ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের নেতা–কর্মীদের নামে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে তিন ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ
Published: 26th, February 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে তিন ঘণ্টা কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কাউতলী এলাকায় হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মী ও আলেম-ওলামারা মহাসড়কটি অবরোধ করেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দুর্ভোগে পড়েন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে বেলা একটার দিকে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন তাঁরা। এতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আন্দোলনকারীদের একজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা জুলকার নাঈম বলেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে ওলামায়ে কেরাম আন্দোলন করেন। তখন আওয়ামী লীগের নেতারা আলেমদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালান এবং উল্টো ওলামায়ে কেরাম ও মাদ্রাসার ছাত্রদের আসামি করে মিথ্যা মামলা করেন। ফ্যাসিস্ট সরকার বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হলেও সেই মামলাগুলো প্রত্যাহার হয়নি। যদি রাজনৈতিক মামলাগুলো একের পর এক প্রত্যাহার হয়, তাহলে আলেম-উলামায়ে কেরামদের মামলাগুলো এখনো কেন প্রত্যাহার হচ্ছে না। তাই দ্রুত এই মামলাগুলো প্রত্যাহারের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছেন। অন্যথায় পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে।
স্থানীয় লোকজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও হেফাজতে ইসলাম সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কাউতলী এলাকায় আলেম-ওলামা ও হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা জড়ো হন। একপর্যায়ে তাঁরা কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে অবরোধ করেন। এতে কুমিল্লা-সিলেট ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। চালক ও দূরপাল্লার যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
অবরোধকারীদের ভাষ্য, ২০১৬ ও ২০২১ সালে পৃথক সহিংসতার ঘটনায় জেলার বিভিন্ন থানায় আলেম-ওলামা ও হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৭৫টি মামলা হয়। এসব মামলায় তিন হাজারেরও বেশি হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মী ও আলেম-ওলামাদের আসামি করা হয়। ২০১৬ সালে তুচ্ছ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব, ভাঙচুর, লুটপাট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। আর ২০২১ সালের ২৬ থেকে ২৮ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে জেলার অর্ধশতাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় করা মামলায় হেফাজতে ইসলামের এক হাজারের বেশি নেতা-কর্মী কারাভোগ করেন। এসব মামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে করা হয়েছে, তাই মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, দীর্ঘদিনের কিছু মামলা ঝুলে আছে। সেগুলো শান্তিপূর্ণ ন্যায়বিচারের মাধ্যমে দ্রুত যেন সুরাহা হয়, সে জন্য তাঁরা কর্মসূচি পালন করেছেন। প্রাথমিকভাবে তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন। তাঁরা সেটি শুনে মহাসড়ক থেকে সরে গেছেন। জেলা প্রশাসককে নিয়ে দাবিগুলোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় ইসল ম র ন ত অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের লোগো থেকে বাদ গেল নৌকা, যুক্ত হলো শাপলা
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের লোগো থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে নৌকার ছবি। নৌকার পরিবর্তে জাতীয় ফুল শাপলা রেখে নতুন করে লোগো তৈরি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার নতুন লোগো সিটি করপোরেশনের ফেসবুক পেজে দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন লোগো পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, লোগোর মধ্যে নৌকা ছিল, যা একটি দলের দলীয় প্রতীক। তাই তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর নৌকা বাদ দিয়ে জাতীয় ফুল শাপলা রেখে লোগো করার উদ্যোগ নেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। পতন হওয়া আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা জানান, সিটি করপোরেশনের মেয়র লোগো থেকে নৌকা বাদ দিয়ে নতুন করে লোগো করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এ অনুযায়ী জাতীয় ফুল শাপলা রেখে নতুন করে লোগো তৈরি করা হয়েছে। মেয়র তা অনুমোদন দিয়েছেন।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, সিটি করপোরেশনের পুরোনো লোগোতে নৌকার পাশাপাশি নদী, পাহাড় ও সড়কবাতি ছিল। নৌকাটি ছিল মূলত সাম্পান। এসব প্রতীকের মাধ্যমে চট্টগ্রামের ঐতিহ্য ও সিটি করপোরেশনের কাজ ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল।
গত বছরের ১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন আদালত। এরপর গত বছরের ৩ নভেম্বর মেয়র হিসেবে শপথ নেন শাহাদাত হোসেন।
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. রেজাউল করিম চৌধুরী নৌকা প্রতীকে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শাহাদাত হোসেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট পান। ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে নয়জনকে বিবাদী করে মামলাটি করেছিলেন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন।