লঞ্চ বিভিন্ন গন্তব্যে চলে গেছে।

টার্মিনালে দেখা গেছে, পন্টুনে নোঙর করা লঞ্চগুলোর সামনে কর্মচারীরা যাত্রীদের ডাকছেন। যাত্রীদের চাপও অনেক। লঞ্চের ডেকে যাত্রীরা বসে আছেন। কেবিনের টিকিট আগেই বুকিং হয়ে গেছে। নির্দিষ্ট সময়েই লঞ্চগুলো ছেড়ে যাচ্ছে।

এমভি সুরভী-৭ লঞ্চের সামনে কথা হয় রাজ্জাক হোসেন নামের এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি বলেন, “বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করব। রাস্তায় যানজট হতে পারে, তাই আগেভাগেই বাসা থেকে চলে এলাম। চাহিদা বেশি থাকলেও কেবিন কম। আমাদের কেবিন বুকিং করা ছিল। লঞ্চের যাত্রায় কোনো কষ্ট নেই। তাই, বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে প্রতিবছরই লঞ্চে বরিশালে গ্রামের বাড়িতে যাই। যারা এখন আসছেন, তারা ডেকে বসে যাবেন।” 

বরগুনাগামী এমভি সুন্দরবন-৯ লঞ্চে কথা হয় আমিনুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, চার বছর আগে ঈদের সময় লঞ্চে জায়গা পাওয়া যেত না। অনেক সময় ছাদে ঝুঁকি নিয়ে যেতে হতো। আজ আগের মতো ভিড় না থাকলে যাত্রীর চাপ আছে মোটামুটি। লঞ্চ বলা হলেও এটা বিরাট একটা জাহাজ। হাজার হাজার লোক উঠলেও বোঝা যায় না। ডেকে শুয়ে-বসে যাওয়া যায়। বাসে ভ্রমণ করলে আমার পা ব্যথা করে। এ কারণে বাসে আমি যাই না।”

এমভি জামাল-৮ লঞ্চের যাত্রী আলেয়া বেগম বলেন,  “আমি পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় যাব। লঞ্চ ছাড়বে সন্ধ্যা ৭টায়। রাস্তায় জ্যাম হতে পারে, তাই আগেভাগে বাসা থেকে বের হয়ে চলে এসেছি। লঞ্চের যাত্রা আরামদায়ক। এবার আরামে বাড়ি যেতে পারব।”

এমভি সুন্দরবন-৯ লঞ্চের সুপারভাইজার কালাম হোসেন বলেন, “আমাদের লঞ্চে ৮০টি কেবিন আছে। ইতোমধ্যে সব বুকিং হয়ে গেছে। যাত্রীর চাপ ভালোই আছে।”

অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার সদস্য ও এমভি অভিযান লঞ্চের মালিক হামজা লাল শেখ বলেন, আজ যাত্রীর চাপ আছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পর্যাপ্ত লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সুরভি শিপিং লাইনস কোম্পানির পরিচালক রেজিন উল কবির বলেন, ঢাকা সদরঘাট থেকে বরিশালে বিশেষ সার্ভিস শুরু হয়েছে। যাত্রী পরিবহনে বরিশাল-ঢাকা রুটে সরাসরি চলাচল করছে ২৬টি লঞ্চ। ২৫ মার্চ শুরু হয়েছে ঈদের বিশেষ সার্ভিস। ২৬টি লঞ্চ তিন ভাগে ভাগ হয়ে ঈদে বিশেষ সার্ভিস পরিচালনা করছে। বরিশাল ও ঢাকার কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করার ব্যবস্থা আছে।

বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোবারক হোসেন বলেছেন, নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীদের সেবা ও নিরাপত্তার জন্য বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা–কর্মচারীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও হয়রানি বরদাশত করা হবে না। নির্ধারিত সময়ে পন্টুন থেকে লঞ্চ ছাড়ছে। এ ব্যাপারে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে।

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্দেশনার পাশাপাশি তৎপরতাও বাড়াতে হবে
  • যৌথ অভিযানে এক সপ্তাহে গ্রেপ্তার ২৮০, জানাল আইএসপিআর
  • ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে যানজট নেই, তবে আছে ধীরগতি
  • ঈদযাত্রা: সদরঘাটে চিরচেনা ভিড়
  • সারা দেশে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার ২৮০: আইএসপিআর
  • অপরাধী শনাক্তে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরার বেশির ভাগই অচল
  • ঈদ নিরাপত্তায় তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
  • পোশাক খাত ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নি‌য়ে সরকারের বিবৃতি
  • আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক থাকবে, ঈদে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটবে না: স্বরাষ্ট্র সচিব
  • আইনশৃংখলা বাহিনী সতর্ক থাকবে, ঈদে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটবে না: স্বরাষ্ট্র সচিব