আয়ের একমাত্র উৎস হারিয়েছেন, পোড়া টিনে মাথা গোঁজার চেষ্টায় প্রতিবন্ধী ওয়াতুই রাম
Published: 26th, February 2025 GMT
শারীরিক প্রতিবন্ধী ওয়াতুই রাম ত্রিপুরার পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী-সন্তানসহ আট সদস্য। নিজ ভিটায় গড়ে তোলা একটি ইকো রিসোর্টের আয় দিয়ে চলছিল তাঁর সংসার। দ্বিতল রিসোর্টটির নিচতলায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজে থাকতেন। পর্যটকদের ভাড়া দিতেন দোতলার চারটি কক্ষ। গত সোমবার আগুনে পুড়ে যায় ওয়াতুই রাম ত্রিপুরার রিসোর্টটি।
তরুছায়া নামে ওয়াতুই রাম ত্রিপুরার রিসোর্টটি অবস্থিত রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রে। সোমবার আগুন লেগে এই পর্যটনকেন্দ্রের ৩৪টি রিসোর্ট, ৩৫টি বসতবাড়ি, ২০টি দোকান ও ৭টি রেস্তোরাঁ পুড়ে যায়।
আগুনে যাঁরা বসতঘর হারিয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় গির্জা-মন্দিরে। কেউ কেউ রয়েছেন স্বজনদের ঘরবাড়িতে। তবে ওয়াতুই রাম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পড়ে আছেন নিজ ভিটায়। পুড়ে যাওয়া রিসোর্টের কিছু ঢেউটিন দিয়ে গড়ে তুলেছেন ১০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬ ফুট প্রস্থের একটি খুপরি। সেখানেই গাদাগাদি করে থাকছেন পরিবারের আট সদস্য।
আজ বুধবার সকালে সরেজমিন দেখা যায়, খুপরির ভেতরে বসে রয়েছেন ওয়াতুই রাম। চারপাশে পোড়া ছাই ছড়িয়ে আছে। পরিবারের সদস্যরা বলেন, শৈশবে গাছ থেকে পড়ে এক হাত ভেঙে যায় ওয়াতুই রামের। তা ছাড়া কিছুটা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তিনি।
শিশুসন্তান নিয়ে খুপরির ভেতরে ওয়াতুই রাম ত্রিপুরা। আজ দুপুরে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাজেকের পর্যটনকেন্দ্রে আগুন, কারণ জানতে পাঁচ সদস্যের কমিটি
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রে (রুইলুই ভ্যালি) আগুনের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রে আগুনের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিতে পাঁচজন সদস্য থাকবেন। তাঁরা কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেবেন। এ ছাড়া সাজেক এলাকায় এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়েও সুপারিশ করবে তদন্ত কমিটি।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. মোবারক হোসেনকে আহ্বায়ক করা হয়েছে তদন্ত কমিটিতে। বাকি চার সদস্য হলেন বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার, বাঘাইছড়ি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান, খাগড়াছড়ির দীঘিনালা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম এবং রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিসের একজন সহকারী পরিচালক।
গতকাল সোমবার সাজেক ইউনিয়নের রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রের রিসোর্ট-কটেজ ও বসতঘরে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। বেলা ১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা চার ঘণ্টা ধরে জ্বলতে থাকা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ৯৪টির অধিক রিসোর্ট-কটেজ ও বসতঘর। সাজেকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় খাগড়াছড়ি থেকে অন্তত ১১টি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে আগুন লাগার প্রায় তিন ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।