ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানীর ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত শহিদুল ইসলাম মুহিতকে আবারও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোয়েন্দা পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে মির্জাপুর আমলি আদালতে হাজির করে। আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি শেষে বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রিট মোসাম্মৎ রুমি খাতুন চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মুহিতসহ তিন জনকে পুলিশ গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সাভারের গেন্ডা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পর দিন শনিবার শহিদুলকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে এনেছিল গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত অপর দুইজন মো.

সবুজ ও শরিফুজ্জামান ওই দিনই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) এসআই মো. আহসানুজ্জামান জানান, প্রথম দফা পাঁচ দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদকালে শহিদুল ইসলাম মুহিদুল মুহিত ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। ডাকাত চক্রের বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রিমান্ডে আনা এই মামলার অপর আসামি আলমগীর শেখের সামনে মুখোমুখি করে শহিদুল ইসলাম মুহিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ ও সাথে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। তাই দ্বিতীয় দফা রিমান্ড চাওয়া হয়।

এই ঘটনায় সোমবার আলমগীর শেখ ও রাজিব শেখ নামে দুই জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাদের গোয়েন্দা পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এই ডাকাতি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোট পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী যাত্রীবাহী একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা লুণ্ঠনের সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানী করে। ঘটনার তিনদিন পর গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে মির্জাপুর থানায় ওমর আলী নামে এক যাত্রী বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন।

ঢাকা/কাওছার/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্তবাসে ডাকাতির ঘটনায় দুই ভাই গ্রেপ্তার, লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার

ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী বাসে ডাকাতির ঘটনার পরিকল্পনাকারীসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একই সাথে তাদের হেফাজতে থাকা লুন্ঠিত টাকা, মোবাইল সেট, গহনা, জাতীয় পরিচয়পত্র ও এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান তার সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন।

তার দেওয়া তথ্যমতে, আলমগীর হোসেন নামে একজনকে নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার সাধুপাড়া গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আশুলিয়া থানার ধানসোনা এলাকা থেকে রাজীব হোসেন (২১) নামে আরেক জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত দুজন আপন ভাই। তারা মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার আমতলী গ্রামের খোরশেদ শেখের ছেলে।

পুলিশ গ্রেপ্তারকৃত রাজীবের হেফাজতে থাকা ১০টি মোবাইল সেট, মহিলা যাত্রীদের ৫ জোড়া চুরি, ৩টি ব্যাগ, তিনটি জাতীয় পরিচয়পত্র, ১টি এটিএম কার্ড, বাসের টিকেট এবং ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত ২টি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার করা হয় মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিত (২৯) মো. সবুজ (৩০) ও মো. শরিফুজ্জামান ওরফে শরীফ নামে দুজনকে।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্য এবং গুপ্তচরদের তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে বাস ডাকাতির পরিকল্পনাকারী হলো আলমগীর হোসেন এবং সেকেন্ড ইন্ড কমান হলো শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিত।

বিবরণে জানা যায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে ইউনিক রয়েল আমরি ট্রাভেলস নামক বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের ওপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে । বাসটি ঢাকা থেকে রাজশাহী যাচ্ছিল। বাসের যাত্রীদের ভাষ্যমতে, সোমবার রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসটি ছাড়ে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসটিতে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে। প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা ধরে বাসটিকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে ডাকাতি সংঘটিত করে।

১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বেলা ১১টায় যাত্রীরা বাসটি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় নিয়ে থানা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে। এ সময় ডাকাতিতে জড়িত সন্দেহে বাসের চালক বাবলু আলী (৩০), সুপারভাইজার সুমন ইসলাম (৩৩) ও হেলপার মাহবুব আলমকে (২৮) আটক করে ৫৪ ধারায় নাটোর আদালতে পাঠায় বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ। পরে তারা আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান।

ঘটনার তিন দিন পর ২১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকালে মির্জাপুর থানায় ওমর আলী নামে এক যাত্রী মামলা করেন।

মামলাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তদন্তে নামে এবং মামলা হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিত, মো. সবুজ এবং মো. শরীফুজ্জামান ওরফে শরীফকে গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন,‘ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি ঘটনায় মামলা হওয়ার পরই আমাদের টিম মাঠে কাজ শুরু করে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আমাদের একটি টিম সাভারে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। সোমবার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার করা হয় আলমগীর হোসেন ও রাজীব হোসেনকে।

পুলিশ সুপার বলেন, বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত ও অভিযান চলমান রয়েছে। পুরো বিষয়টি আমাদের নখদর্পণে চলে এসেছে।
এ ঘটনায় মির্জাপুর থানার এএসআই আতিকুজ্জামানকে দায়িত্বে অবহেলা করার কারণে সাময়িক বরখাস্ত করে টাঙ্গাইল পুলিশ লাইনসে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়।

ঢাকা/কাওছার/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির মামলায় গ্রেপ্তার শহিদুল আবার ৪ দিনের রিমান্ডে
  • বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: মূল পরিকল্পনাকারী গ্রেপ্তার, সাতদিনের রিমান্ডে
  • বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: মূল পরিকল্পনাকারী ও তার ভাই গ্রেপ্তার, রিমান্ডে
  • বন্দর ইউনিয়ন যুবদলের কর্মীসভাকে সফল করতে প্রস্তুতিসভা 
  • চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানির মামলায় আরও দুই আসামি গ্রেপ্তার, মালামাল উদ্ধার
  • চলন্তবাসে ডাকাতির ঘটনায় দুই ভাই গ্রেপ্তার, লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার