রমজানে বিশেষ অভিযান চালাবে বিএসটিআই
Published: 26th, February 2025 GMT
শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান জানিয়েছেন, পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যে ভেজাল রোধে নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি পবিত্র রমজান মাসে বিশেষ অভিযান চালাবে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)।
তিনি বলেছেন, রমজান শুরুর এক মাস আগেই বিএসটিআইর সার্ভিল্যান্স কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এ কার্যক্রমের আওতায় পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ, ভেজাল প্রতিরোধ এবং পণ্যের ওজন ও পরিমাপে কারচুপি রোধে মোবাইল কোর্ট ও সার্ভিল্যান্স কার্যক্রমে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মতিঝিলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন শিল্প উপদেষ্টা। পবিত্র রমজানে মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ভেজাল প্রতিরোধ ও মান নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে বিএসটিআইর বিশেষ কার্যক্রম সম্পর্কে এ প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
এ সময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, পবিত্র রমজানে ঢাকা মহানগরীতে বিএসটিআইর নিজস্ব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় প্রতিদিন তিনটি করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। সারা দেশে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিএসটিআইর সব বিভাগীয়, জেলা ও আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে প্রতিদিন একাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি দেশব্যাপী বিএসটিআইর সার্ভিল্যান্স টিমের অভিযান ও বাজার মনিটরিং কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে।
বিএসটিআইর পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থা যেমন: বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এসব অভিযানে অংশ নেবে।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে ৪৭১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। মামলা করা হয় ৪২৮টি। জরিমানা করা হয় ২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। কারাদণ্ড দেওয়া হয় তিন জনকে। কারখানা সিলগালা করা হয় ২৩টি। ওজনে কারচুপির কারণে ৩৮২টি কোর্ট পরিচালনা করে ৬১৫টি মামলা করা হয়। জরিমানা করা হয় ২ কোটি ৩৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৩৯২টি পেট্রোল পাম্পের ইউনিট সিলগালা করা হয়।
অনলাইনে নকল ও অবৈধ পণ্য বিক্রয়, বিতরণ ও সরবরাহ বন্ধে অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে অনলাইনে বিক্রি বা বিতরণ করতে না পারে, সেজন্য ইতোমধ্যে বিটিআরসিকে চিঠি দিয়েছে বিএসটিআই। বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে প্রায় ১৫টি অনলাইন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি বিএসটিআইর অনুরোধ, অনলাইনে পণ্য কেনার আগে বিএসটিআইর অনুমোদন নিশ্চিত হয়ে পণ্যের অর্ডার করুন। প্রয়োজনে বিএসটিআইর হটলাইন নম্বরে (১৬১১৯) ফোন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম তথ্য-উপাত্ত ও ভিডিওসহ পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যে ভেজাল রোধে বিএসটিআইর কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।
ঢাকা/এএএম/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসট আইর রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ইমোতে প্রেম: চট্টগ্রামে তরুণী খুন, প্রেমিক গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক সন্তানের জননী টুম্পা আক্তারের সাথে ইমো অ্যাপে প্রেম গড়ে ওঠে চট্টগ্রামে বসবাসকারী বেকার ইব্রাহিম হাওলাদারের। এই প্রেমের সূত্র ধরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রামে চলে যান টুম্পা। বিয়ে না করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন নগরীর বন্দর থানার কলসিদীঘি এলাকায়।
তবে সুখের হয়নি সে জীবন। অন্য পুরুষের সাথে টুম্পার সম্পর্ক থাকতে পারে। সবসময় এমন সন্দেহ করতেন ইব্রাহিম। সেই সন্দেহ থেকেই একদিন টুম্পার গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে ইব্রাহিম।
সম্পুর্ণ ক্লু লেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে ঘাতক ইব্রাহীমকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে নগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন উপ-কমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান।
মাহবুব আলম খান জানান, গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় বন্দর থানার ওয়াসিম চৌধুরী পাড়া পেলাগাজীর বাড়ি আলী সওদাগরের বিল্ডিংয়ের নিচ তলার একটি বাসা থেকে এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপরই ঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। বাড়ির মালিকের কাছে ভাড়াটিয়ার তথ্য না থাকায় তাৎক্ষণিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরে একই এলাকার একটি দোকানের ক্যাশমেমো থেকে পাওয়া নম্বর ধরেই এগোয় তদন্ত। এরপরই শনাক্ত হয় ইব্রাহিম; যিনি চট্টগ্রাম থেকে বাগেরহাট যাচ্ছিলেন।
পুলিশ জানায়, ইব্রাহিমকে রাজধানীর পোস্তগোলা ব্রিজ এলাকায় বাসের ভেতর থেকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। তারপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে উদঘাটিত হয় খুনের রহস্য।
পুলিশ জানায়, ইমোতে প্রেমে সম্পর্কের সূত্র ধরে টুম্পা ও ইব্রাহীম বিয়ে ছাড়াই স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার করছিলেন। ভিকটিম টুম্পা আক্তার একজন গার্মেন্টসকর্মী। তার পরিচয় মূলত ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তারের পরই জানতে পারি। তারা বন্দর এলাকার ওই বাসায় লিভ টুগেদার করত। কাগজে-কলমে তাদের বিয়ে হয়নি। দুজন ব্যক্তিকে স্বাক্ষী রেখে তাদের মুখে মুখে বিয়ে হয়।
টুম্পা আক্তার যখন কর্মস্থলে যেতেন ইব্রাহিম মোবাইল নিয়ে যেতে দিতেন না। মোবাইল বাসায় রেখে যেতেন। বাসায় রাখার পর অনেকসময় তার ফোনে পুরুষ কণ্ঠে কল আসত। ইব্রাহিমের সন্দেহ হয় তার কথিত স্ত্রীর আরও কয়েকজনের সাথে সম্পর্ক থাকতে পারে। এই সন্দেহের জেরে তাদের মধ্যে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়।
ঘটনার দিন এই বিষয় নিয়েই তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে ইব্রাহিমের মাথার কাছে একটি শেলফে থাকা রশি দিয়ে টুম্পার গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ওই সময় টুম্পার বাচ্চাটি পাশের রুমে ঘুমাচ্ছিল। কিছুক্ষণ পর বাচ্চাটি ঘুম থেকে উঠলে তাকে একজন মহিলার কাছে দিয়ে ইব্রাহিম ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এ হতাকাণ্ডের ঘটনায় বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
ঢাকা/রেজাউল/এস