দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেছেন, দুদক সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নয়। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান না হলে সংস্থাটি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না। সংস্কার কমিশন বিষয়টি সুপারিশ করেছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে রূপ নিলে দুদক অনেকটা স্বাধীন হবে।

আজ বুধবার দুপুরে পাবনায় দুদকের গণশুনানি অনুষ্ঠান শেষে দুদক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি শহরের শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সেবাগ্রহীতাদের টাকায় আমরা বেতন পাই, তাঁদের গুরুত্ব দিতে হবে। সেবাগ্রহীতাদের প্রতি সরকারি কর্মকর্তাদের সদয় হতে হবে। তাঁদের প্রতি আন্তরিক থাকতে হবে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুদকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা মামলাগুলোর কী হবে, জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেন, দুদক সব মামলা যাচাই–বাছাই করছে। যেসব মামলার মধ্যেই দুর্নীতি আছে, সেগুলো বিবেচনায় আনা হবে। তিনি বলেন, ‘নিপীড়ন, নির্যাতন ও শোষণমূলক মামলা যাঁরা করেছেন, তাঁদের পরিণতি কী হয়েছে, সবাই দেখেছে। এমন পরিণতি আর কেউ চাইবে না।’

মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেন, ঘুষ-দুর্নীতি রোধ দুদকের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ঘুষ দেওয়া বন্ধ করতে হবে। দুই দিন দেরিতে কাজ হলেও কাউকে ঘুষ দেওয়া যাবে না। তাহলেই দিনে দিনে ঘুষ কমে যাবে।

গণশুনানিতে প্রধান অতিথি ছিলেন দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের অভিযোগের সমাধান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। আজ দুপুরে পাবনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের সংস্কার হচ্ছে, ভাঙচুর নয়

রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ সংস্কারের কাজ করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। আর দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এদিকে চলমান সংস্কারকাজের মধ্যে এ স্মৃতিসৌধ ভেঙে ফেলা হচ্ছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। অনেকে স্মৃতিসৌধের ভিডিও শেয়ার করে বলছেন, সেটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ‘ঢাকাস্থ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের আধুনিকায়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়। সংস্কারের কাজটি করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কুশলী নির্মাতা লিমিটেড। আগামী জুনের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণপূর্ত বিভাগের মিরপুর অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ আহসান বলেন, স্মৃতিসৌধের কাঠামোতে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। শুধু পুরোনো ইট সরিয়ে নতুন ইট বসানো হচ্ছে। মূল বেদির নকশা আগে যা ছিল, তাই আছে। কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।

মঙ্গলবার দুপুরে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সরেজমিন দেখা যায়, কবরস্থানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধটি টিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, স্মৃতিসৌধের বেদির দিকে ঢালু হয়ে নেমে আসা চারটি দেয়ালের মতো যে কাঠামো রয়েছে, সেগুলোর ইটের আস্তর যান্ত্রিক হাতুড়ি (হ্যামার ড্রিল) দিয়ে খোলা হচ্ছে। স্মৃতিসৌধের বেদির চারদিকে থাকা এমন চারটি দেয়ালের মধ্যে তিনটির আস্তর খোলার কাজ চলমান দেখা গেছে। স্মৃতিসৌধের সামনে এনে রাখা হয়েছে কংক্রিটের নতুন ব্লক।

তবে প্রকল্প এলাকায় সংস্কারকাজের কথা উল্লেখ করে কোনো সাইনবোর্ড টাঙানো হয়নি। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের নিয়ম হচ্ছে, প্রকল্প চলাকালে সেখানে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে জানাতে হয়, সেখানে কী হচ্ছে। এ কারণে অনেকে বিভ্রান্ত হচ্ছেন বলে কেউ কেউ মনে করছেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ দেখভালের দায়িত্বে থাকা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন বলেছে, স্মৃতিসৌধকে নতুন করে সাজানো হচ্ছে। স্মৃতিসৌধে থাকা পুরোনো ইটের আস্তরণ যান্ত্রিক হাতুড়ি দিয়ে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। এর জায়গায় নতুন ইট বসানো হবে। নির্মাণ করা হবে দোতলা মাল্টিপারপাস ভবন। এ ছাড়া বর্ষার সময় পানি যাতে জমে না থাকে, সে জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য রেস্টহাউস (বিশ্রামাগার) নির্মাণ করা হচ্ছে। টাইলস পরিবর্তন করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, স্মৃতিসৌধে দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার করা হয়নি। প্রকল্পটি অনেক আগেই অনুমোদন হয়েছিল। এখন কাজ চলছে। সেখানে নকশার কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। সবকিছু আগের মতোই থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ